তাকদীরের প্রকৃত ও পূর্ণতম বিশ্বাস ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম—এর। তাঁর পরে তাঁর সাহাবিগণের। আর তাঁদের জীবনের দিকে তাকালেই আমরা বুঝতে পারি যে, তাকদীরের বিশ্বাস কীভাবে মানুষকে কর্মবীর ও প্রত্যয়ী করে তোলে।
তাকদীরের পূর্ণতম বিশ্বাস ছিল নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম—এর। আর তাই তিনি ছিলেন মানব ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম দৃঢ়প্রত্যয়ী কর্মবীর। তিনি তাঁর সাধ্যমতো কর্ম করেছেন, আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন তাঁর করুণার জন্য আর ফলাফলের ভার ছেড়ে দিয়েছেন প্রভুর কাছে। এজন্য কঠিনতম বিপদের মুহূর্তেও তাঁর হৃদয় থেকেছে প্রশান্ত, অবিচল ও উৎকণ্ঠামুক্ত।
তাঁর সাহাবিগণও ছিলেন
তেমনি অকুতোভয় দৃঢ়প্রত্যয়ী কর্মবীর। তাকদীরের বিশ্বাস তাঁদের সকল সংশয়, ভয় ও দুশ্চিন্তা দূর করে বিশ্বজয়ে প্রেরণা যুগিয়েছে।
এভাবেই তাকদীরে বিশ্বাস করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কুরআন ও হাদীসে। একটিমাত্র হাদীস উল্লেখ করছি। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
اَلْمُؤْمِنُ الْقَوِيُّ خَيْرٌ وَأَحَبُّ إِلَى اللهِ مِنَ الْمُؤْمِنِ الضَّعِيْفِ وَفِيْ كُلٍّ خَيْرٌ احْرِصْ عَلَى مَا يَنْفَعُكَ وَاسْتَعِنْ بِاللهِ وَلَا تَعْجَزْ وَإِنْ أَصَابَكَ شَيْءٌ فَلَا تَقُلْ لَوْ أَنِّيْ فَعَلْتُ كَانَ كَذَا وَكَذَا وَلَكِنْ قُلْ قَدَرُ اللهِ وَمَا شَاءَ فَعَلَ فَإِنَّ لَوْ تَفْتَحُ عَمَلَ الشَّيْطَانِ.
শক্তিশালী মুমিন
আল্লাহর নিকট দুর্বল মুমিনের চেয়ে বেশি প্রিয় ও বেশি ভালো, যদিও সকল মুমিনের মধ্যেই ভালো রয়েছে। তোমার জন্য কল্যাণকর বিষয় অর্জনের জন্য তুমি ঐকান্তিক আগ্রহ ও সুদৃঢ় ইচ্ছা নিয়ে চেষ্টা করবে এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে। কখনোই দুর্বল হবে না বা হতাশ হবে না। যদি তুমি কোনো সমস্যায় নিপতিত হও (তুমি ব্যর্থ হও বা আশানুরূপ ফল না পাও) তাহলে কখনই বলবে না যে, যদি আমি ওই কাজটি করতাম! যদি আমি অমুক তমুক কাজ করতাম! বরং বলবে, আল্লাহর নির্ধারণ, তিনি যা ইচ্ছা তা—ই কবেন। কারণ অতীতের আফসোস মূলক ‘যদি করতাম’ ধরনের বাক্যগুলো শয়তানের কর্মের পথ খুলে দেয়।1সহীহ মুসলিম, হাদীস— ২৬৬৪; সুনান ইবন মাজাহ, হাদীস—৭৯।
তাকদীরে বিশ্বাস
হৃদয়ের দরজা শয়তানের জন্য বন্ধ করে দেয়। সেখানে শয়তান হতাশা বা অবসাদের বীজ বপন করতে পারে না। মহান আল্লাহ আমাদেরকে দেহ, মন, ঈমান ও কর্ম সকল বিষয়ে শক্তিশালী মুমিন হওয়ার তাওফীক দান করেন। আমীন!
__________

বই : মুসলমানী নেসাব

ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ।