As-Sunnah Trust

সাম্প্রতিক সংবাদ

মি‘রাজ সর্বশেষ পর্ব-৭

miraj7
 
আমরা অনেকে শুধু ২৭শে রজব আসলে মিরাজ আলোচনা করি। আবার কেউ এ দিনে ও রাতে খাস ইবাদত—বন্দেগী করি। আমরা দেখেছি যে, কুরাআন ও হাদীসে অগণিত স্থানে মিরাজের বর্ণনা এসেছে, কিন্তু কোথাও তারিখ বলা হয়নি। মিরাজের রাত্রিতে বা দিনে নফল সালাত, নফল সিয়াম বা অন্য কোনো খাস ইবাদতের কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা সাহাবীগণ শিক্ষা দেননি। মিরাজের তারিখই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে জানাননি। কয়েক শতক আগেও ‘শবে মি‘রাজ’ বলতে নির্দিষ্ট কোনো রাত নির্দিষ্ট ছিল না। ২৭শে রবজ শবে মিরাজ হওয়ার বিষয়টি আলিম ও ঐতিহাসিগণের অনেকগুলি মতের মধ্যে একটি মত মাত্র। এ জন্য আমাদের উচিত এ মাসে এবং সারা বছরই কুরআন কারীম ও সহীহ হাদীসের আলোকে মিরাজের ঘটনাবলি ও শিক্ষা আলোচনা করা।
 
মিরাজের অন্যতম নেয়ামত হল ৫ ওয়াক্ত ফরয সালাত। মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয়তম রাসূলকে দীনের যত আহকাম দিয়েছেন সবই ওহীর মাধ্যমে জিবরাঈল দুনিয়াতে দিয়ে গিয়েছেন। একমাত্র ব্যতিক্রম হলো সালাত। মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয়তম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম—কে নিজের সান্নিধ্যে নিয়ে তাকে তার উম্মাতের জন্য সালাতের মহান নিয়ামত প্রদান করেছেন। সালাতের মাধ্যমেই উম্মাত দুনিয়া ও আখিরাতের সর্বোচ্চ নিয়ামত লাভ করতে পারবে। আবার সালাত অবহেলা করলে মুমিনের ঈমান হারিয়ে সর্বহারা হওয়ার পথ উন্মুক্ত হয়। সালাতকে গ্রহণ করলে মিরাজের হাদিয়া গ্রহণ করা হয়।
 
ইসরা ও মিরাজের শিক্ষা অনুধাবনের জন্য আমাদের কুরআন কারীমের ‘সূরা ইসরা’ অধ্যয়ন করা দরকার। ১৫ পারার প্রথম সূরা, কুরআন কারীমের ১৭ নং সূরার নাম ‘সুরা ইসরা’। এ সূরাকে ‘সূরা বনী ইসরাঈল’ও বলা হয়। এ সূরায় ইসরা ও মিরাজের বিষয় উল্লেখের মধ্যে মহান আল্লাহ পৃথিবীতে ফিতনা—ফাসাদের শাস্তি, শিরকমুক্ত তাওহীদের গুরুত্ব, পিতামাতা, আত্মীয়স্বজন, দরিদ্র ও অন্যান্য মানুষের অধিকার পালনের গুরত্ব, ব্যভিচার, হত্যা, এতিমের সম্পদ ভক্ষণ, ওযনে—পরিমাপে কম দেওয়া, আন্দাযে ধারণা ভিত্তিক মতামত প্রকাশ বা অপবাদ দেওয়া, অঙ্গীকার ভঙ্গ করা, অহঙ্কার করা ইত্যাদি মহাপাপের ভয়াবহতা বর্ণনা করেছেন। আমরা দেখেছি যে, মিরাজের মধ্যে এ ধরনের পাপের শাস্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম—কে প্রদর্শন করানো হয়। ইসরা ও মিরাজ উপলক্ষ্যে এ সূরার অনুধাবন ও পর্যালোচনা অতীব প্রয়োজন। মহান আল্লাহ আমাদেরকে তাওফীক দান করুন। আমীন।
 
সমাপ্ত
………….

বই : খুতবাতুল ইসলাম 

ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ।

 
Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।