আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 5388

ব্যক্তিগত ও পারিবারিক

প্রকাশকাল: 30 অক্টো. 2020

প্রশ্ন

আমার পরিবার এবং আমার বিধবা শাশুরীর ভরনপোষন দেওয়ার পরিপূর্ণ সামর্থ থাকা সত্তেও, আমার শাশুরীর চাওয়ায় আমার অনিচ্ছা বুঝিয়ে বলার পরেও আমার স্ত্রী কর্পোরেট চাকরী করছে। অনেকদিন বুঝানোর পর সে মাথায় হিজাব দিয়ে অফিস এ যায়, কিন্তু তাকে পায়ের মোজা, ফুলহাতা জামা পরে না, চোখে কাজল আর লিপ্সটিক দিতে নিষেধ করলেও সেগুলো ব্যবহার করে। আমার শাশুরীকে বুঝাতে বললে সেও নিরব ভুমিকা পালন করে। এমতাবস্থায় সংসারে শান্তি বজায় রেখে কিভাবে এই গুনাহের পথ থেকে ফিরে আনতে পারি? উল্লেখ্য আমার শাশুরী নামাজি এবং বোবকা পরে।

উত্তর

বিয়ের আগে আপনাকে এসব বিষয়ে ভাবার দরকার ছিলো। স্বামীর অনিচ্ছাতে স্ত্রীর বাইরে চাকুরী করা কোন অবস্থাতেই জায়েজ নেই। এমন কি স্বামীর যদি অর্থনৈতিক সামর্থ্য থাকে তাহলে সে স্ত্রীকে বাইরে সব চাকুরী করার অনুমতিও দিতে পারবে না। এখন কুরআন হাদীস দ্বারা তাকে বুঝিয়ে ধীরে ধীরে এই গুনাহের কাজ থেকে বিরত রাখতে চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে মুসলিম মহিলাদেরকে বলেছেন,وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى তোমরা তোমাদের বাড়ি ঘরের মধ্যে থাকো, প্রাচীন জাহেলী যুগের মহিলাদের মত নিজেদের প্রাদর্শন করো না। সূরা আহযাব, আয়াত নং ৩৩। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَبِمَا أَنْفَقُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ পুরুষরা মহিলাদের উপর কর্তৃত্ব করবে, কারণ আল্লাহ একজনকে অন্যজনের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং পুরুষেরা তাদের টাকা পয়সা খরচ করে। বিদায় হজ্জের ভাষনে রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, وَاسْتَحْلَلْتُمْ فُرُوجَهُنَّ بِكَلِمَةِ اللَّهِ وَلَكُمْ عَلَيْهِنَّ أَنْ لاَ يُوطِئْنَ فُرُشَكُمْ أَحَدًا تَكْرَهُونَهُ. فَإِنْ فَعَلْنَ ذَلِكَ فَاضْرِبُوهُنَّ ضَرْبًا غَيْرَ مُبَرِّحٍ وَلَهُنَّ عَلَيْكُمْ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ তোমরা তাদের লজ্জাস্থানকে হালাল করেছো আল্লাহর কালিমা দ্বারা… তাদের খাবার-দাবার ও পোশাকের দায়িত্ব তোমাদের ওপর। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩০০৯;সুনানু আবু দাউদ, হাদীস নং ১৯০৭। আলেমদের এ ব্যাপারে ঐক্যমত পোষন করেছেন যে, স্ত্রীর ভরন-পোষনের দায়িত্ব স্বামীর। আলমাউসুয়াতুল ফিকহিয়্যাতুল কুয়েতিয়্যাহ, ৪১/৩৫। নীচের হাদীসটি লক্ষ্য করুন: – حدثنا مكرم بن أحمد القاضي ببغداد ثنا أبو إسماعيل محمد بن إسماعيل السلمي ثنا أيوب بن سليمان بن بلال حدثني أبو بكر بن أبي أويس عن سلمان بن بلال عن عبد الله بن يسار الأعرج : أنه سمع سالم بن عبد الله بن عمر يحدث عن أبيه : عن النبي صلى الله عليه و سلم أنه قال : ثلاثة لا يدخلون الجنة العاق بوالديه و الديوث و رجلة النساء تعليق الذهبي قي التلخيص : صحيح الإسناد অর্থ: হযরত উমার রা. নবী সা. থেকে বর্ণনা করেন তিন শ্রেণীর মানুষ জান্নাতে যাবে না। পিতা-মাতার অবাধ্য, দায়্যূস, পুরুষের বেশধারী মহিলা। আলমুসাতাদরক, ইমাম হাকীম, হাদীস নং ২৪৪, ইমাম জাহাবী বলেছেন,হাদীসটির সনদ সহীহ। দায়্যুস বলা হয় সে পুরুষকে যারা বাড়ির মহিলা সদস্যদেরকে খারাপ কাজে বাধা দেয় না, তাদের কাছে কারা যাওয়া আসা করে তাতে ভ্রুক্ষেপ করে না, তাদের খারাপ কাজের প্রতি সন্তুষ্ট থাকে। আলজামিউস সহীহ লিস সুনান ওয়াল মাসানিদ, ৫/৩৪৮। অধ্যায়:الدَّيَاثَةُ مِنَ الْكَبَائِر এসব বলে তাকে বুঝানোর চেষ্টা করুন।