ফলাফলের জন্য ব্যস্ত না হওয়া
দু‘আর ফল লাভে ব্যস্ত হওয়া মানবীয় প্রকৃতির একটি ক্ষতিকারক দিক। বিশেষত বিপদে, সমস্যায় বা দুশ্চিন্তায় আক্রান্ত হয়ে আমরা যখন দু‘আ করি তখন তৎক্ষণাৎ ফল আশা করি। দুচার দিন দু‘আ করে ফল না পেলে আমরা হতাশ হয়ে দু‘আ করা ছেড়ে দেই। এ হতাশা ও ব্যস্ততা ক্ষতি ও গোনাহের কারণ। কখনোই আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া যাবে না। আমাদের বুঝতে হবে যে, দু‘আ করা একটি ইবাদত ও অপরিমেয় সাওয়াবের কাজ। আমি যত দু‘আ করব ততই লাভবান হব। আমার সাওয়াব বৃদ্ধি পাবে, আল্লাহর সাথে আমার একান্ত রহমতের সম্পর্ক তৈরি হবে। সর্বোপরি আল্লাহ আমার দু‘আ কবুল করবেনই। তবে তিনিই ভাল জানেন কীভাবে ফল দিলে আমার বেশি লাভ হবে।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
لَا يَزَالُ يُسْتَجَابُ لِلْعَبْدِ مَا لَمْ يَدْعُ بِإِثْمٍ أَوْ قَطِيعَةِ رَحِمٍ مَا لَمْ يَسْتَعْجِلْ
“বান্দা যতক্ষণ পাপ বা আত্মীয়তার ক্ষতিকারক কোনো কিছু প্রার্থনা না করে ততক্ষণ তার দু‘আ কবুল করা হয়, যদি না সে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।” বলা হল: “ইয়া রাসূলাল্লাহ, ব্যস্ততা কীরূপ?” তিনি বলেন: “প্রার্থনাকারী বলতে থাকে- দু‘আ তো করলাম, দু‘আ তো করলাম; মনে হয় আমার দু‘আ কবুল হলনা। এভাবে সে হতাশ হয়ে পড়ে এবং তখন দু‘আ করা ছেড়ে দেয়।”1মুসলিম (৪৮-কিতাবু যিকর, ২৫-বাব… ইউসতাযাবুদ দায়ী) ৪/২০৯৫, নং ২৭৩৫ (ভা ২/৩৫২)।
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
لَا يَزَالُ الْعَبْدُ بِخَيْرٍ مَا لَمْ يَسْتَعْجِلْ قَالُوا وَكَيْفَ يَسْتَعْجِلُ قَالَ يَقُولُ قَدْ دَعَوْتُ رَبِّي فَلَمْ يَسْتَجِبْ لِي
“বান্দা যতক্ষণ না ব্যস্ত ও অস্থির হয়ে পড়ে ততক্ষণ সে কল্যাণের মধ্যে থাকে।” সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন: ব্যস্ত হওয়া কীরূপ? তিনি বলেন: সে বলে- আমি তো দু‘আ করলাম কিন্তু দু‘আ কবুল হলনা।” হাদীসটি হাসান।2হাইসামী, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১৪৭।
বই: রাহে বেলায়াত
ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহ.।
সালাতের সংক্ষিপ্ত বিধান ও নিয়ম, তৃতীয় বিদ‘আত: চিল্লাকাশি ও নির্জনবাস, সালাতের আহকাম ও ভুলভ্রান্তি, জীবিত ব্যক্তির ওসীলা দিয়ে দোয়া করার বিধান