আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

সাম্প্রতিক সংবাদ

মি‘রাজ পর্ব-৫

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  মিরাজের রাত্রিতে আল্লাহকে দেখেছিলেন কি না সে বিষয়ে সাহাবীগণের যুগ থেকে মতভেদ রয়েছে। সূরা নাজমের ব্যাখ্যায় হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  তাঁর অন্তর দিয়ে দুবার তার রব্বকে দেখেছিলেন। এ মতের অনুসারী সাহাবী—তাবিয়ীগণ বলেছেন যে, মহান আল্লাহ মূসা আলাইহিস সালাম—কে তাঁর সাথে কথা বলার মুজিযা দিয়েছিলেন এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম —কে তাঁর দর্শনের মুজিযা দিয়েছিলেন।

পক্ষান্তরে

হযরত আয়েশা ও অন্যান্য সাহাবী বলেছেন যে, তিনি আল্লাহকে দেখেননি। সহীহ বুখারী সংকলিত হাদীসে প্রসিদ্ধ তাবিয়ী মাসরূক বলেন: “আমি আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা—এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। তিনি বলেন, হে আবূ আয়েশা (মাসরূক), তিনটি কথার যে কোনো একটি কথা যদি কেউ বলে তবে সে আল্লাহ নামে জঘন্য মিথা বলার অপরাধে অপরাধী হবে।

আমি বললাম: সে কথাগুলি কী কী? তিনি বলেন, যদি কেউ মনে করে যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রতিপালককে (আল্লাহকে) দেখেছিলেন তবে সে আল্লাহর নামে জঘন্য মিথ্যচারী বলে গণ্য হবে। মাসরূক বলেন, আমি তখন হেলান দিয়ে ছিলাম। তাঁর কথায় আমি উঠে বসলাম এবং বললাম: হে মুমিনগণের মাতা, আপনি আমাকে একটু কথা বলতে দিন, আমার আগেই আপনার বক্তব্য শেষ করবেন না। আল্লাহ কি বলেননি: “সে তো তাকে স্পষ্ট দিগন্তে দেখেছিল1সূরা (৮১) তাকবীর: ২৩ আয়াত।”, “নিশ্চয় তাকে সে আরেকবার দেখেছিল”2সূরা (৫৩) নাজম: ১৩ আয়াত।?

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন: এ উম্মাতের মধ্যে আমিই সর্বপ্রথম ব্যক্তি যে এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম —কে জিজ্ঞাসা করেছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  উত্তরে বলেন: “এ হলো জিবরীলের কথা। আল্লাহ তাঁকে যে আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন আমি এই দুবার ছাড়া আর কখনো তাঁকে তাঁর সেই প্রকৃত আকৃতিতে দেখিনি। আমি দেখলাম তিনি আকাশ থেকে নেমে আসছেন।

তাঁর আকৃতির বিশালত্ব আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যবর্তী সবকিছু অবরুদ্ধ করে দিচ্ছে।” আয়েশা বলেন: তুমি কি আল্লাহকে বলতে শোন নি: “তিনি দৃষ্টির অধিগম্য নন, কিন্তু দৃষ্টিশক্তি তাঁর অধিগত; এবং তিনিই সূক্ষ্মদর্শী, সম্যক পরিজ্ঞাত3সূরা (৬) আন‘আম: ১০৩ আয়াত।”? তুমি কি আল্লাহকে বলতে শোন নি4সূরা (৪২) শূরা: ৫১ আয়াত।: “কোনো মানুষের জন্যই সম্ভব নয় যে, আল্লাহ তার সাথে কথা বলবেন ওহীর মাধ্যম ব্যতিরেকে, অথবা পর্দার অন্তরাল ব্যতিরেকে, অথবা এমন দূত প্রেরণ ব্যতিরেকে, যে দূত তার অনুমতিক্রমে তিনি যা চান তা ব্যক্ত করেন, তিনি সমুন্নত, প্রজ্ঞাময়”?”

চলবে…

বই : খুতবাতুল ইসলাম 

ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
আপনার ইমেইল
Print

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.