আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

সাম্প্রতিক সংবাদ

মি‘রাজ পর্ব-৪

মিরাজে গমন ও প্রত্যাবর্তনের সময় এবং জান্নাত—জাহান্নামে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম—কে বিভিন্ন পাপ ও পুন্যের বিভিন্ন প্রকার শাস্তি ও পুরস্কার দেখানো হয়। এক পর্যায়ে তিনি অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর সুগন্ধের ঘ্রাণ লাভ করেন। তিনি বলেন, জিবরাঈল, এটি কিসের সুঘ্রাণ। জিবরাঈল বলেন, এ হলো ফিরাউনের কন্যার চুল আঁচড়ানো দাসী ও তার সন্তানদের সুগন্ধ। দাসীটি ঈমানদার ছিল। একবার চুল আঁচড়ানোর সময় চিরুনী পড়ে গেলে সে বিসমিল্লাহ বলে তা তুলে নেয়।
ফিরাউন—কন্যা বলে,
আমার পিতার নাম নিয়েই না কর্ম শুরু করতে হবে! দাসীটি বলে, তোমার, আমার ও তোমার পিতার রব্ব আল্লাহর নামে। ফিরাউন—কন্যা ক্রোধান্বিত হয়ে তার পিতাকে বিষয়টি জানায়। ফিরাউন উক্ত দাসীকে তাওহীদ ত্যাগ করতে চাপ দেয়। কোনো প্রকার ভয়ভীতিতে দাসীটি বিচলিত হয় না। তখন ফিরাউন অগ্নিকুণ্ডু তৈরি করে দাসীকে বলে, তুমি যদি আমার ধর্মে ফিরে না আস তবে তোমার সন্তানগণ সহ তোমাকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হবে। দাসীটি ঈমানের উপর অবিচল থাকে। তখন একে একে তার সন্তানদেরকে আগুনে নিক্ষেপ করা হয়। সর্বশেষ তার কোলে ছিল দুগ্ধপোষ্য একটি শিশু।
শিশুটির দিকে তাকিয়ে
মায়ের মন দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তখন শিশুটির মুখে আল্লাহ কথা দেন। সে তার মাকে বলে, মা দ্বিধা করো না, তুমি তো সত্যের উপর রয়েছ। আখিরাতের অনন্ত কষ্ট থেকে বাঁচতে দুনিয়ার কয়েক মুহূর্তের কষ্ট কিছুই নয়। দাসীটি তখন শিশুটিকে নিয়ে আগুন বরণ করে নেয়। তাদেরকে আল্লাহ আখিরাতে এরূপ মহান মর্যাদা দিয়েছেন।
তিনি দেখেন যে,
কিছু মানুষ শয়ন করে রয়েছে এবং বিশাল পাথর দিয়ে আঘাত করে তাদের মাথা চুর্ণবিচুর্ণ করা হচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যে আবার মাথাগুলি স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে এবং পুনরায় তাদেরকে এভাবে আঘাত করা হচ্ছে। জিবরাঈল আলাইহিস সালাম বলেন, এরা হলো আপনার উম্মাতের ঐ সব মানুষ, যারা ফরস সালাত যথাসময়ে আদায়ে অবহেলা করে, যাদের মস্তিক ফরয সালাত আদায়ের চিন্তা না করে অন্য চিন্তায় রত থাকে।
তিনি দেখেন যে,
একব্যক্তি রক্তের নদীতে সাতার কাটছে এবং তাকে বড় বড় পাথর জোর করে গেলানো হচ্ছে। জিবরাঈল বলেন, এ হলো সূদ খোরের শাস্তি। তিনি আরো দেখেন যে, কিছু মানুষের হাতে পিতলে নখর লাগানো এবং তার এ নখগুলি দিয়ে প্রচণ্ড জোরে তাদের মুখমণ্ডল ও বক্ষদেশ আঁচড়ে রক্তাক্ত করছে। জিবরাঈল আলাইহিস সালাম জানান যে, এরা পৃথিবীতে মানুষদের গীবতে লিপ্ত হতো।
এভাবে তিনি
এতিমের সম্পদ ভক্ষণকারী, গীবতকারী, মানুষের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টিকারী, ব্যভিচারী ও অন্যান্য পাপীদের কবরের ও জাহান্নামের শাস্তির প্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করেন। অনুরূপভাবে আল্লাহ যিকর, তাহাজ্জুদ, তাহিয়্যাতুল ওযূ, আল্লাহর পথে জিহাদ ও অন্যান্য ইবাদতের পুরস্কার প্রত্যক্ষ করেন।
চলবে…
ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ।
Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
আপনার ইমেইল
Print

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.