প্রভাত (সুবহে সাদেক) থেকে সূর্যাস্ত (মাগরিব) পর্যন্ত আল্লাহর এবাদত  ও সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পানাহার, দাম্পত্য মিলন ইত্যাদি সকল সিয়াম বা রোযা ভঙ্গকারী কর্ম থেকে বিরত থাকা হল সিয়াম বা রোযা। আত্মার পরিশুদ্ধি, আধ্যাত্মিক উন্নতি, মানবিক মমতাবোধের বিকাশ, তাকওয়া ও সততা অর্জনের জন্য সকল যুগের সকল বিশ্বাসী মানুষের অন্যতম প্রধান অবলম্বন হলো সিয়াম।

রমযানের সিয়াম ফরয ও ইসলামের রুকন।

এছাড়া যথাসম্ভব বেশি অতিরিক্ত বা নফল সিয়াম পালনে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। ফরয ও নফল সিয়ামের ফযীলতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহ বলেন:

كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ لَهُ إِلاَّ الصِّيَامَ فَإِنَّهُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ وَالصِّيَامُ جُنَّةٌ وَإِذَا كَانَ يَوْمُ صَوْمِ أَحَدِكُمْ فَلا يَرْفُثْ وَلا يَصْخَبْ فَإِنْ سَابَّهُ أَحَدٌ أَوْ قَاتَلَهُ فَلْيَقُلْ إِنِّي

امْرُؤٌ صَائِمٌ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَخُلُوفُ فَمِ الصَّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللَّهِ مِنْ رِيحِ الْمِسْكِ لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ يَفْرَحُهُمَا إِذَا أَفْطَرَ فَرِحَ وَإِذَا لَقِيَ رَبَّهُ فَرِحَ بِصَوْمِهِ

“আদম সন্তানের সকল কর্ম তার জন্য। একমাত্র ব্যতিক্রম হলো সিয়াম, তা শুধু আমারই জন্য এবং আমিই তার প্রতিদান দিব। সিয়াম হলো ঢাল। তোমাদের কেউ যে দিনে সিয়াম পালন করবে সেই দিনে সে অশ্লীল বা বাজে কথা বলবে না ও চিল্লাচিল্লি, হৈচৈ বা ঝগড়াঝাটি করবে না। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সাথে মারামারি করে তবে সে যেন বলে, আমি সিয়ামরত, আমি সিয়ামরত।

মুহাম্মাদের জীবন যাঁর হাতে তার শপথ, সিয়ামরত ব্যক্তির মুখের ক্ষুধা-জনিত গন্ধ আল্লাহর নিকট মেশকের সুগন্ধির চেয়েও প্রিয়। সিয়াম পালনকারীর জন্য দুইটি আনন্দ রয়েছে যখন সে আনন্দিত হয়:

(১) যখন সে ইফতার করে তখন সে তার ইফতারীর জন্য আনন্দিত হয় এবং (২) যখন সে তার প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাত করবে তখন সে তার সিয়ামের জন্য আনন্দিত হবে।”1বুখারী, আস-সহীহ ২/৬৭৮; মুসলিম, আস-সহীহ ২/৮০৭। তিনি আরো বলেন:

اَلصِّيَامُ جُنَّةٌ مِنَ النَّارِ كَجُنَّةِ أَحَدِكُمْ مِنَ الْقِتَالِ وَصيَامٌ حَسَنٌ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ

“যুদ্ধে তোমাদের যেমন ঢাল থাকে, তেমনি জাহান্নামের আগুন থেকে ঢাল হলো সিয়াম। আর প্রতি মাসে তিন দিন সিয়াম পালন করা ভাল।”2ইবনু খুযাইমা, আস-সহীহ ৩/১৯৩; আলবানী, সহীহুত তারগীব ১/২৩৮। হাদীসটি সহীহ।

 

বই : রামাদানের সওগাত

ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ।