As-Sunnah Trust

সাম্প্রতিক সংবাদ

মধ্য-শা’বানের রাত্রিতে ভাগ্যলিখন বিষয়ক হাদীসসমূহ

মধ্য-শা’বানের রাত্রিতে ভাগ্যলিখন বিষয়ক হাদীসসমূহ
মধ্য-শা’বানের রাত্রি বা লাইলাতুল বারাআতের ফযীলতে বর্ণিত দ্বিতীয় প্রকার হাদীসগুলিতে এ রাত্রিতে হায়াত-মওত ও রিযক নির্দ্ধারণের কথা উল্লেখ রয়েছে। এই অর্থে বর্ণিত হাদীসগুলির মধ্যে রয়েছে:

হাদীস নং ১০: জন্ম-মৃত্যু লিখা, কর্ম উঠানো ও রিয্ক প্রদান

আয়েশার রাদিয়াল্লাহু আনহা সূত্রে কথিত যে, মধ্য শা’বানের রাত্রিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে বলেন, তুমি কি জান আজকের রাত্রিটি কোন্ রাত্রি? তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল, এ রাত্রে কি আছে? তখন তিনি বলেন,
فِيْهَا أَنْ يُكْتَبَ كُلُّ مَوْلُوْدٍ مِنْ بَنِيْ آَدَمَ فِيْ هَذِهِ السَّنَةِ، وَفِيْهَا أَنْ يُكْتَبَ كُلُّ هَالِكٍ مِنْ بَنِيْ آَدَمَ فِيْ هَذِهِ السَّنَةِ، وَفِيْهَا تُرْفَعُ أَعْمَالُهُمْ، وَفِيْهَا تُنْزَلُ أَرْزَاقُهُمْ ….
“এ রাতে চলতি বছরে জন্ম-গ্রহণকারী আদম সন্তানদের নাম এবং চলতি বছরে মৃত্যুবরণকারী আদম সন্তানদের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়। এ রাতে আদম সন্তানদের আমল উঠিয়ে নেয়া হয় এবং তাদের রিযক অবতীর্ণ হয়…।

হাদীসটি

খতীব তাবরিযী (৭৫০ হি) “মিশকাতুল মাসাবীহ” গ্রন্থে উদ্ধৃত করে বলেন, বায়হাক্বী তাঁর ‘আদ-দাওয়াতুল কাবীর’ নামক গ্রন্থে হাদীসটি সংকলন করেছেন। ইমাম বাইহাকী নিজেই বলেছেন যে, হাদীসটির সনদে অজ্ঞাত পরিচয় বর্ণনাকারী রয়েছে।((বায়হাক্বী, শু’আব আল-ঈমান, ৩/৩৮২-৩৮৩। আবূ শামা, আল-বায়িস আলা ইনকারিল বিদায়ি ওয়াল হাওয়াদিস (কাইরো, দারুল হুদা, ১ম প্রকাশ ১৯৭৮), পৃ. ৩৭-৩৮।)) উপরন্তু হাদীসটির মূল বর্ণনাকারী “আন-নাদ্র ইবনু কাসীর”। এ ব্যক্তি ছাড়া অন্য কোনো সূত্রে হাদীসটি বর্ণিত হয় নি। তিনিই দাবি করেছেন যে, তিনি হাদীসটি নাদর ইবনু কাসীর ইয়াহইয়া ইবনু সা’দ থেকে, তিনি উরওয়া ইবনু যুবাইর থেকে তিনি আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।1বাইহাকী, ফাদাইলুল আওকাত (মাক্কা মুর্কারামাহ, মাকতাবাতুল মানার, ১ম প্রকাশ, ১৪১০), পৃ. ১২৬-১২৮; আইনী, বাদরুদ্দীন, উমদাতুল কারী ১৭/৫৩; আলী হাশীশ, সিলসিলাতুল আহাদীস আল-ওয়াহিয়্যাহ, পৃ ২৩।

ইবনু হাজার বলেন:

আন-নাদ্র ইবনু কাসীর তাবি-তাবিয়ী যুগের একজন রাবী। মুহাদ্দিসগণ তাকে দুর্বল বলেছেন। ইমাম আহমদ বলেন, এ ব্যক্তি হাদীস বর্ণনায় দুর্বল। ইমাম বুখারী বলেন: সে অত্যন্ত দুর্বল বা মুনকার হাদীস বর্ণনা করেছে। তিনি আরো বলেন: তার বিষয়ে আপত্তি রয়েছে। একেবারে দুর্বল বা মিথ্যাবাদী বর্ণনাকারীদের বিষয়েই ইমাম বুখারী বলেন যে, “তার বিষয়ে আপত্তি আছে”। ইমাম নাসাঈ বলেন: লোকটি চলনসই। ইমাম ইবনু হিব্বান বলেন: এ ব্যক্তি নির্ভরযোগ্য রাবীদের থেকে জাল হাদীস বর্ণনা করতেন। উকাইলী, দোলাবী ও অন্যান্য মুহাদ্দিসও তাকে দুর্বল ও অনির্ভরযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন।2ইবনু হাজার আসকালানী, তাহযীবুত তাহযীব ১০/৪৪৪।

বই : কুরআন-সুন্নাহর আলোকে শবে-বরাত

ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ।

  • 1
    বাইহাকী, ফাদাইলুল আওকাত (মাক্কা মুর্কারামাহ, মাকতাবাতুল মানার, ১ম প্রকাশ, ১৪১০), পৃ. ১২৬-১২৮; আইনী, বাদরুদ্দীন, উমদাতুল কারী ১৭/৫৩; আলী হাশীশ, সিলসিলাতুল আহাদীস আল-ওয়াহিয়্যাহ, পৃ ২৩।
  • 2
    ইবনু হাজার আসকালানী, তাহযীবুত তাহযীব ১০/৪৪৪।
Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।