আজ …… হিজরী সালের রবিউস সানী মাসের প্রথম জুমুআ। আজ আমরা ইলম, শিক্ষা ও স্বাক্ষরতা নিয়ে আলোচনা করব, ইনশা আল্লাহ। কিন্তু তার আগে আমরা এ সপ্তাহের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসগুলির বিষয়ে সংক্ষেপ আলোকপাত করি।

ইসলামে স্বাক্ষরতা, শিক্ষা ও জ্ঞানার্জনের উপরে সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে এবং একে সকল মুমিন নরনারীর জন্য ব্যক্তিগতভাবে ফরয করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ
“ইলম সন্ধান করা প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরয।”1ইবনু মাজাহ, আস-সুনান ১/৮১; আলবানী: সহীহু সুনানি ইবন মাজাহ ১/২৯৬। হাদীসটি সহীহ।)

আলিমদের প্রশংসায় আল্লাহ বলেন:

أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ أَنْزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَأَخْرَجْنَا بِهِ ثَمَرَاتٍ مُخْتَلِفًا أَلْوَانُهَا وَمِنَ الْجِبَالِ جُدَدٌ بِيضٌ وَحُمْرٌ مُخْتَلِفٌ أَلْوَانُهَا وَغَرَابِيبُ سُودٌ. وَمِنَ النَّاسِ وَالدَّوَابِّ وَالْأَنْعَامِ مُخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ كَذَلِكَ إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ غَفُورٌ
“তুমি কি দেখ না আল্লাহ আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং আমি তা দ্বারা বিবিত্র বর্ণের ফলমূল উদ্গত করি? পাহাড়ের মধ্যে আছে বিচিত্র বর্ণের পথ- শুভ্র, লাল ও নিকষ কাল। এভাবে রং বেরং-এর মানুষ, জন্তু ও গৃহপালিত প্রাণী। আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে যারা জ্ঞানী তারাই আল্লাহকে ভয় করে।”2সূরা ফাতির: ২৭-২৮ আয়াত।

এ আয়াতে আলিমদের প্রশংসা করা হয়েছে যে, তাঁরাই আল্লাহকে ভয় করেন। এছাড়া আমরা দেখতে পাই যে, এখানে সৃষ্টির বৈচিত্র ও সৃষ্টিতত্ত্বের সাথে জ্ঞানকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এ থেকে জানা যায় যে, প্রকৃতি বিজ্ঞান-সহ জ্ঞানের সকল শাখাই ইসলামের দৃষ্টিতে প্রশংসনীয় জ্ঞান বা ইসলামী জ্ঞান।

কুরআনের এরূপ আয়াত ও বিভিন্ন হাদীসের আলোকে আলিমগণ উল্লে­খ করেছেন যে, মানুষের কল্যাণকর সকল শিক্ষাই ইসলামী শিক্ষা। ভাষা, সাহিত্য, চিকিৎসা, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, গণিত, ভুগোল ও জ্ঞান বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখাই জ্ঞানার্জন ও শিক্ষালাভ ইসলামের নির্দেশ। সকল বিষয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিশেষজ্ঞ তৈরি করা মুসলিম সমাজের জন্য ফরয কিফাইয়া দায়িত্ব।

মুমিনের উপর ফযর আইন

বা ব্যক্তিগত ফরয ইবাদত হলো নিজের ঈমান ও ইসলামকে সংরক্ষণ করার ও প্রয়োজনীয় সকল ইবাদত ও লেনদেন ইসলাম-সম্মতভাবে আদায় করার জন্য আবশ্যকীয় “শরয়ী” জ্ঞান অর্জন করা। এরপর মুমিন তার নিজের ও সমাজের চাহিদা অনুসারে জ্ঞানের যে কোনো শাখায় পারদর্শিতা অর্জন করবেন।

অক্ষরজ্ঞান ছাড়াও শ্রবণ ও দর্শনের মাধ্যেেমও জ্ঞানার্জন করা যায়। তবে স্বাভাবিকভাবে জ্ঞান অর্জনের জন্য অক্ষরজ্ঞান বা স্বাক্ষরতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে কুরআনে ঘোষণা করা হয়েছে। এজন্য ‘কলম’ বা অক্ষরজ্ঞানকে জ্ঞানের মূল বাহন হিসেবে ঘোষণা দিয়ে আল্লাহ বলেন:
اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ عَلَقٍ اقْرَأْ وَرَبُّكَ الأَكْرَمُ الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ

“পড় তোমার প্রতিপালকের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে লটকে থাকা বস্তু থেকে। পাঠ কর, আর তোমার প্রতিপালক মহা-মহিমান্বিত। যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন।”3সূরা আলাক: ১-৪ আয়াত।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বাক্ষরতা ও শিক্ষার অত্যন্ত গুরুত্ব দিতেন। বদরের যুদ্ধে কিছু কাফির যোদ্ধা বন্দী হন, যারা লেখাপড়া জানতেন। স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দিষ্ট সংখ্যক মুসলিম শিশু-কিশোরের লেখাপড়া শেখানোর বিনিময়ে তাদেরকে মুক্তি প্রদানের ব্যবস্থা করেন।4ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ ৪/৪৭; ড. মাহদী রিযকুল্লঅহ, আস-সীরাহ আন-নববিয়্যাহ, পৃ. ৩৫৯। হাদীসটির সনদ সহীহ।

উপরের আয়াত থেকে আমরা দেখছি যে,

শিক্ষা গ্রহণের মূলনীতি হবে ‘প্রতিপালকের নামে’। অর্থাৎ জ্ঞানের সকল শাখার জ্ঞানই মহান স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস ও সৃুষ্টির কল্যাণের জন্য হতে হবে। আধুনিক শিক্ষাবিদ ও মনোবিজ্ঞানিগণ একমত যে, শিক্ষিত মানুষের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ ও বিশ্বাস সঞ্জীবিত করতে না পারলে কখনোই দুর্নীতি, স্বার্থপরতা ও হানাহানিমুক্ত সমাজ গঠন করা সম্ভব নয়।

এজন্য জ্ঞানের সকল শাখার মধ্যে ধর্মীয় শাখায় পারদর্শিতা অর্জনকে ইসলামে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। এ জ্ঞান মানুষকে যেমন বিশ্বাস ও কর্মে পূর্ণতা দেয়, তেমনি সমাজের মানুষের মধ্যে বিশ্বাস, কর্ম, সততা ও মানবমুখিতা সৃষ্টির যোগ্যতা প্রদান করে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
مَنْ يُرِدْ اللَّهُ بِهِ خَيْرًا يُفَقِّهْهُ فِي الدِّينِ
“আল্লাহ যার মঙ্গলের ইচ্ছা করেন তাকেই দীনের সঠিক জ্ঞান ও বুঝ প্রদান করেন।”5বুখারী, আস-সহীহ ১/৩৭; মুসলিম, আস-সহীহ ২/৭১৮-৭১৯।

দীনের সঠিক জ্ঞান অর্জন বা ইলম শিক্ষা মুমিনের উপর প্রথম ফরয। আল্লাহ বলেন:
فَاعْلَمْ أَنَّهُ لاَ إِلهَ إِلاَّ اللَّهُ
“অতএব তুমি জান (জ্ঞান অর্জন কর) যে আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবূদ নেই।”6সূরা মুহাম্মাদ: ১৯ আয়াত।

এ আয়াত থেকে আমরা জানতে পারছি যে, ঈমানের আগে ইলম ফরয। কিভাবে ঈমান আনতে হবে এবং কিভাবে ঈমান বিশুদ্ধ হবে তা প্রথমে আমাদেরকে জানতে হবে। অনুরূপভাবে সকল কর্মের সফলতা ও কবুলিয়্যত নির্ভর করে সে বিষয়ে বিশুদ্ধ জ্ঞানের উপর। এজন্য প্রত্যেক মুসলিমের জন্য দীনের প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করা ফরয।

প্রাতিষ্ঠানিক ইলম শিক্ষা

সম্ভব না হলেও ব্যক্তিগত পড়ালেখা ও শোনার মাধ্যমে এ ফরয আদায় করতে হবে। ইলম শিক্ষা করলে আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরয ইবাদত পালনের সাওয়াব ও মর্যাদা লাভ করব। শুধু তাই নয়, ঈমানের পরে ইলমই হলো আল্লাহর নিকট মর্যাদা বৃদ্ধির প্রথম উপায়।

আল্লাহ জানিয়েছেন যে, ঈমান এবং ‘ইলম’-এর দ্বারাই আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করেন:
يَرْفَعِ اللَّهُ الَّذِينَ آَمَنُوا مِنْكُمْ وَالَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ دَرَجَاتٍ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ

“তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে ইলম বা জ্ঞান প্রদান করা হয়েছে তাদের মর্যাদা আল্লাহ বাড়িয়ে দিবেন। তোমরা কি কর্ম কর তা আল্লাহ সম্যক অবগত আছেন।”7সূরা মুজাদালা: ১১ আয়াত।

অন্যান্য ইবাদতের চেয়ে ইলম শিক্ষার সাওয়াব ও মর্যাদা বেশি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
فَضْلُ الْعِلْمِ خَيْرٌ مِنْ فَضْلِ الْعِبَادَةِ

“ইবাদতের ফযীলতের চেয়ে ইলমের ফযীলত অধিক উত্তম।”8হাকিম, আল-মুসতাদরাক ১/১৭১; হাইসামী, মাজমাউয যাওয়াইদ ১/১২০; আলবানী, সহীহুত তারগীব ১/১৬। হাদীসটি সহীহ।

ইলম শিক্ষা করার জন্য পথে চলা, হাঁটা, কষ্ট করা ইত্যাদিও ইবাদত। এগুলির মর্যাদা আল্লাহর কাছে অত্যন্ত বেশি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

مَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْمًا سَهَّلَ اللَّهُ لَهُ طَرِيقًا إِلَى الْجَنَّةِ وَإِنَّ الْمَلائِكَةَ لَتَضَعُ أَجْنِحَتَهَا رِضًا لِطَالِبِ الْعِلْمِ وَإِنَّ طَالِبَ الْعِلْمِ يَسْتَغْفِرُ لَهُ مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ حَتَّى الْحِيتَانِ فِي الْمَاءِ وَإِنَّ فَضْلَ الْعَالِمِ عَلَى الْعَابِدِ كَفَضْلِ الْقَمَرِ عَلَى سَائِرِ الْكَوَاكِبِ إِنَّ الْعُلَمَاءَ هُمْ وَرَثَةُ الأَنْبِيَاءِ إِنَّ الأَنْبِيَاءَ لَمْ يُوَرِّثُوا دِينَارًا وَلا دِرْهَمًا إِنَّمَا وَرَّثُوا الْعِلْمَ فَمَنْ أَخَذَهُ أَخَذَ بِحَظٍّ وَافِرٍ

“যদি কেউ ইলম শিক্ষার মানসে কোনো পথে চলে, তবে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দেন। ফিরিশতাগণ ইলম শিক্ষার্থীর এই কর্মের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তার জন্য তাদের পাখনাগুলি বিছিয়ে দেন। আলিমের জন্য আসমান এবং জমিনের সকলেই ক্ষমা প্রার্থনা করে। এমনকি পানির মধ্যে মাছও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে।

তারকাররাজির

উপরে চাঁদের যেমন মর্যাদা, ইবাদত-বন্দেগিতে লিপ্ত ‘আবিদের’ উপরে ‘আলিমের’ মর্যাদা তেমনই। আলিমরাই হচ্ছেন নবীদের উত্তরাধিকারী। নবীরা (আ) কোনো টাকা-পয়সা দীনার-দিরহাম উত্তরাধিকার রেখে যান নি। তাঁরা শুধু ইলম-এর উত্তরাধিকার রেখে যান। কাজেই যে ব্যক্তি ইলম গ্রহণ করল, সে নবীদের উত্তরাধিকার থেকে একটি বড় অংশ গ্রহণ করল।”9বুখারী, আস-সহীহ ১/৩৭; মুসলিম, আস-সহীহ ৪/২০৭৪; তিরমিযী, আাস-সুনান ৫/২৮, ৪৮; ইবনু মাজাহ, আস-সুনান ১/৮১-৮২। হাদীসটি হাসান।

আমরা হয়ত মনে করতে পারি যে, এই মহান মর্যাদা বোধহয় শুধু মাদ্রাসায় যারা পড়েন অথবা যারা প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে ইলম শিক্ষা করেন তাদের জন্যই। প্রকৃত বিষয় তা নয়। যে কোনো বয়সের যে কোনো মুমিন ওয়াজ মাহফিলে, মসজিদে, খুতবার আলোচনায়, আলেমের নিকট প্রশ্ন করে, বই পড়ে বা যে কোনো ভাবে ইলম শিক্ষা করতে গেলেই এই মর্যাদা ও সাওয়াব লাভ করবেন।

ইলম শিক্ষার উদ্দেশ্যে মসজিদে গমন করলে, কোনো আলিমের নিকট গমন করলেও একইরূপ সাওয়াব ও মর্যাদা পাওয়া যাবে বলে বিভিন্ন হাদীসে উল্লে­খ করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন:
مَنْ غَدَا إِلَى الْمَسْجِدِ لاَ يُرِيْدُ إِلاَّ أَنْ يَتَعَلَّمَ خَيْراً أَوْ يُعَلِّمَهُ كَانَ لَهُ كَأَجْرِ حَاجٍّ تَامًّا حَجَّتُهُ

“যদি কোনো ব্যক্তি সকাল সকাল বা দ্বিপ্রহরের পূর্বে মসজিদে গমন করে, তার গমনের একমাত্র উদ্দেশ্য হয় (ইমামের খুতবা থেকে) কোনো ভাল কিছু শিক্ষা করা অথবা শিক্ষা দেওয়া, তবে সেই ব্যক্তি একটি পরিপূর্ণ হজ্জের সাওয়াব লাভ করবে।”10মুনযিরী, আত-তারগীব ১/৫৯; হাইসামী, মাজমাউয যাওয়াইদ ১/১২৩; আলবানী, সহীহুত তারগীব ১/২০। হাদীসটি হাসান।

অন্য হাদীসে তিনি বলেন:

مَنْ جَاءَ مَسْجِدِي هَذَا لَمْ يَأْتِهِ إِلا لِخَيْرٍ يَتَعَلَّمُهُ أَوْ يُعَلِّمُهُ فَهُوَ بِمَنْزِلَةِ الْمُجَاهِدِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ

“যে ব্যক্তি আমার মসজিদে আগমন করবে, তার একমাত্র উদ্দেশ্য হবে কোনো ভাল বিষয় শিক্ষা করা বা শিক্ষা দেওয়া, সেই ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীগণের মর্যাদা লাভ করবেন।”11ইবনু মাজাহ, আস-সুনান ১/৮২; আলবানী, সহীহুত তারগীব ১/২০। হাদীসটি সহীহ।

অন্য হাদীসে তিনি সাহাবী হযরত আবূ যার (রা) কে বলেন:
يَا أَبَا ذَرٍّ لأَنْ تَغْدُوَ فَتَعَلَّمَ آيَةً مِنْ كِتَابِ اللَّهِ خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ تُصَلِّيَ مِائَةَ رَكْعَةٍ وَلأَنْ تَغْدُوَ فَتَعَلَّمَ بَابًا مِنْ الْعِلْمِ عُمِلَ بِهِ أَوْ لَمْ يُعْمَلْ خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ تُصَلِّيَ أَلْفَ رَكْعَةٍ

“তুমি যদি যেয়ে কুরআনের একটি আয়াত শিক্ষা কর, তবে তা তোমার জন্য ১০০ রাক‘আত নফল সালাত আদায় করার থেকেও উত্তম। আর যদি তুমি ইলমের একটি অধ্যায় শিক্ষা কর- আমল কৃত অথবা আমলকৃত নয়- তবে তা তোমার জন্য ১০০০ রাক‘আত সালাত আদায় থেকেও উত্তম।”12ইবনু মাজাহ, আস-সুনান ১/৭৯; মুনযিরী, আত-তারগীব ১/৫৪, ২/২৩২। মুনযিরী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।

আমরা দেখেছি যে,

মহান আল্লাহ ঈমানের পরে ইলমকে মর্যাদার মূল উৎস বলেছেন। হাদীস শরীফে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, সকল সৃষ্টি আলিমদের ও শিক্ষকদের জন্য দুআ করে। সকল মুমিনের দায়িত্ব আলিমদের ও শিক্ষকদের সম্মান করা।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
لَيْسَ مِنْ أُمَّتِي مَنْ لَمْ يُجِلَّ كَبِيرَنَا وَيَرْحَمْ صَغِيرَنَا وَيَعْرِفْ لِعَالِمِنَا حَقَّهُ

“যে ব্যক্তি বড়দের সম্মান করে না, ছোটদের স্নেহ করে না এবং আলেমদের বা জ্ঞানীদের মর্যাদা- অধিকার বোঝে না সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।”13আহমদ, আল-মুসনাদ ৫/৩২৩; হাকিম, আল-মুসতাদরাক ১/২১১; হাইসামী, মাজমাউয যাওয়াইদ ১/১২৭, ৮/১৪। হাদীসটি হাসান।

আমরা দুনিয়াতে যত নেক

আমল করি সেগুলির সাথে ইলম শিক্ষার নেক আমলের দুইটি বিশেষ পার্থক্য আছে। প্রথমত, অন্যকে শিখালে ইলম-এর সাওয়াব চক্রবৃদ্ধিহারে বৃদ্ধি পায় এবং দ্বিতীয়ত, ইলমের সাওয়াব মৃত্যুর পরেও অব্যাহত থাকে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
مَنْ عَلَّمَ عِلْمًا فَلَهُ أَجْرُ مَنْ عَمِلَ بِهِ لا يَنْقُصُ مِنْ أَجْرِ الْعَامِلِ

“যদি কেউ কোনো ইলম শিক্ষা দেয়, তবে সেই শিক্ষা অনুসারে যত মানুষ কর্ম করবে সকলের সমপরিমাণ সাওয়াব ঐ ব্যক্তি লাভ করবে, কিন্তু এতে তাদের সাওয়াবের কোনো ঘাটতি হবে না।”14ইবনু মাজাহ, আস-সুনান ১/৮৮; আলবানী, সহীহুত তারগীব ১/১৯। হাদীসটি হাসান।

আমাদের সকল নেক আমল মৃত্যুর সাথে সাথে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ইলমের সাওয়াব মৃত্যুর পরেও অব্যাহত থাকে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
إِذَا مَاتَ الإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلا مِنْ ثَلاثَةٍ إِلا مِنْ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ

“যখন কোনো আদম-সন্তান মৃত্যুবরণ করে তখন তার সকল কর্ম বন্ধ হয়ে যায়। শুধু তিনটি কর্মের সাওয়াব সে অব্যাহতভাবে পেতে থাকে: প্রবাহমান দান (সাদাকায়ে জারিয়া), উপকারী ইলম এবং নেককার সন্তান যে তার জন্য দোয়া করতে থাকে।15মুসলিম, আস-সহীহ ৩/১২৫৫।

নিজেদের জন্য প্রয়োজনীয়

দীনী ইলম শিক্ষা করা যেমন ফরয আইন, তেমনি প্রত্যেক পিতামাতার উপর ফরয আইন নিজের সন্তানদেরকে প্রয়োজনীয় দীনী ইলম শিক্ষা দেওয়া। এজন্য সর্বোত্তম পন্থা হলো নিজের সন্তানকে ‘আলিম’ বানানো।

দুনিয়াতে আমরা অনেক সময় গৌরব করে বলি যে, আমি শিক্ষিত না হলেও আমার ৫টি সন্তানই এম.এ. পাস। কিয়ামতের দিন এরূপ আমাদের অনেকেই গৌরব করবেন, আমি আলিম হতে পারি নি, তবে আমার ৫টি সন্তানই আলিম। ভাইয়েরা, দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী গৌরবের চেয়ে আখিরাতের চিরস্থায়ী গৌরব কি বড় নয়?

বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময় একটি মিথ্য প্রচারণা আমাদের সমাজে ছড়ানো হয় যে, দীনী ইলম ফকীরী বিদ্যা বা মাদ্রাসায় পড়লে জাগতিক উন্নতি হয় না। এর চেয়ে মিথ্যা প্রপাগা-া আর কিছুই হতে পারে না। স্কুল কলেজে যারা ভর্তি হয় তাদের বৃহৎ অংশ উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না। যারা পারে তাদেরও অনেকেই বেকার থাকে বা ভাল চাকরী পায় না। পাশাপাশি সমাজে হাজার হাজার আলিম প্রফেসর, ডাক্তার, আইনজীবী, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, মুহাদ্দিস, শিক্ষক অত্যন্ত সম্মান ও শান্তির সাথে বসবাস করছেন।

মেধা, যোগ্যতা ও সামগ্রিক

পরিবেশের উপরে ব্যক্তির জাগতিক উন্নতি নির্ভর করবে। মেধা ও যোগ্যতা থাকলে মাদ্রাসা বা স্কুল যেখানেই পড়–ক সে সম্মানজনক স্থানে পৌঁছাবে। তবে সবচেয়ে বড় কথা দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী সামান্য উন্নতির লোভে আপনি আলিমের পিতা হওয়ার ও নেক সন্তানের দুআ পাওয়া এত বড় সুযোগ ছেড়ে দেবেন? আপনার সন্তানকে জাহান্নামে দেওয়ার ও নিজে জাহান্নামে যাওয়ার রিস্ক নিবেন?

সাধারণ শিক্ষা মোটেও নিষিদ্ধ নয়, তবে দীনী ইলম শিক্ষার মধ্যে আপনার ও আপনার সন্তানের অধিক মর্যাদা ও নাজাতের নিশ্চয়তা রয়েছে। আর যদি সন্তানকে সাধারণ শিক্ষায় পড়াতে চান তবে অবশ্যই তাদেরকে প্রয়োজনীয় দীনী ইলম প্রথমে শিখাতে হবে। এটা আপনার জন্য ফরয আইন। প্রথমে কয়েক ক্লাস মাদ্রাসায় পড়িয়ে অথব মক্তবে পড়িয়ে তাদেরকে প্রয়োজনীয় দীনী ইলম শিক্ষা দিন।

অনেক সময় আমরা বাড়িতে প্রাইভেট টিউটর রেখে কুরআন তিলাওয়াত ও দীনী ইলম শিক্ষা দিতে চেষ্টা করি। তবে গুরুত্বের কমতি, পাঠ গ্রহণে সঙ্গীর অভাব, স্কুলের পাঠের চাপ ইত্যাদি কারণে সাধারণত এরূপ প্রাইভেট শিক্ষকের কাছ থেকে শিখে সন্তানদের মধ্যে দীনী শিক্ষা বা দীনী আমল কোনোটাই বিকাশ পায় না।

এজন্য সন্তানদেরকে অন্তত

কিছু ক্লাস মাদ্রাসায় বা মক্তবে পড়িয়ে এরপর সাধারণ শিক্ষায় পাঠান। অন্তত যেন তারা প্রকৃত মুসলিম হিসেবে বাঁচতে পারে, নেককার সন্তান হিসেবে আপনার জন্য দুআ করতে পারে এবং আখিরাতে আবার একত্রে আপনার সাথে জান্নাতে যেতে পারে। আপনার অবহেলার কারণে যদি আপনার সন্তান বেনামাযি বা পাপী হয় তবে তাদের সারাজীবনের গোনাহের দায়ভার আপনার উপর থাকবে।

আপনি নিজে নেককার হলেও এরূপ সন্তানের পাপের জন্য আপনাকে তার সাথে জাহান্নামে যেতে হবে। শুধু আখিরাতই নয়, ভাইয়েরা, সন্তানদেরকে প্রয়োজনীয় দীনী ইলম না শিখালে দুনিয়াতেই তারা পিতামাতার হক্ক ও আদব রক্ষা করে না। আাদরের সন্তান শেষ জীবনে প্রচ- কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

ইসলামী ইলমের মূল উৎস হলো কুরআন ও হাদীস।

এজন্য প্রত্যেক মুসলিমের দায়িত্ব হলো, কুরআন কারীম পাঠ করা এবং তার অর্থ অনুধাবন করা। কুরআন কারীম সকল মুসলিমের সার্বক্ষণিক পাঠের জন্য। আর বুঝে পড়াকেই মূলত পাঠ বলা হয়। এছাড়া মহান আল্লাহ কুরআনে বারংবার কুরআন কারীম বুঝে পড়তে এবং তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

আরবী না বুঝলে নির্ভরযোগ্য আলিমদের মুখ থেকে বা এরূপ নির্ভরযোগ্য প্রসিদ্ধ আলিমদের লেখা অনুবাদ পড়ে অন্তত কুরআনের অর্থ বুঝার চেষ্টা করুন। তাফসীর পড়তে না পারলেও অন্তত প্রতি বৎসর একবার কুরআন কারীম অর্থ-সহ পড়ে শেষ করুন। দেখবেন, জীবন পাল্টে গেছে, কুরআনের নূর হৃদয়ে এসেছে।

কুরআন পাঠের পাশাপাশি প্রত্যেক মুসলিমকেই যথাসাধ্য বেশিবেশি সহীহ হাদীসের গ্রন্থ পাঠ করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাত জানতে ও মানতে হবে। আল্লাহর রহমতে সিহাহ সিত্তা-সহ নির্ভরযোগ্য হাদীসের গ্রন্থগুলি বাংলায় অনূদিত হয়েছে। যদি বৃহৎ গ্রন্থগুলি কিনতে না পারেন, তবে অন্তত ইমাম নববীর লেখা ‘রিয়াদুস সালিহীন’ গ্রন্থটির অনুবাদ কিনে নিয়মিত পাঠ করুন।

যিনি হাদীস পড়েন তিনি মূলত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাহচার্যে থাকেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাহচার্য থেকে নিজেকে মাহরূম করবেন না।

কুরআন-হাদীসের অর্থানুবাদ পড়ে কখনোই নিজেকে বড় আলিম মনে করবেন না বা আলিমদের ভুল ধরতে যাবেন না। আমরা কুরআন-হাদীসের অনুবাদ পাঠ করব নিজেদের ঈমান-আমল পরিশুদ্ধ করতে এবং সামান্য হলেও কুরআন ও হাদীসের নূর গ্রহণ করতে। এগুলো পড়লেই ইসলামের সবকিছু জানা হয় না।

এগুলি অবশ্যই পড়তে হবে।

পাশাপাশি নির্ভরযোগ্য বিশেষজ্ঞ আলিমদের মুখ ও লেখা থেকেও শিখতে হবে। যে সকল আলিম কুরআন ও সহীহ হাদীস নির্ভর ওয়ায করেন বা বই লিখেন তাদের থেকে শিক্ষা লাভ করতে হবে। যারা পরবর্তী যামানার গল্প-কাহিনী বা অলৌকিক কিচ্ছা অথবা জাল হাদীস নির্ভর ওয়ায করেন বা বইপত্র লিখেন তাদের থেকে দূরে থাকতে হবে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
سَيَكُونُ فِيْ آخِرِ الزَّمَانِ أُنَاسٌ مِنْ أُمَّتِيْ يُحَدِّثُونَكُمْ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوا أَنْتُمْ وَلاَ آبَاؤُكُمْ فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ.

“শেষ যুগে আমার উম্মাতের কিছু মানুষ তোমাদেরকে এমন সব হাদীস বলবে যা তোমরা বা তোমাদের পিতা-পিতামহগণ কখনো শুননি। খবরদার! তোমরা তাদের থেকে সাবধান থাকবে।”16মুসলিম, আস-সহীহ ১/১২।

কোনো আলিমের বই পড়ে বা ওয়ায শুনে কোনো হাদীসের বিষয়ে দ্বিধা বা আপত্তি হলে ঝগড়া-বিতর্ক না করে হাদীসটি কোন্ হাদীসের গ্রন্থে সংকলিত এবং তার সনদটি সহীহ কিনা তা জানতে চেষ্টা করুন। সহীহ সনদ পাওয়া গেলে মেনে নিন। না পাওয়া গেলে বাদ দিন।

আত্মমর্যাদার নামে ঝগাড়া করে গোনাহগার হবেন না। ফকীহগণ বলেছেন যে, কোনো হাদীস বলার সময় হাদীসটি সনদসহ কোন্ গ্রন্থে সংকলিত অন্তত তা বলতে হবে। এরূপ না বলে হাদীস বলা তারা না জায়েয বলেছেন। মুসলিম উম্মাহর ফিরকাবাজি, কোন্দল, কুসংস্কার, শিরক, বিদআত ইত্যাদির মূল কারণ জাল হাদীস।

ইসলামের প্রথম যুগ থেকেই

ইসলামের শত্রুগণ, শীয়াগণ, দুর্বল ঈমান ওয়ায়েযগণ ও অনুরূপ অনেক মানুষ নিজেদের স্বার্থ বা মতবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য হাদীসের নামে জাল কথা প্রচার করেছে। সাহাবীগণ এবং পরবর্তী আলিমগণ এজন্য সনদ ছাড়া কোনো হাদীস গ্রহণ করতেন না। সনদে যাদের নাম বলা হয় তাদের সকল বর্ণনা একত্রিত করে কোর্টের উকিল ও বিচারকদের মত ক্রস পরীক্ষা করে এদের জালিয়াতি ধরেছেন।

তাঁরা জাল হাদীস ও সহীহ হাদীস পৃথক করেছেন। এজন্য মুহাদ্দিগণের নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রাপ্ত সহীহ হাদীসের উপর নির্ভর করতে হবে। আলিমগণ বারংবার বলেছেন যে, অন্তুত হাদীসের কোন্ প্রসিদ্ধ গ্রন্থে হাদীসটি আছে তা না জেনে কোনো হাদীস বলা বা গ্রহণ করা যাবে না।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
كَفَى بِالْمَرْءِ إِثْمًا أَنْ يُحَدِّثَ بِكُلِّ مَا سَمِعَ.
“একজন মানুষের পাপী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনবে তাই বর্ণনা করবে।”((মুসলিম, আস-সহীহ ১/১০।))

কোনো হাদীস সম্পর্কে জাল বলে সন্দেহ হলে মুহাদ্দিসদের নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তা আর বলা যাবে না। কারণ এতে জাল হাদীস প্রচারে সহযোগিতা হবে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

مَنْ حَدَّثَ عَنِّيْ حَدِيْثًا وَهُوَ يُرَى أَنَّهُ كَذِبٌ فَهُوَ أَحَدُ الْكَاذِبَيْنِ.

“যে ব্যক্তি আমার নামে কোনো হাদীস বলবে এবং তার মনে সন্দেহ হবে যে, হাদীসটি মিথ্যা, সেও একজন মিথ্যাবাদী।”((মুসলিম, আস-সহীহ ১/৯।)) আর হাদীসের নামে মিথ্যা বলার সুনিশ্চিত শাস্তি জাহান্নাম।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
مَنْ يَقُلْ عَلَيَّ مَا لَمْ أَقُلْ (مَنْ كَذَبَ عَلَيَّ) فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنْ النَّارِ

“আমি যা বলিনি সে কথা যে আমার নামে বলবে (আমার নামে মিথ্যা বলবে) তার আবাসস্থল জাহান্নাম।”((বুখারী, আস-সহীহ ১/৫২।))
আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর কিতাব ও তাঁর রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুন্নাত আঁকড়ে থাকার তাওফীক দিন। আমীন।

ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, রাহিমাহুল্লাহ, বই: খুতবাতুল ইসলাম, পৃ. ১২৭।

আস-সুন্নাহ শিক্ষা, গণশিক্ষা ও গণসচেতনা প্রকল্প. পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নাবী, হাদীসের বিশুদ্ধতা যাচাই: রাসূলুল্লাহ (সা.) এর নির্দেশ ও সাহাবীগণের