As-Sunnah Trust

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 863

অর্থনৈতিক

প্রকাশকাল: 10 Jun 2008

প্রশ্ন

আস্সালামু আলাইকুম, শ্রদ্ধেয় হজু্র .
১) মাইয়েতের জানাজা সম্পর্কে জানতে চাই। ক) সহি হাদিস অনুসারে মাইয়েতের জানাজা কয়বার হতে পারে? গায়েবি জানাজা বা একাধীক জানাজা শরীয়া সম্মত কি? খ) যদি একাধীক জানাজা শরীয়ত সম্মত হয় তাহলে এক ব্যক্তি একাধিক জানাজায় অংশ নিতে পারবে কি?
২) জিলহাজ মাসের নফল/সুন্নত রোজা সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন। আব্দুর রহিম /নাটোর/০১৭১২৬৬৯০২৭

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। সহীহ হাদীস অনুযায়ী একাধিক জানাযা করার কোন সুযোগ নেই। রাসূলুল্লাহ সা. কারো একাধিক জানাযা করেছেন বরে জানা যায় না। তবে কোন কোন আলেম এই শর্তে একাধিক জানাযার অনুমতি দিয়েছেন যে, যারা পূর্বের জানাযাতে অংশ নেয় নি তারা অংশ নিবে। গায়েবানা জানাযা্ও সুন্নাহসম্মত নয় । এই বিষয়ে শায়খ ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহ. বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সা. এর বেশি আমল ও কম আমলের মধ্যে সামাঞ্জস্য না-রাখার ফলে খেলাফে-সুন্নাতের মধ্যে নিপতিত হওয়ার আরেকটি উদাহরণ গায়েবানা জানাযার রীতি প্রচলন করা। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবদ্দশায় তাঁর অগণিত সাহাবী, আত্মীয়স্বজন ও আপনজন মৃত্যু বরণ করেছেন। অনেকেই তাঁর থেকে দূরে জিহাদের ময়দানে, বন্দি অবস্থায় বা দূরের কোনো শহরে বা গ্রামে অবস্থানকালে ইন্তেকাল করেছেন। কেউ তাঁর কাছে থেকে ইন্তেকাল করলে তিনি সাধারণত তাঁর জানাযা পড়তেন। তিনি কখনো কারো মৃতদেহের অনুপস্থিতিতে তার জানাযা পড়াননি। শুধুমাত্র একটি ব্যতিক্রম ছিল আবিসিনিয়ার শাসক নাজাশীর ইন্তেকাল। সাহাবীগণ আবিসিনিয়ায় হিজরত করলে তাঁদের সংস্পর্শে এসে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর দেশে আর কেউ ইসলাম গ্রহণ করেনি। যেদিন নাজাশী ইন্তেকাল করেন সেই দিনই রাসূলুল্লাহ (সা.) সাহাবীগণকে তাঁর ইনতেকালের সংবাদ প্রদান করেন এবং গায়েবানা জানাযার নামায আদায় করেন। জীবনে সর্বদা যা বর্জন করেছেন এই একটি ঘটনায় তিনি তা করলেন। তাহলে আমরা কী বলব ও কী করব? আমরা বলতে পারি যে, বিষয়টি তাঁর জন্য খাস ছিল। আল্লাহ তাআলা নাজাসীকে মর্যাদা প্রদান করে তাঁর মৃতদেহ রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর চাক্ষুস করে দেন এবং তিনি জানাযা আদায় করেন। অথবা বলতে পারি যে, বিশেষ পরিস্থিতিতে যদি কোনো মুসলমান এমন কোনো দেশে ইন্তেকাল করেন যেখানে কোনোভাবে তাঁর জানাযা আদায় করা হবে না, সেক্ষেত্রে মুসলিম দেশের প্রধান বিশেষভাবে তাঁর জন্য জানাযা আদায় করবেন। কিন্তু কোনো অবস্থায় আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর একদিনের কাজকে আমাদের রীতি বানিয়ে নিতে পারি-না। তাহলে তাঁর সবসময়ের রীতি আমরা বর্জন করব। এভাবেই আমরা বিদআতের মধ্যে নিপতিত হব। এহইয়াউস সুনান, পৃষ্ঠা ৩৭৪। স্যার রহ. জ্বিলহজ্ব মাসের আমল সম্পর্কে খুতবাতুল ইসলাম কিতাবে বলেছেন, বিভিন্ন সহীহ হাদীস থেকে আমরা জানতে পারি যে, যুলহাজ্জ মাসের প্রথম দশ দিনের নেক আমল আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয়। সহীহ বুখারী অন্যান্য গ্রন্থে সংকলিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন: مَا مِنْ أَيَّامٍ الْعَمَلُ الصَّالِحُ فِيهَا أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ مِنْ هَذِهِ الأَيَّامِ يَعْنِي أَيَّامَ الْعَشْرِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَلا الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ قَالَ وَلا الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ إِلا رَجُلٌ خَرَجَ بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ فَلَمْ يَرْجِعْ مِنْ ذَلِكَ بِشَيْءٍ যুলহাজ্জ মাসের প্রথম দশ দিনে নেক আমল করা আল্লাহর নিকট যত বেশি প্রিয় আর কোনো দিনের আমল তাঁর নিকট তত প্রিয় নয়। সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহর রাসূল, আল্লাহর পথে জিহাদও কি এ দশদিনের নেক আমলের চেয়ে আল্লাহর নিকট প্রিয়তর নয়? তিনি বলেন, না, আল্লাহর পথে জিহাদও প্রিয়তর নয়, তবে ঐ ব্যক্তি ছাড়া, যে ব্যক্তি নিজের প্রাণ ও সম্পদ নিয়ে জিহাদে বেরিয়ে গেল এবং কোনো কিছুই আর ফিরে এলো না (সম্পদও শেষ হলো, সেও শহীদ হলো)।সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৬৯; সুনানু আবু দাউদ, হাদীস নং ২৪৪০। অন্য হাদীসে তিনি বলেন: أَفْضَلُ أَيَّامِ الدُّنْيَا الْعَشْرُ، يَعْنِيْ عَشْرَ ذِيْ الْحَجَّةِ দুনিয়ার সবচেয়ে বেশি ফযীলতের দিন হলো যুলহাজ্জ মাসের প্রথম এ দশ দিন। হাইসামী, মাজমাউয যাওয়াইদ ৩/২৫৩, ৪/১৭; আলবানী, সহীহহুত তারগীব ২/১৫। হাসীসটি সহীহ। বিস্তারিত জানতে দেখুন, খুতবাতুল ইসলাম বইয়ের জ্বিলকদ মাসের শেষ খুতবা।

আমাদের নতুন ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে ক্লিক করুন।