আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 5571

ব্যক্তিগত ও পারিবারিক

প্রকাশকাল: 1 মে 2021

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আমি একটি কোম্পানীর হয়ে অন্য আরেকটি ক্লাব কোম্পানীর সফটওয়্যার সাপোর্টে কাজ করি। যাদের মুল আয়ের উৎস হচ্ছে মেম্বারদের মাসিক চাঁদা, গলফ খেলা, রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি। এগুলো ম্যানেজ করার জন্য তারা উক্ত সফটওয়ারটি ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু সফটওয়্যারটির অনেক ফাংশনালিটি/মডিউলের মধ্যে একটা ছোট মডিউল হচ্ছে বার ইনভেন্টরী। যেটা দিয়ে মূলত ঐ প্রতিষ্ঠানটির একটি বারের হিসাব-নিকাশ বা স্টক ক্যালকুলেশন করে থাকে। এই মডিউলে আমার সাপোর্ট এখন পর্যন্ত খুব কম দেওয়া লেগেছে, এমনকি তা অনিয়মিত, কালে ভদ্রে। যদিও তাও অপছন্দীয়। ঐ কোম্পানীর সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারি তাদের এই বার অনিচ্ছা সত্ত্বেও পরিচালনা করতে কিছুটা বাধ্য হচ্ছে। এবং বার থেকে প্রাপ্ত টাকা তাদের মূল আর্থিক হিসাব থেকে তারা আলাদা রাখেন, যেন তা মূল ইনকামের সাথে যুক্ত না হয়। সেই সাথে এটাও তারা দাবি করেন বেতনাদি ও সার্ভিস চার্জের টাকা মূল ইনকাম থেকেই দেওয়া হয়, যার সাথে ঐ বার থেকে প্রাপ্ত ইনকামের কোন সম্পর্ক নাই (আল্লাহ ভাল জানেন)। এখন যেহেতু ঐ সফটওয়্যারটির আরো অনেক মডিউল বিদ্যমান সেহেতু সেখানে সাপোর্ট দিয়ে যে বেতন আমি পাই (যে কোম্পানীর হয়ে কাজ করি সেখান থেকে) তা কি পুরোটাই অবৈধ হবে? যদি হয়, তাহলে এবাবদ এতদিনের (৫ বছর+) আয়কৃত সব টাকাই কি অবৈধ বলে গন্য হবে? যদি না হয়, তথাপি যেহেতু সন্দেহজনক কিছু বিষয় রয়েছে, আমি কি প্রাপ্ত বেতনের কিছু অংশ (৫%) আলাদা করে কাফফারা হিসেবে দান করলে হবে? যদি হয়, সেক্ষেত্রে আমি পূর্বে যতদিন এই কাজের সাথে যুক্ত আছি পুরোটার হিসাব করে (আগে দেওয়া হয় নাই) দিব? না এখন থেকে দিলেই হবে? Best Regards, Abu Huzaifa Al Muzahidi

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। একজন প্রকৃত মূমিনের জন্য আবশ্যক হলো এমন কর্ম খুঁজে নেওয়া যেখানে হারামের কোন সন্দেহ থাকবে না। এই ধরণের হারাম মিশ্রিত কোন কাজ করা কোন মুসলিমের জন্য শোভনীয় নয়। আপনার ইনকাম পুরোপুরি হারাম হবে কিনা সেটা স্পষ্ট করে না বলে বরং বলবো এটা হারাম-হালালের মাঝে সন্দেহজনক কর্ম এবং মন্দা কাজে স্পষ্ট সহায়তা। আর আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন,(ولا تعاونوا على الإثم والعدوان) মন্দকর্ম ও সীমালংঘনের কাজে তোমরা একে অপরকে সহযোগিতা করো না। সূরা মায়েদা, আয়াত নং ২। সন্দেহজনক বিষয়ের ক্ষেত্রে হাদীসে রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, إِنَّ الْحَلاَلَ بَيِّنٌ وَإِنَّ الْحَرَامَ بَيِّنٌ وَبَيْنَهُمَا مُشْتَبِهَاتٌ لاَ يَعْلَمُهُنَّ كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ فَمَنِ اتَّقَى الشُّبُهَاتِ اسْتَبْرَأَ لِدِينِهِ وَعِرْضِهِ وَمَنْ وَقَعَ فِى الشُّبُهَاتِ وَقَعَ فِى الْحَرَامِ নিশ্চয় হালালকাজগুলো বলে দেয়া হয়েছে এবং হারামগুলোও বলে দেয়া হয়েছে। এই দুয়ের মাঝে আছে সন্দেহযুক্ত বিষয়। অধিকাংশ মানুষ তা জানে না। সুতরাং যে সন্দেহ থেকে বেচেঁ থাকবে সে তার ধর্ম ও সম্মানকে মুক্ত রাখবে আর যে সন্দেহের মধ্যে পতিত হবে (অর্থাৎ হালাল নাকি হারাম তা স্পষ্ট হচ্ছে না এমন সন্দেহ যুক্ত কোন কাজ করবে) সে হারাম কাজ করবে। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪১৭৮। সুতরাং পূর্বে যে গুনাহ হয়েছে তার জন্য আল্লাহ তায়ালার ক্ষমা চেয়ে নিন। আর এখন থেকে এই কাজ থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকুন। সুন্দর, স্বচ্ছ, হালাল ও সন্দেহমুক্ত ইনকাম সোর্স খুঁজে বের করুন। পূর্বের ইনকামের টাকা থেকে সাধ্যমত গরীবদেরকে দিতে পারেন।