আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 55

রোজা

প্রকাশকাল: 25 মার্চ 2006

প্রশ্ন

একজন মানুষ বিদেশে কায়িক প্ররিশ্রম করে । তাই সে দেশে একজন রোজাদারের সেহরী ও ইফতার দিয়ে মনে করছে তার রোজার হক হয়ে যাচ্ছে । এটা কি তার রোজার কাফফারা?

উত্তর

প্রশ্ন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। না, এর দ্বারা তার রোজার কাফফারা হচ্ছে না। এটা তার ভুল ও বিপজ্জনক চিন্তা। কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ অর্থ: রামাদান মাসে কুরআন নাযিল হয়েছে……তোমাদের মধ্যে যে রামাদান মাস পাবে সে যেন রোজা রাখে। সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৫। সুতরাং প্রত্যেক সুস্থ মুসলিমের উপর রামাদানের রোজা রাখা ফরজ । অসুস্থতার জন্য রোজা রাখতে না পারলে সুস্থ হওয়ার পর তা আদায় করতে হবে। আর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকলেই কেবল ফিদিয়া দিতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে, ফিদিয়া সেহরী ইফতার দিয়ে নয় বরং একজন মিসকিনকে দুবেলা খাবার বা খাবারের টাকা দিয়ে আদায় করতে হবে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ অর্থ: তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ থাকবে কিংবা সফরে থাকবে তাহলে তার জন্য অন্য দিনগুলো, (অর্থাৎ সে পরে সুস্থ হলে কিংবা সফর থেকে ফিরে আসলে যে রোজাগুলো রাখতে পারে নাই সেগুলো রাখবে)। আর যারা রোজা রাখতে গিয়ে কষ্টের শিকার হবে তাদের উপর আবশ্যক হল ফিদিয়া একজন মিসকীনকে খাবার খাওয়ানো। সূরা বাকারাহ, আয়াত: ১৮৪। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেছেন, কষ্টের শিকার ব্যক্তি দ্বারা উদ্দেশ্য হল প্রচন্ড বৃদ্ধ মানুষ ( যারা রোজা রাখতে পারে না)। তাফসীরে ইবনে কাসীর, সূরা বাকারাহ, আয়াত ১৮৪। আধুনিক ফিকহী কিতাব আল ফিকহুল ইসলামিয়্যু ও আদিল্লাতুহু এর লেখক ড. ওহুবাহ আয যুহায়লি বলেন, وتجب الفدية أيضاً بالاتفاق على المريض الذي لا يرجى برؤه، لعدم وجوب الصوم عليه، অর্থ: সর্বাক্যমতে ফিদিয়া ওয়াজিব হবে এমন অসুস্থ ব্যক্তির উপর যার সুস্থ হওয়ার ব্যাপারে আশা করা যায় না। কেননা তার উপর তখন রোজা ওয়াজিব থাকে না। আল ফিকহুল ইসলামিয়্যু ও আদিল্লাতুহু, ২/৬০৫। আরো দেখুন: আল ফিকহ আলা মাযাহিবিল আরবা ১/৪৪৫। উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে, প্রশ্নেল্লোখিত ব্যক্তির জন্য এভাবে রোজা না রেখে কাউকে সেহরী ইফতার করানো শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েজ নেই। সুস্থ ব্যক্তিকে অবশ্যই রোজা রাখতে হবে। সুস্থ হওয়ার আশা নেই এমন অসুস্থ ব্যক্তিই কেবল ফিদিয়া দিতে পারবে তথা তার উপর ফিদিয়া দেয়া ওয়াজিব। আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন।