As-Sunnah Trust

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 2317

জান্নাত-জাহান্নাম

প্রকাশকাল: 3 জুন 2012

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম। কোন ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ইমান এনেছে এবং সালাত আদায় করে সেই ব্যক্তি যদি ১ টি কবিরা গুনাহ করে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার আগে মৃত্যু বরন করে তাহলে সেই ব্যক্তি কি চিরকাল জাহান্নামে আবস্থান করবে? তার একটি কবিরা গুনাহর ফলে সমস্থ নেক আমল কি নষ্ট হয়ে যাবে। (4:93
وَمَن يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُهُۥ جَهَنَّمُ خٰلِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُۥ وَأَعَدَّ لَهُۥ عَذَابًا عَظِيمًا
আর যে ইচ্ছকৃত কোন মুমিনকে হত্যা করবে, তার প্রতিদান হচ্ছে জাহান্নাম, সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর আল্লাহ তার উপর ক্রুদ্ধ হবেন, তাকে লানত করবেন এবং তার জন্য বিশাল আযাব প্রস্তুত করে রাখবেন। )
আমাদের সমাজে যে সকল মুসলমান রয়েছে এরা কিছু অপরাধ করেছে(যেমন সুদ খাচ্ছে, ৫ ওয়াক্ত নামাজ ঠিক ভাবে আদায় করছে না) এবং কিছু ভাল কাজ করছে এ সকল মানুষ যদি আল্লার নিকট তৌবা/ক্ষমা চাওয়ার আগে মৃত্যু বরন করে তবে এ সকল মানুষ কি চিরকাল জাহান্নামে থাকবে? #আমি শুনেছি প্রতিটি মানুষ একদিন জান্নাতে যাবে যদি আল্লাহকে এক বলে স্বকার করে এবং তার রসুলকে (এখানে শুধু বিশ্বাস করাটায় কি জরুরী না বিশ্বাস টা বাস্তবায়ন প্রয়োজন)। জাহান্নাম খাটার পর জান্নাত পাবার কোন সিষ্টেম আছে কি? দয়াকরে বিষয়গুলো জানােল উপকৃত হতাম।

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। আল্লাহ তায়ালার একত্ববাদ ও রাসূলুল্লাহ সা. এর নবুওয়াত হৃদয় থেকে স্বীকার করলে সে একদিন জান্নাতে যাবে।হযরত উসামন রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, مَنْ مَاتَ وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ دَخَلَ الْجَنَّةَ যে ব্যাক্ত লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ( আল্লাহ ছাড়া মাবুদ নেই) জানা অবস্থায় মারা যাবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৪৫। অন্য আরেকটি হাদীসে রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, من قال لا إله إلا الله دخل الجنة যে ব্যাক্তি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ( আল্লাহ ছাড়া মাবুদ নেই) বলবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। মুসনাদু, আবু ইয়ালা, হাদীস নং ৩৯৪১। হাদীসটি সহীহ। এই হাদীসের ব্যাখ্যায় ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, قال أبو عيسى ووجه هذا الحديث عند أهل العلم أن أهل التوحيد سيدخلون الجنة وإن عذبوا بالنار بذنوبهم فإنهم لا يخلدون في النار আলেমদের নিকট এই হাদীসের ব্যাখ্যা হলো যে, একত্ববাদে বিশ্বাসী প্রতিটি মানুষ অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে। যদিও তাকে তার গোনাহের কারণে জাহান্নামে আযাব দেয়া হয় । কিন্তু সে চিরদিন জাহান্নামে থাকবে না। সুনানু তিরমিযী, হাদীস নং ২৬৩৮। তওবা না করলেও কবীরা গুনাহ মাফ হতে পারে তবে শিরক করলে তওবা ব্যতিত মাফ হবে না। আল্লাহ তায়ালা বলেন, إِنَّ اللَّهَ لاَ يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَن يَشَاء নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা শিরককে ক্ষমা করবেন না, এছাড়া যা চান যাকে চান ক্ষমা করে দিবেন। সূরা আয়াত ৩। সূরা তওবার ৪নং আয়াতে তওবা করলে মুশরিকদের ক্ষমা করার কথা বল হয়েছে। আর আপনি যে আয়াতে কথা বলেছেন, وَمَن يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُهُۥ جَهَنَّمُ خٰلِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُۥ وَأَعَدَّ لَهُۥ عَذَابًا عَظِيمًاআর যে ইচ্ছকৃত কোন মুমিনকে হত্যা করবে, তার প্রতিদান হচ্ছে জাহান্নাম, সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর আল্লাহ তার উপর ক্রুদ্ধ হবেন, তাকে লানত করবেন এবং তার জন্য বিশাল আযাব প্রস্তুত করে রাখবেন। ) এই আয়াত এবং এ জাতীয় অন্যান্য আয়াতের বক্তব্য মুশরিকদের ব্যাপারে, এ কথা বলেছেন আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.। তাফসীরে ইবনে কাসীর, সূরা নিসা আয়াত নং ৪, (এই আয়াতটির তাফসীর)। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।