আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 22

জানাযা-কবর যিয়ারত

প্রকাশকাল: 20 ফেব্রু. 2006

প্রশ্ন

আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। গায়েবানা জানাযার বিধান সম্পর্কে সংক্ষেপে জানতে চাই।

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। প্রশ্নটি করার জন্য আল্লাহ আপনাকে জাযা দান করুন। নিচে এ বিষয়ে সামান্য আলোচনা করা হল, আশা করি আপনি তাতে আপনার উত্তর খুঁজে পাবেন। ইনশাল্লাহ। বিষয়ে জানাযা শরীয়ত অনুমোদন করে কি না এব্যাপারে উলামায়ে কেরামের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। শাফেয়ী ও হাম্বলী মাযাহাবের উলামায়ে কেরামের মতে তা বৈধ। এব্যাপারে হাদীসে এসেছে عن أبي هريرة رضي الله عنه: أن النبي صلى الله عليه وسلم نعى النجاشي في اليوم الذي مات فيه، وخرج بهم إلى المصلى فصف بهم وكبر عليه أربعاً. অর্থঃ আবু হুরাইরা রাঃ থেকে বর্ণীত, নবী সা.নাজ্জশীর মৃত্যুর দিন তার মৃত্যুর সংবাদ সাহাবীদেরকে জানালেন এবং তাদেরকে নিয়ে ঈদগাহে বের হলেন এবং তাদেরকে নিয়ে কাতার সোজা করে তার জানাযার নামাজ আদায় করলেন। বুখারী,আস সহীহ, বাব,আর রজুলু ইয়ানআ ইলা আহলিল মায়্যিত, হাদীস নং ১২৪৫। অপরদিকে হানাফী এবং মালেকী মাযহাবের উলামায়ে কেরামের মতে সাধারনভাবে গায়েবানা জানাযা বৈধ নয়। রাসূল সা.বাদশা নাজাশীর গায়েবানা জানাযা করার ঘটনাটি একান্তই রাসূল সা. এর সাথে বিশেষায়িত। কেননা রাসূল সাঃ এর জীবদ্দশায় তাঁর অগণিত সাহাবী, আত্নীয়স্বজন ও আপনজন মৃত্যু বরণ করেছেন। অনেকেই তাঁর থেকে দূরে জিহাদের ময়দানে, বন্দি অবস্থায় বা দূরের কোন শহরে বা গ্রামে অবস্থান কালে ইন্তেকাল করেছেন। কেউ তাঁর কাছে থেকে ইন্তেকাল করলে তিনি সাধারনত তাঁর জানাযা পড়তেন। তিনি কখোন কারো মৃতদেহের অনুপস্থিতিতে তার জানাযা পড়াননি। শুধুমাত্র একটি ব্যতিক্রম ছিল আবিসিনিয়ার শাসক নাজাশীর ইন্তেকাল । সাহাবীগণ আবিসিনিয়ায় হিজরত করলে তাঁদের সংস্পর্শে এসে তিনি ইসলাম গ্রহন করেন । তাঁর দেশে আর কেউ ইসলাম গ্রহন করেনি। যেদিন নাজাশী ইন্তেকাল করেন। সেই দিনই রাসূলুল্লাহ সাঃ তাঁর ছাহাবীগণকে তাঁর ইন্তেকালের সংবাদ প্রদান করেন এবং গায়েবানা জানাযার নামাজ আদায় করেন। তবে মুহাক্কিক উলামায়ে কেরামের মতে ব্যক্তি যদি এমন দেশে মৃত্যু বরণ করে যেখানে তার জানাযার নামাজ পড়ার মত কেউ নেই সেক্ষেত্রে তার জানাযার নামাজ পড়া যাবে, অন্যথায় নয়। এ মত গ্রহন করেছেন শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহঃ ও তাঁর ছাত্র ইবনে কায়্যিম রহঃ। ইবনে কায়্যিম রহঃ তাঁর যাদুল মাআদ নামক প্রসিদ্ধ কিতাবে বলেন وقال شيخ الإسلام ابن تيمية: الصواب أن الغائب إن مات ببلدٍ لم يصلَّ عليه فيه، صلي عليه صلاة الغائب، كما صلى النبي صلى الله عليه وسلم على النجاشي لأنه مات بين الكفار ولم يُصلَّ عليه، وإن صلي عليه حيث مات لم يصلَّ عليه صلاة الغائب، لأن الفرض قد سقط بصلاة المسلمين عليه. অর্থঃ শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেছেন: সঠিক কথা হল, অনুপস্থিত ব্যক্তি যদি এমন দেশে মারা যায় যেখানে তার জানাযার নামাজ পড়ার মত কেউ নেই তাহলে তার জন্য গায়েবানা জানাযা পড়া হবে। যেমন রাসূল সা. নাজাশীর জন্য পড়েছিলেন। কেননা তিনি কাফেরদের মাঝে মৃত্যুবরণ করেছিলেন এবং তার জানাযার নামাজ পড়া হয়েছিলো না। আর যদি ব্যক্তি যেখানে মৃত্যুবরণ করে সেখানে তার জানাযার নামাজ পড়া হয় তাহলে তার জন্য গায়েবানা জানাযা পড়া হবে না। কেননা অন্যান্য মুসলমানরা তার জানাযার নামাজ পড়ার কারণে অন্যদের উপর থেকে ফরযিয়্যাত রহিত হয়ে গেছে। বাব, আস সালাত আলাল জানাইয, খন্ড ১,পৃষ্ঠা ৫০০ (শামিলা) আল্লাহ আমাদেরকে সবসময় সুন্নাত অনুযায়ী আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন।