এরপর একটা গুরুত্বপূর্ণ আদব, ফরয বা ওয়াজিব না হলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সুন্নাতে মুআক্কাদাহ পর্যায়ের। সেটা হল কম খাওয়া (পরিমিত খাওয়া)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দস্তরখানে খেয়েছেন, আমরাও দস্তরখানে খাই। কিন্তু দস্তরখানে খাওয়ার কোনো তাকীদ তিনি দেন নি। ‘দস্তরখানে খাও’, এমন নির্দেশ তিনি দেন নি। দস্তরখানে না খেলে আপত্তি তিনি কখনো করেন নি। তারপরেও আমরা দস্তরখানকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আলহামদু লিল্লাহ। তবে এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত হল কম খাওয়া বা পরিমিত খাওয়া।

অল্প ও পরিমিত খাওয়া সুন্নাত

(রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবিদের জীবনী থেকে)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে কম খেয়েছেন। জীবনে কখনো পেট পুরে খেতেন না। শুধুমাত্র বাড়িতে মেহমান এলে একটু খেতেন। হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেছেন, আমরা যদি কখনো দুইবেলা খেয়েছি, তবে অবশ্য একবেলা খেজুর খেয়েছি।1আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিবার তাঁর ইন্তিকাল পর্যন্ত এক নাগাড়ে তিনদিন পরিতৃপ্তির সঙ্গে আহার করতে পান নি। [মুসলিম, হাদীস ২৯৭৬]। عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ مَا شَبِعَ آلُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ طَعَامٍ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ حَتّٰى قُبِضَ. অর্থাৎ, দুইবেলা, তিনবেলা কিন্তু না, দুইবেলাতেই রুটি তরকারি খেয়েছেন, এমন কখনো হয় নি। একমাস, দুইমাস, তিনমাস চলে গিয়েছে, রান্না করেন নি। খেজুর আর পানি খেয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দরিদ্র ছিলেন না। মদীনায় যাওয়ার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন মদীনার শাসক, বাদশা। আল্লাহ নিজে তাঁকে যুদ্ধের যে সম্পদ আসত তার পাঁচভাগের একভাগ তুলে দিয়েছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর একদিনে হয়তো প্রচুর খাদ্য এসেছে, সোনা এসেছে, রূপা এসেছে। একদিন, দুইদিন, তিনদিন যা এসেছে, সব বণ্টন করে দিয়েছেন। তাঁর নিজের অংশের থেকে স্ত্রীদের কাছে খাবার দিয়ে বাকি সব বণ্টন করে দিয়েছেন। এরপর দেখা গেছে, স্ত্রীরাও দান-সদকা করেছেন, খাওয়ার কিছু নেই।

তাহলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দরিদ্র ছিলেন না।

তবে তিনি যেটা পেতেন মানুষকে দিয়ে দিতেন। দেওয়ার পরে ঘরে থাকত না। একদিন, দুইদিন, তিনদিন, একমাস, তিনমাস পর্যন্ত ঘরে খাবার থাকত না। উম্মু সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা এবং আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেছেন যে, ‘আমরা একচাঁদ দেখেছি, দুইচাঁদ দেখেছি, তিনচাঁদ দেখেছি, বাড়িতে চুলা জ্বালানোর মতো কোনো খাদ্য রান্না হয় নি। রুটিও বানানো হয় নি, গোশতও রান্না করা হয় নি। তরকারিও রান্না করা হয় নি। আগুন জ্বালানো হয় নি। আমরা কী করতাম? পানি এবং খেজুর খেয়ে থেকেছি। তবে আমাদের কিছু পড়শি আনসারি ছিলেন, তাঁরা মাঝেমাঝে আমাদের কিছু হাদিয়া দিতেন। হয়তো দুধ দিতেন, হয়তো একটু তরকারি দিতেন। এগুলো আমরা খেতাম। বুখারির হাদীস।2সহীহ বুখারি, হাদীস-২৪২৮, ৬০৯৩, ৬০৯৪

  عن عروة عن عائشة رضي الله عنها أنها قالت لعروة :ابن أختي إن كنا لننظر إلى الهلال ثم الهلال ثلاثة أهلة في شهرين وما أوقدت في أبيات رسول الله صلى الله عليه و سلم نار . فقلت يا خالة ما كان يعيشكم ؟ قالت الأسودان التمر والماء إلا أنه قد كان لرسول الله صلى الله عليه و سلم جيران من الأنصار كانت لهم منائح وكانوا يمنحون رسول الله صلى الله عليه و سلم من ألبانهم فيسقينا

আবার পড়শি আনসারি সাহাবিদের থেকে যে হাদিয়া আসত সেটাও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বণ্টন করে দিতেন অনেক সময়। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, বুখারির হাদীস। আবু হুরাইরা সুফফার অধিবাসী ছিলেন। সাহাবিরা সবাই ফকীর ছিলেন না। মুহাজির সাহাবিরা ব্যবসা-বাণিজ্য করতেন, আনসার সাহাবিরা কৃষি কাজ করতেন, সচ্ছল ছিলেন। কিছু সাহাবি ইলমের জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মসজিদে পড়ে থাকতেন। তাদেরকে সুফফা বলা হত। তাদের একজন আবু হুরাইরা। এরা কাজকাম টুকটাক পাইলে করতেন, শ্রমিকের কাজ করতেন। বাকি সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মসজিদে পড়ে থাকতেন। ইলম শিখতেন।

আবু হুরাইরা

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, ‘একদিন এত ক্ষুধা লেগেছে, পেটে পাথর চাপা দিয়েও জান বাঁচে না। মানুষ যে পথে যায়, সেখানে একটু বসলাম। আবু বাকর গেলেন। আবু বাকরকে একটা কুরআনের আয়াত তুলে বললাম যে, এই আয়াতের ব্যাপারে ব্যাখ্যাটা কী হবে? আবু হুরাইরা বলেছেন, আসলে তাফসীর শোনা আমার উদ্দেশ্য না। আমি ভাবলাম, আমি তাকে দাঁড় করিয়েছি, হয়তো আমার এই তাফসীর শোনানোর জন্য বাসায় নিয়ে গিয়ে আমাকে একটু খাওয়াবেন। বড় আশা করে মাসআলাটা শুনলাম, আবু বাকর কথা বলে চলে গেলেন। আমার যে ক্ষুধা, এটা তিনি খেয়াল করতে পারেন নি।

খানিক পরে দেখি, উমার যাচ্ছেন, আমি বললাম যে, ভাই, এই মাসআলাটা কী হবে? আমার নিয়ত আসলে মাসআলা শোনা না। যদি আমার চেহারা দেখে বোঝেন যে, আমি ক্ষুধার্থ, একটু কিছু খাবার আমাকে দেন। কিন্তু উমারও কথা বলে চলে গেলেন, তিনি আমাকে দাওয়াত দিলেন না, ঘরেও নিলেন না। খানিক পরে দেখি, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পথ দিয়ে আসছেন। উনি আমার চেহারা দেখে বুঝেছেন। তো উনি মুচকি হাসলেন। হেসে বললেন, ইয়া আবা হির, এসো, আমার সাথে এসো। দেখি, ঘরে কিছু আছে কি না। ঘরে গিয়ে স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, ঘরে কী আছে? স্ত্রী বললেন, পড়শি এক আনসারি একটা বাটিতে দুধ দিয়েছেন, সেই দুধটুকু আছে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,

আবু হুরাইরা, যাও, সুফফার সবাইকে ডেকে আনো। আবু হুরাইরা বলছেন, আমি চিন্তা করলাম যে, একবাটি দুধ আমার পেটের কোণায় যাবে, এত ক্ষুধা লেগেছে। এই সত্তর-আশিজন লোক যদি আমি ডেকে নিয়ে আসি, আমার তো কিছুই জোটবে না! আমি ঘরে আগে এসেছি, আমারই তো হক বেশি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই সবাইকে ডাকতে বললেন, আমার মনে চাচ্ছিল না যে, দুধটুকু না খেয়ে ডাকতে যাই। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে ফেলেছেন। পেটের ক্ষুধায় যন্ত্রণা নিয়ে আমি তাদের সবাইকে ডেকে আনলাম।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাটিটা আমার হাতে দিলেন। দিয়ে বললেন, একজন একজন করে খাওয়াও। আমার তো মন পড়ে আছে দুধের ভেতরে। তারপরেও আমি একজনকে দিলাম। সে খেল। খেয়ে বাটি আমার কাছে ফেরত দিল। দুধ কিন্তু যা ছিল তাই আছে। এ রকম এক এক করে সবাই খেল। কিন্তু দুধ আর কমে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুচকি মুচকি হাসছেন। শেষ হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ডাকছেন, আবু হুরাইরা, কী খবর! এখন তো বাকি আছে তুমি আর আমি। বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ, জ্বি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এবার তুমি খাও। খেলাম। বললেন, আরেকটু খাও। খেলাম। বললেন, আরেকটু খাও। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আর এক ফোঁটারও জায়গা নেই।3সহীহ বুখারি, হাদীস-৫৩৭৫।

  عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَصَابَنِيْ جَهْدٌ شَدِيْدٌ فَلَقِيْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ فَاسْتَقْرَأْتُه آيَةً مِنْ كِتَابِ اللهِ فَدَخَلَ دَارَه وَفَتَحَهَا عَلَيَّ فَمَشَيْتُ غَيْرَ بَعِيْدٍ فَخَرَرْتُ لِوَجْهِيْ مِنَ الْجَهْدِ وَالْجُوْعِ فَإِذَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَائِمٌ عَلٰى رَأْسِيْ فَقَالَ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ فَقُلْتُ لَبَّيْكَ رَسُوْلَ اللهِ وَسَعْدَيْكَ فَأَخَذَ بِيَدِيْ فَأَقَامَنِيْ وَعَرَفَ الَّذِيْ بِيْ فَانْطَلَقَ بِيْ إِلٰى رَحْلِه فَأَمَرَ لِيْ بِعُسٍّ مِنْ لَبَنٍ فَشَرِبْتُ مِنْه ثُمَّ قَالَ عُدْ يَا أَبَا هِرٍّ فَعُدْتُ فَشَرِبْتُ ثُمَّ قَالَ عُدْ فَعُدْتُ فَشَرِبْتُ حَتّٰى اسْتَوى بَطْنِيْ فَصَارَ كَالْقِدْحِ

আবু হুরাইরা

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, সাহাবিরা দুই ধরনের সহযোগিতা করতেন। একটা হল সদাকা, যাকাত অথবা দান। এটা যখন মসজিদে আসত, কখনোই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোনো দান বা সদাকা নিতেন না। এটা সব ছুফফার সাহাবিরা পেতেন। আরেকটা হল, হাদিয়া। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্য হাদিয়া। সেই হাদিয়া আসলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে কখনোই একা হাদিয়া খেতেন না। ওই সুফফার সাহাবিদের ডেকে সবাইকে খাওয়াইয়ে যা থাকত তিনি খেতেন।

তাহলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দরিদ্র ছিলেন না। আমাদের দেশে যে গল্প আছে, তিনি পরের বাড়ি গিয়ে কাজ করেছেন, টাকা এনেছেন, ইয়াহুদি মেরেছে, ফাতিমা কান্নাকাটি করেছেন- এগুলো সব জাল-জালিয়াতি গল্প, মিথ্যা। তারা না খেয়ে থেকেছেন ইচ্ছাকৃতভাবে, নিজেরটা দান করে দিয়ে। তারা অল্প খাওয়াকেই ভালো মনে করেছেন। এটা হল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর একটা সুন্নাত। বোঝেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

দস্তরখানে খেয়েছেন, দস্তরখান ছাড়াও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবিরা হাঁটতে, চলতে, দাঁড়িয়েও খেয়েছেন। যখন খেজুরের মৌসুম হত তখন কয়েকটা খেজুরের কাঁদি মসজিদে দেওয়া থাকত। ঝুলানো থাকত। সাহাবিরা যেতেন, খেজুরগুলো খেতে খেতে চলে যেতেন। ছিড়ে নিয়ে কয়েকটা খেয়ে চলে যেতেন। কিন্তু কম খাওয়া, সীমিত খাওয়া, এটা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর একটি স্থায়ী দায়েমি (সার্বক্ষণিক) সুন্নাত।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বদা কম খেয়েছেন।   দ্বিতীয়ত, তিনি কম খেতে উৎসাহ দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: مَا مَلَأَ ابْنُ آدَمَ وِعَاءً شَرًّا مِنْ بَطْنٍ. ‘মানুষ নিজের পেটের চেয়ে নিকৃষ্ট থলে কোনোদিন ভরেনি।’4মুসনাদ আহমাদ, হাদীস-১৭১৮৬; সুনান তিরমিযি, হাদীস-২৩৮০। ইমাম তিরমিযি হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন। আমরা যত থলে ভরি, সবচেয়ে বাজে থলে হল পেট। এটা যত ভরেন, তত খারাপ।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: بِحَسْبِ ابْنِ آدَمَ أُكُلَاتٌ يُقِمْنَ صُلْبَهُ فَإِنْ كَانَ لَا مَحَالَةَ فَثُلُثٌ لِطَعَامِهِ وَثُلُثٌ لِشَرَابِهِ وَثُلُثٌ لِنَفَسِهِ. যতটুকু খেলে তোমার পুষ্টিশক্তি নিশ্চিত হয়, ততটুকু খাও। খাওয়ার উদ্দেশ্য পুষ্টি। খাওয়ার উদ্দেশ্য সুস্থতা। যদি কেউ বেশি খেতেই চাও, যদি কেউ বেশি খেতে চাও, তাহলে পেটটাকে তিন ভাগ করো। এক ভাগ খাদ্যের জন্যে, এক ভাগ পানীয়ের জন্যে, এক ভাগ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য রাখো।5মুসনাদ আহমাদ, হাদীস-১৭১৮৬; সুনান তিরমিযি, হাদীস-২৩৮০। ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন।

আমরা অনেক সময় মনে করি,

তিনভাগের একভাগ খাওয়াটা সুন্নাত। না, এক-তৃতীয়াংশেরও কম খাওয়া সুন্নাত। বেশি খেতে চাইলে তিনভাগের একভাগ হল সর্বশেষ লিমিট। এজন্য কম খাওয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিয়মিত সুন্নাত, দায়েমি সুন্নাত। কম খাওয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  উৎসাহ দিয়েছেন।   তৃতীয়ত হল, বেশি খাওয়া দেখলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিরক্ত হতেন। খুব বিরক্ত হতেন। তিনি বলতেন: اَلمُؤْمِنُ يَأْكُلُ فِيْ مِعًى وَاحِدٍ وَالكَافِرُ يَأْكُلُ فِيْ سَبْعَةِ أَمْعَاءٍ. মুমিন অল্প খায়, এক পেটে খায়। আর কাফির সাত পেটে ভরে খায়।6সহীহ বুখারি, হাদীস-৫৩৯৭।

কারণ, কাফিরের জন্য খাদ্য হল ‘খাও-দাও ফুর্তি করো, দুনিয়াটা বেজায় বড়।’ আর মুমিনের জন্য খাদ্য হল, আল্লাহর নিআমত, সুস্থতা, শক্তি ও শরীর টিকিয়ে রাখার উপকরণ। আমি খাব, ভালো খাব, সুস্বাদু খাব। কিন্তু খাওয়াটাই আমার উদ্দেশ্য, যত পারো তত খাও, খাও, খাও, খাও, ভোগ করো, এই যে পাশবিক চেতনা, এটা মুমিনের জীবনে থাকার কথা না।

বই : মিম্বারের আহ্বান-১

ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ।