কুনূতের জন্য হস্তদ্বয় উত্তোলন
আমরা দেখেছি যে, দু‘আর সময় দুহাত উঠানো উত্তম। এজন্য অনেক ফকীহ কুনূতের মুনাজাতের সময়ও দুহাত তুলে দু‘আ করার বিধান দিয়েছেন। পক্ষান্তরে কোনো কোনো ফকীহ এ সময় হাত না তুলে হাত বাঁধা অবস্থায় অথবা দুপাশে ঝুলিয়ে রেখে কুনূত পাঠের বিধান দিয়েছেন। যাঁরা দুহাত তুলে মুনাজাত করে কুনূত পাঠ করার বিধান দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন হানাফী মাযহাবের অন্যতম ইমাম কাযী আবূ ইউসূফ। এছাড়া শাফিয়ী, মালিকী ও হাম্বলী মাযহাবের অনুসারীগণও এভাবে দুহাত তুলে মুনাজাতের মাধ্যমে কুনূত পাঠ করেন। তাঁদের দলিলগুলো নিম্নরুপ:
(১) বিভিন্ন হাদীসে দু‘আর সময় হাত উঠানোর ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে। এগুলোর আলোকে কুনূতের দু‘আর সময়েও হাত উঠানো উত্তম।
(২) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযের ভিতরে দু‘আ করার সময়েও কখনো কখনো দুহাত উঠাতেন বলে বর্ণিত হয়েছে। কুসূফ বা সূর্যগ্রহণের নামাযে তিনি নামাযের মধ্যে হাত তুলে দু‘আ করেছেন বলে বর্ণিত হয়েছে। এছাড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এবং তাঁর ইন্তিকালের পরে উমার রাযিআল্লাহু আনহু , আলী রাযিআল্লাহু আনহু প্রমুখ সাহাবী কুনূতে নাযিলার সময় দুহাত তুলে দু‘আ করেছেন বলে বর্ণিত হয়েছে।
(৩) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর-এর কুনূতের সময় হাত উঠিয়েছেন বলে বর্ণিত না হলেও, আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ, আবূ হুরাইরা প্রমুখ সাহাবী রাযিআল্লাহু আনহুম বিতর এর কুনূতে দুহাত তুলে মুনাজাত করেছেন বলে বর্ণিত হয়েছে।
পক্ষান্তরে ইমাম আবূ হানীফা রাহিমাহুল্লাহ বিতর-এর কুনূত পাঠের সময় হাত না তুলে স্বাভাবিকভাবে হাত বাঁধা অবস্থায় কুনূত পাঠ করতে বিধান দিয়েছেন। যেহেতু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর এর কুনূতের সময় হাত তুলে দু‘আ করেছেন বলে বর্ণিত হয়নি, সেহেতু হাত তুলে দু‘আ করার ফযীলতের হাদীস দিয়ে বা কুনূতে নাযিলার উপর কিয়াস করে বিতর এর কুনূতে হাত উঠানোর বিধান প্রদান করেননি তিনি। তিনি সুন্নাতের হুবহু অনুকরণ করতে ভালবাসতেন।