As-Sunnah Trust

সাম্প্রতিক সংবাদ

প্রশ্ন-৩৮: অনেক লোকে ঘুষ খায়। এই ঘুষের টাকা দিয়ে আবার হজ্জ করতে যায়। এক্ষেত্রে তার এই হজ্জটা হবে কি না?

Question-38

প্রশ্ন-৩৮: অনেক লোকে ঘুষ খায়। এই ঘুষের টাকা দিয়ে আবার হজ্জ করতে যায়। এক্ষেত্রে তার এই হজ্জটা হবে কি না?
উত্তর: এখানে প্রথম বিষয় হল, হারাম উপার্জন করার চেয়ে বড় হারাম আর নেই। অর্থাৎ শুয়োরের গোশত খাওয়া, মদ খাওয়া, ব্যভিচার করা ইত্যাদির চেয়ে অনেক বেশি কঠিন গুনাহ হল হারাম উপার্জন করা। কারণ এই সকল হারামের সাথেই মানুষের হক জড়িত থাকে।

ঘুষ মানে কী? একজন থেকে অবৈধভাবে কিছু টাকা নিয়েছি। এটা আমার পাওনা ছিল না। তার ওপর যুলুম করেছি, অবৈধভাবে অর্জন করেছি। সকল অবৈধ উপার্জন কোনো না কোনভাবে মানুষের হক নষ্ট করে। আর এর চেয়ে বড় গুনাহ নেই। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুদ যে খায় সুদ যে দেয় এবং সুদের মধ্যে দালালি করে সবাইকে অভিশাপ দিয়েছেন। এটা হল প্রথম পাপ।

দ্বিতীয় হল, হারাম উপার্জনের মাধ্যমে যে ইবাদত করা হয় আল্লাহ সেটা কবুল করেন না। কবুল করেন না দুটো অর্থ আছে। একটা হল যেটা দৈহিক ইবাদত। হারাম টাকা খেয়েছি, হারাম টাকার কাপড় পরেছি;- সালাত আদায় করেছি। সালাতের ফরয আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু এর সাওয়াব, কবুলিয়াত, দু‘আ কবুল হবে না।
আর হজ্জ করতে গিয়েছি… এটা হাদীস শরীফে এসেছে, হারাম টাকা; হজের জন্য টাকা দরকার, হারাম টাকায় যখন কেউ হজ্জ করতে যায়, ‘লাব্বাইকা’ বলে, আল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয়, না, তোমার এই লাব্বাইকা গ্রহণ করা হল না।

আর সম্পদ,

টাকার ইবাদত যেটা, যেমন হজ্জের ফরয, যাকাত, দান-সাদাকা, মসজিদের বানানো- এগুলো যখন কেউ হারাম টাকায় করেন, এটাতে ঈমান নষ্ট হওয়ার ভয় থাকে। কারণ আমরা তো টাকা আল্লাহকে দিচ্ছি। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, বান্দা তুমি আমাকে একটা টাকা দিলে দাও। কিন্তু পাক টাকা দিও। নাপাক টাকা দিয়ো না। আর আমি বলছি, না, আমি তোমাকে নাপাক টাকা-ই দেব। তুমি নিতে বাধ্য। এটা আমাদের ঈমানের সাথে সাংঘর্ষিক।

তবে কারো যদি হালাল-হারাম মিশ্রিত টাকা থাকে; তিনি হজ্জ করে এসেছেন, আশা করা যায়, ফরয আদায় হয়ে যাবে। তবে তাতে হজ্জের সাওয়াব, কবুলিয়াত- এগুলোর কোনোটাই তিনি পাবেন না। [কোনো ব্যক্তি চাকুরিরত অবস্থায় কোনো একদিন ঘুষের টাকা খেয়েছেন অথবা কোনো একটা সময় সুদের টাকা নিয়েছেন। তিনি এখন জেনেছেন। সেই টাকাটা তার কাছে আছে। কী করতে পারেন এক্ষেত্রে? – উপস্থাপক]

এক্ষেত্রে তাওবার অংশ হল…। তাওবার দরজা বান্দার জন্য খোলা। তবে অন্যান্য পাপ থেকে, যেমন ব্যভিচার, মদ, নামায আদায় করেননি, রোযা করেননি- এগুলোর তাওবা যত সহজ, হারাম উপার্জনের তাওবা এর চেয়ে একটু কঠিন। তাওবা অর্থ কী? তাওবা অর্থ অনুতপ্ত হওয়া। আর কখনো করব না। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া। এবং যে হারাম টাকা আছে সেটার দায় থাকে মুক্ত হওয়া। তিনি যদি পাওনাদার চিনতে পারেন তাকে ফিরিয়ে দেবেন।

যদি চিনতে না পারেন তাহলে তিনি হিসাব করবেন, বিশলক্ষ, পঞ্চাশলক্ষ, একলক্ষ, কোটি টাকার সম্পদ এর ভেতর ১০ লাখ ৫ লাখ ঘুষের টাকা বা সুদের টাকা আছে। এই টাকাটা আলাদা করে তিনি যদি মালিক না পান তাহলে মালিকদের উদ্দেশ্যে কোনো ভালো কাজে ব্যয় করবেন, যে আল্লাহ সাওয়াবটা মালিকদের দিয়ো, আমাকে দয়া করে মাফ করে দিয়ো। এর পাশাপাশি তাওবা করতে থাকবে। এটা বান্দার হক। বান্দার হক আদায় না হওয়া পর্যন্ত মাফ পাওয়ার নিশ্চয়তা নেই।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print

Leave a Reply

Your email address will not be published.