আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

সাম্প্রতিক সংবাদ

জাদুকরের পরিচয়

জাদুকরের পরিচয়

৬. ৬. জাদুকরের পরিচয়
মুসলিম সমাজে জ্বিন বা জাদুর চিকিৎসাকারী ব্যক্তি সর্বদা কিছু কুরআনের আয়াত ও দু‘আ-দরুদ পাঠ করেন। এর পাশাপাশি অনেকেই শয়তানের ইবাদত-মূলক কিছু কর্ম করেন। সাধারণ মুসলিম বুঝতে না পেরে একে কুরআন-ভিত্তিক চিকিৎসা বলে মনে করেন। এজন্য এখানে জাদুর কিছু আলামত ও পরিচয় উল্লেখ করছি:

১. রোগীর সমস্যাগুলো তার কাছ থেকে না শুনে নিজে থেকেই বলা বা রোগীর গোপন বা গাইবী কথা বলা।

২. রোগীর নাম ও মায়ের নাম জিজ্ঞাসা করা

৩. রোগীর সাথে সম্পর্কিত কোনো বস্তু গ্রহণ করা। যেমন কাপড়, টুপি, রুমাল ইত্যাদি।

৪. যবাই করার জন্য কোনো প্রাণী বা পাখী চাওয়া। এগুলো সাধারণত আল্লাহর নাম না নিয়ে যবাই করা হয়। অথবা আল্লাহর নামের সাথে কবিরাজের সাথে সংশ্লিষ্ট জিনের ভক্তি প্রকাশক কথা বলা হয় এবং তাকে খুশির উদ্দেশ্যেই যবাই করা হয়। এর রক্ত অসুস্থ ব্যক্তিকে বা অসুস্থতার স্থানে মাখানো হয় বা কোনো বিরান স্থানে নিক্ষেপ করা হয়। উল্লেখ্য যে, সাদাকা বা গরীবদের মধ্যে দানের উদ্দেশ্যে আল্লাহর নামে গরু-ছাগল ইত্যাদি যবাই করা সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়।

৫. অস্পষ্ট, রহস্যময় বা অবোধ্য কথা দিয়ে ঝাড়ফুঁক করা। অনেক সময় কুরআনের কিছু অংশ সুস্পষ্টভাবে পাঠ করে এরপর বিড়বিড় করে এসকল রহস্যময় তন্ত্রমন্ত্র পাঠ করা হয়।

৬. চতুর্ভুজ নকশা, বিভিন্ন সংখ্যা অথবা অস্পষ্ট-রহস্যময় কোনো কিছু লিখে তাবিয দেওয়া।

৭. ছিন্ন ছিন্ন অক্ষর লিখে তাবিয বা নকশা বানিয়ে রোগীকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া বা কোনো পাথরে এরূপ নকশা বা তাবিয লিখে তা ধুয়ে পান করতে বলা।

৮. রোগীকে একটি নির্দিষ্ট সময়ে অন্ধকার ঘরে একাকী রাখা অথবা নির্ধারিত কয়েকদিন পানি স্পর্শ করতে নিষেধ করা।

৯. রোগীকে কোনো বস্তু পুঁতে রাখার নির্দেশ দেওয়া।

১০. পাতা বা কোনো দ্রব্য জ্বালিয়ে রোগীকে তার ধোঁয়া গ্রহণ করতে বলা। যাদের মধ্যে এ জাতীয় কোনো আলামত দেখবেন তাদের কাছে গমন থেকে বিরত থাকবেন। জ্বিন-সাধক জাদুকরগণ একবার কাউকে পেলে তাদের জ্বিনদের দিয়ে স্বপ্ন, মানসিক অস্থিরতা ইত্যাদির মাধ্যমে সর্বদা তাকে বশে রাখতে চেষ্টা করেন। এজন্য এদের সংশ্রব থেকে দূরে থাকতে হবে।

শয়তানের মূল কর্ম মানুষদেরকে শিরক ও পাপের মাধ্যমে জাহান্নামী করা। উপরে ইবনু মাস‘ঊদ রাদিআল্লাহু আনহু-এর হাদীসে আমরা দেখেছি যে, শয়তান মানুষের শরীরের মধ্যে অসুস্থতার অনুভূতি তৈরি করে। এরপর শিরকযুক্ত ঝাড়ফুঁক বা তদবীরের কারণে সে তার কর্ম বন্ধ করে।

এভাবে সে মানুষকে শিরকে লিপ্ত করে। এজন্য জাদু-টোনা কাটাতে বা যে কোনো অসুস্থতা বা সমস্যার ক্ষেত্রে জাদুকর বা জ্বিনসাধক কবিরাজের কাছে যাওয়ার অর্থ শয়তানের উদ্দেশ্য পূরণ করা এবং স্থায়ীভাবে শিরকের সাথে নিজেকে সংযুক্ত করা। এ সকল মানুষদের কাছে সামান্য উপশম পেলেও সাধারণত কখনোই স্থায়ী আরোগ্য লাভ হয় না।

শুধুই শিরকে নিপতিত হয়ে ঈমান হারাতে হয়। বারবার অসুস্থতা ফিরে আসে এবং বারবার শিরকের মহাপাপে লিপ্ত হতে হয়। আর মুমিনের ঈমানের দাবি হলো চিরস্থায়ী সুস্থতার নিশ্চয়তা পেলেও ঈমানের বিনিময়ে তা গ্রহণ করতে তিনি কখনোই রাযী হবেন না।অপরদিকে সুন্নাতসম্মত দু‘আ ও ঝাড়ফুঁকের চিকিৎসার মাধ্যমে মুমিন আল্লাহর সাথে স্থায়ী সম্পর্ক স্থাপন করেন।

নিয়মিত দু‘আর মাধ্যমে অফুরন্ত সাওয়াব এবং আল্লাহর বেলায়াত অর্জন করেন। পাশাপাশি কমবেশি সম্পূর্ণ বা আংশিক জাগতিক সুস্থতাও তিনি অর্জন করেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
আপনার ইমেইল
Print

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.