১. ৭. ৫. সালাতুল ইস্তিখারা
ইস্তিখারার অর্থ কারো কাছে সঠিক বিষয় বেছে দেওয়ার প্রার্থনা করা। যে ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা একাধিক বিষয়ের মধ্য থেকে একটি বেছে নেয়ার অবকাশ আছে সেখানে আল্লাহ্‌র সাথে পরামর্শ না করে কোনো কিছু বেছে নেয়া বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা মুমিনের উচিত নয়। ছোট, বড়, গুরুত্বপূর্ণ বা গুরুত্বহীন সকল বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে আল্লাহ্‌র সাথে পরামর্শ করা, অর্থাৎ তাঁর মহান দরবারে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের তাওফিক চাওয়া মুমিনের অন্যতম দায়িত্ব।
ইস্তিখারার দু‘আ

اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَسْتَخِيْرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيْمِ فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ وَأَنْتَ عَلاَّمُ الْغُيُوْبِ اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ [يسمي حاجته] خَيْرٌ لِيْ فِيْ دِينِيْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ فَاقْدِرْهُ لِيْ وَيَسِّرْهُ لِيْ ثُمَّ بَارِكْ لِيْ فِيْهِ. [اللهم] وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِيْ فِيْ دِينِيْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ فَاصْرِفْهُ عَنِّيْ وَاصْرِفْنِي عَنْهُ وَاقْدِرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ ثُمَّ أَرْضِنِيْ بِهِ

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা, ইন্নী আসতাখীরুকা বি‘ইলমিকা, ওয়া আসতাকদিরুকা বিক্বুদরাতিকা, ওয়া আসআলুকা মিন ফাদলিকাল ‘আযীম। ফাইন্নাকা তাকদিরু, ওয়ালা- আকদিরু, ওয়া তা‘অ্লামু ওয়ালা- আ‘অ্লামু, ওয়া আন্তা ‘আল্লা-মুল গুইঊব। আল্লা-হুম্মা, ইন কুনতা তা‘অ্লামু আন্না হা-যাল আমরা (উদ্দিষ্ট বিষয়ের নাম বলবে) খাইরুল লী ফী দীনী ওয়া মা‘আ-শী ওয়া ‘আ-ক্বিবাতি আমরী ফাক্বদুরহু লী, ওয়া ইয়াসসিরহু লী, সুম্মা বা-রিক লী ফীহি। আল্লা-হুম্মা, ওয়া ইন কুনতা তা‘অ্লামু আন্না হা-যাল আমরা শাররুল লী ফী দীনী ওয়া মা‘আ-শী ওয়া ‘আ-কিবাতি আমরী ফাছরিফহু ‘আন্নী, ওয়াছরিফনী ‘আনহু ওয়াক দুর লিয়াল খাইরা হাইসু কা-না, সুম্মা আরদ্বিনী বিহী।

অর্থ: “হে আল্লাহ্‌, আমি আপনার নিকট কল্যাণ প্রার্থনা করি আপনার জ্ঞান থেকে, আমি আপনার নিকট শক্তি প্রার্থনা করি আপনার ক্ষমতা থেকে এবং আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করি আপনার মহান অনুগ্রহ। কারণ আপনি ক্ষমতাবান আর আমি অক্ষম, আপনি জানেন আর আমি জানি না, আর আপনি সকল গাইবের মহাজ্ঞানী। হে আল্লাহ্‌, যদি আপনি জানেন যে, এ কাজটি (নির্দিষ্ট বিষয়টির উল্লেখ বা স্মরণ করবে) কল্যাণকর আমার জন্য, আমার ধর্ম, আমার পার্থিব জীবন এবং আমার ভবিষ্যৎ পরিণতিতে, তবে নির্ধারণ করুন একে আমার জন্য, সহজ করুন একে আমার জন্য এবং বরকত প্রদান করুন এতে আমার জন্য।

হে আল্লাহ্‌, আর আপনি যদি জানেন যে, এ কর্মটি অকল্যাণকর আমার জন্য, আমার ধর্ম, জাগতিক জীবন ও আমার ভবিষ্যৎ পরিণতিতে তবে সরিয়ে নিন একে আমার নিকট থেকে, সরিয়ে নিন আমাকে এর নিকট থেকে, নির্ধারণ করুন আমার জন্য কল্যাণকে যেখানেই তা থাকুক এবং সন্তুষ্ট করে দিন আমাকে তার মধ্যে।” 1সহীহ বুখারী ১/৩৯৩, হাদীস নং ১১০৯।

জাবির ইবনুু আব্দুল্লাহ রাদিআল্লাহু আনহু বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সকল বিষয়ে ‘ইস্তিখারা’ করতে শিক্ষা দিতেন, যেমন গুরুত্বের সাথে তিনি আমাদেরকে কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেন: যখন তোমাদের কেউ কোনো কাজের ব্যাপারে মনের মধ্যে চিন্তা করবে তখন (সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে) নফল দু-রাক‘আত সালাত আদায় করবে অতঃপর উপরের দু‘আটি বলবে। 2সহীহ বুখারী (২৬-আবওয়াবুত তাতাওউ, ১-তাতাওউ মাসনা) ১/৩৯১ (ভা. ১/১৫৫)।