আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

সাম্প্রতিক সংবাদ

হিজরী নববর্ষ ও আশূরা (২)

ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর অধ্যাপক, আল-হাদীস বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া চেয়ারম্যান, আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট 

সম্মানীত পাঠক মুহররম মাস এবং আশূরা সমাগত। হিজরী সন, মহররম মাস, আশুরা ইত্যাদী আমাদের ধর্মীয় জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এনিয়ে আমাদের দুই পর্বের বিশেষ আলোচনার আজ শেষ অংশ।

রাসূলুল্লাহ সা.-এর আগমনের সময় সমগ্র বিশ্বের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ছিল মূলত বংশতান্ত্রিক। রাষ্ট্রের মালিক রাজা। তার অন্যান্য সম্পদের মতই রাষ্ট্রের মালিকানাও লাভ করবে তার বংশধরেরা। রাজ্যের সকল সম্পদ-এর মত জনগণও রাজার মালিকানাধীন। রাজা নির্বাচন বা রাজ্যপরিচালনা বিষয়ে তাদের কোনো মতামত প্রকাশের সুযোগ বা অধিকার নেই। রাসূলুল্লাহ সা. সর্বপ্রথম একটি আধুনিক জনগণতান্ত্রিক পরামর্শ-ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। এ ব্যবস্থার দুটি বিশেষ দিক ছিল:

(১) রাজা ও প্রজার সম্পর্ক মালিক ও অধীনস্থের নয়, বরং মালিক ও ম্যানেজারের। তবে মালিক রাজা নন। রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। রাজা তাদের খলীফা বা প্রতিনিধি বা ম্যানেজার হিসেবে তা পরিচালনা করবেন। জনগণই তাকে মনোনিত করবেন এবং জনগণ তাকে সংশোধন বা অপসারন করবেন। (২) রাষ্ট্রপ্রধান নির্ধারণ করা একটি জাগতিক কর্ম এবং তা জনগণের কর্ম। জনগণের পরামর্শের ভিত্তিতে তা সম্পন্ন হবে। পরামর্শের ধরন নির্ধারিত নয়। যুগ, দেশ ও জাতির অবস্থা অনুসারে তা পরিবর্তিত হতে পারে।

এ ব্যবস্থার আওতায় রাসূলুল্লাহ সা. কাউকে মনোনিত না করে উম্মাতকে সরাসরি নির্বাচনের মুখোমুখি রেখে যান। আবূ বকর (রা) নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শক্রমে উমারকে (রা) পরবর্তী শাসক হিসেবে মনোনয়ন দিয়ে যান। উমার (রা) ৬ জনের একটি কমিটিকে মনোনয়ন দেন, যারা জনগণের পরামর্শের ভিত্তিতে তাঁদের মধ্য থেকে উসমানকে (রা) মনোনয়ন দেন। উসমান (রা)-এর শাহাদতের পরে মদীনার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ পরামর্শের মাধ্যমে আলী (রা)-কে শাসক মনোনিত করেন। আলী (রা) তাঁর ইন্তেকালের পূর্বে তাঁর পুত্র হাসান (রা)-কে পরবর্তী শাসক হিসেবে মনোনয়ন দেন।

৪০ হিজরীর রামাদান মাসে আলীর (রা) ওফাতের পর হাসান (রা) খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। গৃহযুদ্ধ বন্ধ করার জন্য ৬ মাস পরে তিনি মুআবিয়ার (রা) পক্ষে খিলাফতের দায়িত্ব পরিত্যাগ করেন এবং মুআবিয়া (রা) সর্বসম্মতভাবে খলীফা হন। ২০ বৎসর সুষ্ঠ রাষ্ট্রপরিচালনার পর ৬০ হিজরী সালে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর পূর্বে রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দের পরামর্শক্রমে তিনি তাঁর পুত্র ইয়াযিদকে পরবর্তী শাসক হিসেবে মনোনয়ন দেন। তাঁর মৃত্যুর পরে ইয়াযিদ খিলাফতের দায়িত্ব দাবি করলে তৎকালীন মুসলিম রাষ্ট্রের অধিকাংশ এলাকার মানুষ তা মেনে নেন। পক্ষান্তরে মদীনার অনেক মানুষ, ইরাকের মানুষ এবং বিশেষত কুফার মানুষেরা তা মানতে অস্বীকার করেন।

কুফার মানুষেরা আলীর (রা)

দ্বিতীয় পুত্র ইমাম হুসাইনকে (রা) খলীফা হিসেবে গ্রহণ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময়ে ইমাম হুসাইন (রা) মদীনায় অবস্থান করছিলেন। এরপর তিনি মদীনা থেকে মক্কায় আগমন করেন। কুফার লক্ষাধিক মানুষ তাঁকে খলীফা হিসাবে বাইয়াত করে পত্র প্রেরণ করে। তারা দাবি করে যে, সুন্নাত পুনরুজ্জীবিত করতে ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে অবিলম্বে তাঁর দায়িত্ব গ্রহণ করা প্রয়োজন। মদীনা ও মক্কায় অবস্থানরত সাহাবীগণ ও ইমাম হুসাইনের প্রিয়জনেরা তাকে কুফায় যেতে নিষেধ করেন। তাঁরা আশঙ্কা করছিলেন যে, ইয়াযিদের পক্ষ থেকে বাধা আসলে ইরাকবাসীরা হুসাইনের পিছন থেকে সরে যাবে। সবশেষে হুসাইন (রা) কুফা গমনের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি তাঁর পরিবারের ১৯ জন সদস্যসহ প্রায় ৫০ জন সঙ্গী নিয়ে কুফায় রওয়ানা হন।

ইয়াযিদের নিকট এ খবর পৌঁছালে তিনি কুফার গভর্নর নু’মান ইবনু বাশীর (রা)-কে পদচ্যুত করে বসরার গভর্নর উবাইদুল্লাহ ইবনু যিয়াদকে কুফার দায়িত্ব প্রদান করেন। তিনি তাকে নির্দেশ দেন অবিলম্বে কুফায় যেয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করতে এবং হুসাইন যেন কুফায় প্রবেশ করতে না পারেন সে ব্যবস্থা করতে। উবাইদুল্লাহ কুফায় পৌঁছে কঠোর হস্তে কুফাবাসীকে দমন করে। এরপর ৪ হাজার যোদ্ধার এক বাহিনী প্রেরণ করে হুসাইনকে (রা) প্রতিরোধ করতে। উবাইদুল্লাহর বাহিনী হুসাইনকে কারবালার প্রান্তরে অবরোধ করে।

হুসাইন (রা) তাদেরকে বলেন, আমি তো যুদ্ধ করতে আসি নি। তোমরা আমাকে ডেকেছ বলেই আমি এসেছি। এখন তোমরা কুফাবাসীরাই তোমাদের বাইয়াত ও প্রতিজ্ঞা পরিত্যাগ করেছ। তাহলে আমাদেরকে ছেড়ে দাও আমরা মদীনায় ফিরে যাই, অথবা সীমান্তে যেয়ে কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি, অথবা সরাসরি ইয়াযিদের কাছে যেয়ে তার সাথে বুঝাপড়া করি।

উবাইদুল্লাহ প্রথমে প্রস্তাব মেনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু শিমার নামক তার এক সহচর বলে, যদি হুসাইনকে বাগে পেয়েও তুমি তাকে হত্যা না করে ছেড়ে দাও তবে তোমার পদোন্নতির সব সুযোগ শেষ হয়ে যাবে। তখন সে হুসাইন (রা)-এর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং তাকে হত্যার নির্দেশ দেয়।

আশূরার দিন সকাল থেকে উবাইদুল্লাহর বাহিনী হুসাইনের সাথীদের উপর আক্রমন চালাতে থাকে। পার্শবর্তী নদী থেকে পানি গ্রহণে তারা তাঁদেরকে বাধা দেয়। তাদের আক্রমনে তাঁর পরিবারে দুগ্ধপোষ্য শিশু, কিশোর ও মহিলাসহ অনেকে নিহত হন। হুসাইন তাঁর পুরুষ সাথীদের নিয়ে বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করতে থাকেন। পর্যায়ক্রমে তাঁর সাথীরা সকলেই নিহত হন।

তিনি বীর বিক্রমে যুদ্ধ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে সিনান নাখয়ী নামক এক ইয়াযিদ-সৈনিক তাকে আঘাত করলে তিনি মাটিতে পড়ে যান। তখন সিনান নিজে বা খাওলী নামক অন্য এক সৈন্য বা শিমার তাঁকে আঘাত করে তাঁর মস্তক দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে তাকে শহীদ করে। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

উবাইদুল্লাহ বিন যিয়াদ হুসাইনের (রা) মস্তক ও তাঁর পরিবারের জীবিত সদস্যদেরকে দামেশকে ইয়াযিদের নিকট প্রেরণ করে। ইয়াযিদ বাহ্যিক দুঃখ প্রকাশ করে বলে, আমি তো হুসাইনকে কুফা প্রবেশে বাধা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলাম, তাকে হত্যা করতে নির্দেশ দিই নি। এরপর সে হুসাইনের পরিবার পরিজনকে মদীনায় প্রেরণ করে।1তাবারী, আত-তারীখ ৩/২৯৪-৩০৪; যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা ৩/২৪৫-৩২১।

সকারবালার এ নারকীয় ও হৃদয়বিদারক ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ এখন সম্ভব নয়। এ ঘটনার মূল্যায়নে অনেক বিভ্রান্তি রয়েছে। বিশেষত ইসলামের বিশ্বজনীনতা অনুভবে অক্ষম এক শ্রেণীর মানুষ দাবি করেন যে, ইসলাম একটি বংশতান্ত্রিক রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রদান করেছে। এ ব্যবস্থায় রাসূলুল্লাহ সা.-এর পরে শাসনক্ষমতার অধিকার তাঁর বংশধরদের বা আলী (রা) ও তাঁর বংশধরদের। এরা নিজদেরকে “শিয়া” বা আলীর অনুসারী বলে দাবি করেন।

এরা হুসাইনের শাহাদাতের জন্য সাহাবীগণকে দায়ী করে, ঢালাওভাবে সাহাবীগণকে গালি দেয় এবং তাঁদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে। অন্য অনেকে ইয়াযিদের অন্যায়ের জন্য তার পিতা মুআবিয়া (রা)-কে দায়ী করেন এবং দাবি করেন যে, তিনি রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ইয়াযিদকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন।

এ সকল চিন্তা সবই প্রকৃত ইতিহাস এবং কুরআন ও সুন্নাহ সম্পর্কে অজ্ঞতার ফল। কারবালার ঘটনার জন্য কোনো সাহাবীই দায়ী নন। পক্ষান্তরে আমরা ইতোপূর্বে দেখেছি যে, ইসলামী ব্যবস্থায় পূর্ববর্তী শাসক কাউকে মনোনয়ন না দিয়ে বিষয়টি জনগণের ইচ্ছার উপর ছেড়ে দিতে পারেন। অথবা জনগণের পরামর্শ ও স্বীকৃতির ভিত্তিতে যোগ্য কাউকে মনোনয়ন দিতে পারেন। সবচেয়ে বেশি যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয় নি; কারণ সবচেয়ে যোগ্য নির্ণয়ে সমাজে অকারণ সংঘাত তৈরি করে।

ইসলামে জনগণের পরামর্শ ও স্বীকৃতিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পরামর্শ ও স্বীকৃতি থাকলে নিজ পুত্র বা বংশের কাউকে পরবর্তী শাসক হিসেবে মনোনয়ন দিতে কোনোভাবে নিষেধ করা হয় নি। মূলত বিষয়টি দেশ, কাল ও সমাজের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। মুআবিয়া (রা) ইসলামী ব্যবস্থার ব্যতিক্রম কিছুই করেন নি। ইয়াযিদের অন্যায়ের জন্য তিনি দায়ী নন।

অন্য অনেকে মনে করেন, ইমাম হুসাইন বংশতন্ত্র উৎখাতের জন্য অথবা এযিদের জালিম সরকার উৎখাতের জন্য কারবালায় যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন। এরূপ চিন্তুও কুরআন, সুন্নাহ, সাহাবীগণের কর্মধারা ও কারবালার ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞানের অভাব প্রকাশ করে। বংশতন্ত্রের কারণে কেউই ইয়াযিদের বিরুদ্ধে আপত্তি করেন নি। যারা আপত্তি করেছিলেন তারা তার ব্যক্তিগত যোগ্যতার বিষয় ভেবে আপত্তি করেছিলেন।

মুআবিয়া (রা)-এর ওফাতের মাধ্যমে রাষ্ট্রপ্রধানের পদ খালি হয়। মুআবিয়া (রা) জীবিত থাকতেই তার পুত্র ইয়াযিদের মনোনয়ন দেন। কিন্তু এরূপ মনোনয়ন কার্যকর হয় মনোনিত ব্যক্তির ক্ষমতাগ্রহণে নাগরিকদের স্বীকৃতির মাধ্যমে। এ সময়ে অনেকে ইয়াযিদকে মেনে নিয়েছেন। কিন্তু কুফাবাসীরা ইমাম হুসাইনকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে বাইয়াত করে তার নেতৃত্বে পরিপূর্ণ সুন্নাত প্রতিষ্ঠা ও অন্যায় দূর করার দাবি জানান। হুসাইন তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে কুফায় যাচ্ছিলেন।

ইমাম হুসাইন এযিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বের হন নি। তিনি এ জন্য কোনো সেনাবাহিনীও তৈরি করেন নি। তিনি তার পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে কুফায় গমন করছিলেন। কুফাবাসীদের বিশ্বাসঘাতকতা প্রকাশ পেলে তিনি মদীনায় ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু ইয়াযিদের বাহিনী তাকে যুদ্ধ করতে বাধ্য করে। তিনি নিজের ও পরিবারের সম্ভ্রম ও অধিকার রক্ষায় যুদ্ধ করে শহীদ হন।

শীয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা কারবালার ঘটনার শোক প্রকাশের নামে প্রতি বৎসর আশূরার দিনে শোক, মাতম, তাযিয়া ইত্যাদির আয়োজন করে। এগুলি সবই ইসলাম বিরোধী কর্ম। আলী, ফাতিমা, হাসান, হুসাইন (রা)-সহ রাসূলুল্লাহ সা.-এর পরিবার বা আহলে বাইতকে মহব্বত করা আমাদের ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদের কষ্টে আমরা ব্যথিত এবং তাদের যারা কষ্ট দিয়েছে তাদের প্রতি আমাদের ঘৃণা অপরিসীম। পাশাপাশি সাহাবীগণের মর্যাদা ও ভালবাসা কুরআন ও হাদীসের নির্দেশ অনুসারে আমাদের ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

কাজেই নবী-বংশের ভালবাসার নামে শুধুমাত্র ধারণা বা ইতিহাসের ভিত্তিহীন কাহিনীর উপর নির্ভর করে সাহাবীগণ বা কোনো একজন সাহাবীর প্রতি বিরক্তি প্রকাশ আমাদের ঈমানের জন্য ধ্বংসাত্মক।

কারবালার ঘটনার মধ্যে আমাদের জন্য অনেক শিক্ষা রয়েছে। আমরা বুঝতে পারি যে, দুনিয়ার সাময়িক জয় বা পরাজয় দিয়ে চূড়ান্ত ফলাফল বিচার করা যায় না। ইয়াযিদের বাহিনী কারবালায় ব্যাহিক বিজয় লাভ করলেও তারা মূলত পরাজিত হয়। হুসাইনের হত্যায় জড়িত প্রতিটি ব্যক্তি কয়েক বছরের মধ্যেই মুখতার সাকাফীর বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে নিহত হয়। মাত্র ৪ বছরের মধ্যে ইয়াযিদ মৃত্যু বরণ করে এবং তার পুত্র মুআবিয়াও কয়েক দিনের মধ্যে মৃত্যু বরণ করেন। এরপর আর কোনোদিন তার বংশের কেউ শাসক হয় নি।

দুনিয়ার জয়-পরাজয়, সফলতা-ব্যর্থতা, ক্ষমতা বা শক্তি দিয়ে মহান আল্লাহর কবুলিয়্যাত মাপা যায় না। সত্যকে আঁকড়ে ধরা এবং সত্যের পথে সকল বিপদ ও কষ্ট অকাতরে মেনে নেওয়াই মুমিনের দায়িত্ব। মহান আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর সন্তুষ্টির পথে চলার তাওফীক দান করুন। আমীন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
আপনার ইমেইল
Print

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.