As-Sunnah Trust

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 7368

সুদ-ঘুষ

প্রকাশকাল: 20 Oct 2025

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম আমি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করি। আমার কাজ হচ্ছে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে টেন্ডারে পার্টিসিপেট করা। বেশিরভাগ সরকারি কাজে ঘুষ না দিলে কোন কাজ পাওয়া যায় না। আমার কোম্পানিও ঘুষ দিতে বলে। যার ফলে আমিও ঘুষ দেই, ঘুষ এর সাক্ষী থাকি , ঘুষের হিসাব করি। আমাদের কোম্পানি বিক্রয়ের উপর ইনসেনটিভ এর যে নীতি মালা রয়েছে সেই অনুযায়ী আমাদের প্রাপ্য কোম্পানি কখনো দেয় না। আমার জেনারেল ম্যানেজার মালিক পক্ষের আত্মীয়। আমার জেনারেল ম্যানেজার বলে বেশি বেশি বিক্রি কর, ঘুষ ধরে রাখ, এক ভাগ কাস্টমার কে দাও , এক ভাগ আমাকে এবং এক ভাগ তুমি রাখ। ইনসেনটিভ আর বেতন নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। ধরে নাও এটাই অলিখিত পলিসি। আমার বেতন খুবই সামান্য, যার ফলে জেনারেল ম্যানেজার এর কথা মত ঘুষের টাকা থেকে নিজেও রাখি। আমার স্ত্রী একটি সরকারি ব্যাংকে কর্মরত। যদিও সে ব্যাংকের প্রশাসনে আছে তবুও আমি বলতে পারি না সে সুদ থেকে মুক্ত। উপরোক্ত পরিস্তিতির আমি যতই ভালো বেখ্যা করি না কেন , আমি জানি ইসলামী শরিয়াহ মতে আমার এবং আমার পরিবারের পরিশ্রম অর্জিত উপার্জন হালাল নয়। আমি আশা করি আমার সাথে আপনিও একমত হবেন। আমি এই পাপ থেকে বের হয়ে আসতে চাই। আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহ আমার পাহাড় সমান গুনাহ থেকে বেশি মেহেরবান। আমি আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চাই , এবং আমার হালাল রিজিক উপার্জন করার তৌফিক দেয়ার জন্য প্রার্থনা করি। আমার বয়স ৪০ এর উপর। ইচ্ছে হয় চাকরি ছেড়ে দেই , স্ত্রী কেউ চাকরি ছেড়ে দিতে বলি। পারিবারিক এবং সামাজিক ভয়ে এই পাপ থেকে বের হতে পারছি না। চাকরি না থাকলে খাব কি , থাকব কোথায়? পারিবারিক সম্মান ? সামাজিক সম্মান ? বাচ্চাদের অবস্থা ? আমার কাছে মনে হয় , বর্তমানে ঈমান রক্ষা করা হাতের মধ্যে অঙ্গার রাখার থেকেও বেশি কষ্টের। জনাব , কিছুদিন আগে আমার আমেরিকা এবং কানাডা যাওয়ার সৌভাগ্য হয়। এর মধ্যে কানাডা আমার পছন্দ হয়েছে। আমি জানি কানাডায় আমি কোনো অফিশিয়াল জব পাব না। আমাকে কায়িক পরিশ্রম করে উপার্জন করতে হবে , যেমন উবার চালানো বা যে কোন অড জব। আর কায়িক পরিশ্রমের উপার্জাতি টাকা অবস্যই হালাল, যদি হারাম কোন কাজ না করি। এবং আমার স্ত্রী ও এক্ষেত্রে তার ব্যাংকের জব ছেড়ে দেবে – অর্থাৎ আমার পরিবার সুদ এবং গুষ মুক্ত হবে। পারিবারিক এবং সামাজিক মর্যাদাও ঠিক থাকবে। কিন্তু এক্ষেত্রে একটি ভয় আমার ছেলে মেয়ে কি আবার বিধর্মী দেড় সাথে মিশে অন্যরকম হয়ে যায় কিনা। আমার ছেলের বয়স ১২ বছর , সে নামাজ এবং কোরান পরে। মেয়ের বয়স ৯ বছর সেও নামাজ এবং কোরান পরে । এমতাবস্থায়, আমি সিদ্ধান্ত নিতে পারছিনা। কি করলে আমার ভালো হবে , দুনিয়া এবং আখিরাত উভয়ই কামিয়াব হতে চাই আমি। দয়া করে আমার লেখাটি পরে আপনার সুচিন্তিত মতামত দিলে কৃতজ্ঞ থাকব।

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। দুটোর কোন অপশনই মুসলিম হিসেবে আপনার জন্য উপযোগী নয়। মানুষ সমাজ কী বলবে তার চেয়ে বেশী দেখা উচিৎ আল্লাহ আপনার কাজকে কীভাবে দেখছে। আল্লাহকে সবচেয়ে বেশী ভয় করতে হবে। বিধর্মীদের দেশে এভাবে পবিবার নিয়ে বসবাস করা একজন মুসলিমের জন্য কিছুতেই উচিৎ হবে না। পরবর্তী বংশধর বিধর্মী হয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্ক থাকে। এছাড়া সেখানে আপনি আপনার দৈনন্দিন কাজগুলোও ইসলাম অনুযায়ী করতে পারবেন না। মসজিদে জামাতে নামায আদায় করতে পারবেন না। শুক্রবারের জুমার নামাযও অনেক সময় আদায়ের সুযোগ থাকে না। সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান সেখানে সুদভিত্তিক। পথঘাটে নজরের হেফাজতের কোন সুযোগ থাকবে না। আপনি বর্তমানের পাপ উপলদ্ধি করার পরও কেন আমেরিকা কানাডা গেলেন তা বোধগম্য নয়। মধ্যপ্রাচ্যের কোন দেশে চেষ্টা করতেন। তাহলে ধর্মীয় সমস্যা হতো না। দেশেও অন্য কাজ করার কথা চিন্তা করতে পারতেন। আপনি বুঝমান মানুষ। আপনি আপনার বুঝ অনুযায়ী স্বচ্ছ ও হালাল কাজ খুঁজে বের করুন। একটি বড় পাপ থেকে মুক্ত হয়ে পাপের আরেকটি বড় গর্তে পড়তে যাবেন না।

আমাদের নতুন ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে ক্লিক করুন।