শরীয়াহর উৎস কুরআন ও হাদীস। সুতরাং কুরআনে সব হুকুম আসা জরুরী নয়, সব হুকুম আসেও নি। সুতরাং ইসলামী বিধানের ক্ষেত্রে শুধু কুরআনের রেফারেন্স নয়, বরং কুরআন-হাদীসের যে কোন একটি রেফারেন্স থাকলেই যথেষ্ট হবে। নিচে
আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন, فَسُبْحَانَ اللَّهِ حِينَ تُمْسُونَ وَحِينَ تُصْبِحُونَ (17) وَلَهُ الْحَمْدُ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَعَشِيًّا وَحِينَ تُظْهِرُونَ (18) সুতরাং তোমরা সন্ধ্যায় ও ভোর সকালে আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর, এবং বিকালে ও দুপুরে। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে সকল প্রশংসা তাঁরই। সূরা রুম, আয়াত ১৭-১৮। এই আয়াতের তাফসীরে এসেছে ইবনে আব্বাস রা,কে জিজ্ঞাসা করা হলো, আপনি কি পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের কথা কুরআনে পেয়েছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। এরপর তিনি এই দুটি আয়াত তেলাওয়াাত করেন। ইবনে আব্বাস রা. এই আয়াত দুটির ব্যাখ্যায় বলেন, { فَسُبْحَانَ الله } فصلوا لله { حِينَ تُمْسُونَ } صلاة المغرب والعشاء { وَحِينَ تُصْبِحُونَ } صلاة الفجر { وَلَهُ الحمد فِي السماوات والأرض } الشكر والطاعة على أهل السموات والأرض { وَعَشِيّاً } وهي صلاة العصر { وَحِينَ تُظْهِرُونَ } وهي صلاة الظهر সন্ধায় আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর এর অর্থ হলো, মাগরিব ও এশার সালাত আদায় করো। ভোর সকালে অর্থ হলো ফজরের সালাত আদায় করো। বিকালে অর্থ হলো আসরের সালাত আদায় করো আর দুপুরে আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর অর্থ হলো যুহরের সালাত আদায় করো। (তাফসীরে বাগাবী, তাফসীরে ইবনে আব্বাস। ) ভিন্ন একটি প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা দুই ওয়াক্ত সালাতের নাম কুরআনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لِيَسْتَأْذِنْكُمُ الَّذِينَ مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ وَالَّذِينَ لَمْ يَبْلُغُوا الْحُلُمَ مِنْكُمْ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ مِنْ قَبْلِ صَلَاةِ الْفَجْرِ وَحِينَ تَضَعُونَ ثِيَابَكُمْ مِنَ الظَّهِيرَةِ وَمِنْ بَعْدِ صَلَاةِ الْعِشَاءِ ثَلَاثُ عَوْرَاتٍ لَكُمْ لَيْسَ عَلَيْكُمْ وَلَا عَلَيْهِمْ جُنَاحٌ بَعْدَهُنَّ طَوَّافُونَ عَلَيْكُمْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَعْضٍ كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمُ الْآيَاتِ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ হে মুমিনগণ! তােমাদের মালিকানাধীন দাস – দাসীগণ এবং তোমাদের মধ্যে যারা এখনও সাবালকত্বে পৌছেনি সেই শিশুগণ যেন তিনটি সময়ে ( তােমাদের কাছে আসার জন্য ) অনুমতি গ্রহণ করে- ফজরের নামাযের আগে, দুপুর বেলা যখন তােমরা পােশাক খুলে রাখ এবং ইশার নামাযের পর। এ তিনটি তোমাদের গোপনীয়তা অবলম্বনের সময়। এ ছাড়া অন্য সময়ে তােমাদের ও তাদের প্রতি কোন কঠোরতা নেই। তোমাদের পরস্পরের মধ্যে তাে সার্বক্ষণিক যাতায়াত থাকেই। এভাবেই আল্লাহ তােমাদের কাছে আয়াতসমূহ সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে থাকেন আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। সূরা নূর, আয়াত ৫৮।
নীচের হাদীসটিতে ৫ ওয়াক্ত সালাতের কথা পাওয়া যায়।
عَنْ عَائِشَةَ ، زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : قَالَتْ : كَانَ أَوَّلَ مَا افْتُرِضَ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الصَّلاَةُ : رَكْعَتَانِ رَكْعَتَانِ ، إِلاَّ الْمَغْرِبَ ، فَإِنَّهَا كَانَتْ ثَلاَثًا ، ثُمَّ أَتَمَّ اللَّهُ الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ وَالْعِشَاءَ الآخِرَةَ أَرْبَعًا فِي الْحَضَرِ ، وَأَقَرَّ الصَّلاَةَ عَلَى فَرْضِهَا الأَوَّلِ فِي السَّفَرِ تعليق شعيب الأرنؤوط : إسناده حسن من أجل ابن إسحاق অর্থ: হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্নিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. এর উপর প্রথমে দুই দুই রাকআত করে নামায ফরয হয়েছিল, তবে মাগরিব তিন রাকআত ছিল। এরপর আল্লাহ তায়ালা সাধারণ সময়ে (সফর বাদে) জোহর, আসর ও ঈশা চার রাকআত পূর্ণ করে দেন। আর সফর অবস্থায় পূর্বের বিধান বহাল রাখলেন। মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ২৬৩৮১। শায়খ শুয়াইব আরনাউত হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
সালাতের বিস্তারিত নিয়মকানূন হাদীসে উল্লেখ আছে, কুরআন শরীফে উল্লেখ নেই। ইসলাম কুরআন ও হাদসের সমন্বয়। হাদীস ব্যতিত কুরআন মানা সম্ভব নয়। সালাত তার একটি উদাহরণ।