আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 680

নামায

প্রকাশকাল: 10 ডিসে. 2007

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
আমার প্রশ্ন হলোঃ-
১. তাশাহুদে শাহাদাত আঙ্গুল উঠানোর সঠিক নিয়ম কি? বিশেষ করে ইশারা ও নাড়ানোর সঠিক পদ্ধতি কি? আমি হাদিসে, দোআ করা ও তা নাড়ানো এমনটা শুনেছিলাম। এবং স্যার এর একটি ভিডিও লেকচারে, উনি বিতর্কিত বিষয়গুলো তুলে ধরার এক পর্যায়ে এইটার কথা বলেছিলেন এবং উনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তুলেন বলেছিলেন। বিষয়টি একটু বুঝিয়ে বলবেন Please
২. সাহু সেজদা করার সঠিক নিয়ম কি?
▶ আত্তাহিয়্যাতু পড়ে ডান দিকে ১বার সালাম ফিরিয়ে ২টি সেজদা করে পুনঃরায় পুরু তাশাহুদ পড়ে ডানে বামে সালাম ফিরানো নাকি –
▶ আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ শরিফ, দোআ মাসুরা সম্পূর্ণ পড়ে ২টি সেজদা করে তারপর ডানে বামে সালাম ফিরানো? কোনটা সঠিক ও সুন্নাহ সম্মত?
৩. দুয়া কুনুত এবং বিতর সালাত ৩ রাকাত পড়ার সঠিক ও সুন্নাহ সম্মত পদ্ধতি কোনটি?
▶ ২ রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে তারপর ১ রাকাত পড়া? এইক্ষেত্রে প্রথম ২ রাকাত কি নফল সালাত এবং শেষ ১ রাকাত বিতরের নিয়ত করে পড়তে হবে?
▶ মাগরিবের মতন করে ৩ রাকাত পড়া? এইক্ষেত্রে একটা হাদিসে, বিতরকে মাগরিবের মতন করে পড়তে মানা করা হয়েছে শুনেছিলাম। বিষয়টি একটু বুঝিয়ে বলবেন Please
▶ কোথাও না বসে একটানা ৩ রাকাত পড়া। অর্থ্যাৎ, ২য় রাকাতে না বসে, শুধুমাত্র শেষ রাকাতে বসা। কোনটা সঠিক ও সুন্নাহ সম্মত?
৪. ৩য় রাকাতে দুয়া কুনুতের আগে যে তাকবীর দেয়া হয়, আমি শুনেছি এইটা সঠিক নয় – বিষয়টি একটু বুঝিয়ে বলবেন Please
৫. দুয়া কুনুত রুকুর আগে বা পড়ে কখন পড়া উত্তম? এইক্ষেত্রে রুকুর আগে পড়লে হাত উঠিয়ে মুনাজাতের মতন করে পড়তে হবে নাকি হাত বেঁধে পড়তে হবে? এবং রুকুর পড়ে পড়লে কিভাবে পড়বো এবং দুয়া শেষে মুখে হাত মাসেহ করার বিধান কি?
এই ছিল আমার প্রশ্ন। অনুগ্রহ করে প্রশ্নানুসারে, স্যার এর দেয়া উত্তরগুলা আমাকে বললে খুব-ই উপকার হয়। স্যার এর সঙে দেখা করার ও অনেক কিছু জানার অনেক আগ্রহ ছিল। আল্লাহ্ তাআলা উনাকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন এবং আপনাদেরকেও উত্তম বিনিময় দান করুন। আমিন
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। আঙ্গুল দ্বারা ইশারার বিষয়ে স্যার রহ. এর তত্বাবধানে দেয়া একটি প্রশ্নের উত্তর নিচে দিচ্ছি। এখান থেকে আপনি আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। এটা আমাদের দেয়া ২৪৯ নং প্রশ্নের উত্তর। সাহাবী ওয়াইল ইবনে হুযর বলেন, عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ ، قَالَ : رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ قَدْ حَلَّقَ الإِبْهَامَ وَالْوُسْطَى ، وَرَفَعَ الَّتِي تَلِيهِمَا ، يَدْعُو بِهَا فِي التَّشَهُّدِ আমি রাসূলূল্লাহ সা. কে দেখেছি, তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলি ও মধ্যমা আঙ্গুলি এক সাথে করে গোলাকার করলেন এবং ঐ দুই আঙ্গুলির সাথে যুক্ত আঙ্গুলিটি (শাহাদাৎ আঙ্গুলি) উচুঁ করলেন এবং তা দ্বারা তাশাহুদের মধ্যে দোয়া করলেন। সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ৯১২। হাদীসটি সহীহ। সহীহ মুসলিমসহ বিভিন্ন কিতাবে এমন অর্থের অনেক হাদীস বহু সাহাবী থেকে বর্ণিত আছে। কোন কোন হাদীসে আঙ্গুল নাড়ানো বা নাড়ানোর কথা আছে। এর মধ্যে না নাড়ানোর হাদীসটি সহীহ বলে মনে হয়। হাদীসটি আছে সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৯৮৯, সুনানু নাসায়ী,হাদীস নং ১২৭০্ । মোট কথা ইশারা করার কথা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানিত, তবে কখন থেকে ইশারা শুরু করবে, কিভাবে করবে সে ব্যাপারে সর্বাক্যমতে সহীহ কোন দলীল পাওয়া যায় না, এ কারণে ইশারার ধরন নিয়ে আলেমদের মধ্যে মতভেদ আছে। সুতরাং যেভাবেই করুন আপনার ইশারার সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। ইশারার একটি সুন্নাত পদ্ধতি পুরো বৈঠকে শাহাদাৎ আঙ্গুলি উচুঁ করে রেখে আঙ্গুল না নাড়িয়ে ইশারা করা। আর আপনি মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ নাম রাখতে পানের কোন সমস্যা নেই। সাজদায়ে সাহু সালামের আগে পরে দুই সময়ই দেয়া যায়। যে কোন একটি পদ্ধতি অনুসরন করলেই সুন্নাত আদায় হবে। উভয় পদ্ধতির হাদীসই সুনানু তিরমিযীতে আছে। তবে একদিকে সালাম ফেরানোর চেয়ে দু্ দিকে ফিরানো উত্তম। আর একদিকের কথাও হাদীসে আছে। স্যার এমনই বলতেন। বিতর সালাত নিয়ে আপনি যে সব প্রশ্ন করেছেন ইনশাআল্লাহ তার প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর পাবেন স্যার রহ. এর ইন্তকাল পূর্ব তার তত্বাবধানে দেয়া ১০৩ এবং ১৫৪ নং প্রশ্নের উত্তর দেখলে। যেখানে অনেক বিষয় তিনি নিজ হাতে লিখেছেন। যেমন, বিতর কে মাগরিবের মত করো না আর অর্থ হলো মাগরিবের মত তিন রাকআত করো না বরং আরো কিছু রাকআত মিলিয়ে পাঁচ বা আরো বেশী করো। সবই পাবেন এই দুটি প্রশ্নের উত্তর দেখলে। তারপরও কোন প্রশ্ন থাকলে জানাবেন। আর আমরা প্রশ্নোত্তরের ক্ষেত্রে সবসময় স্যারের চিন্তাধারাকে মেনে চলব ইনশাআল্লাহ।