আমি মেহেরুন নেছা। আমার স্বামী আবু সাঈদ। গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালে পারিবারিক ভাবে আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
নানাবিধ কারণে আমাদের বিবাহিত জীবনে কলহ চলতে থাকে।
১ম ঘটনা – এমনি এক কলহের জেরে গত ৮ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে আমি তালাক গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেই এবং কাজী অফিসে গিয়ে তালাকের ফর্ম পূরণ করে তার একটি ছবি আমার স্বামীর নিকট হোয়াটসঅ্যাপ যোগে পাঠাই। তবে তালাক পূরণ এর ছবি বা ফর্মটি আমি তাকে ডাক বিভাগ বা অন্য কোন মাধ্যমে পাঠাইনি বা এর সাক্ষী ও সই করে নি।
<span;>উল্লেখ্য যে, তালাকের ফর্ম পূরণ এর সময় আমার মনে হয়েছিলো, আমার স্বামী আমার সাথে থাকতে চায় না এবং সে যদি প্রকৃত অর্থেই আমার সাথে থাকতে না চায় তাহলে সে এই কাগজ গ্রহন করবে না এবং দেখার পর আমার কাছে ফিরে আসবে। এই নোটিশ এর ছবি দেখার পর আমার স্বামী মেসেজ করে আমাকে ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানিয়েছিলো। উল্লেখ্য কাবিনের ১৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আমার স্বামী আমাকে এক তালাক গ্রহণ করার যে অধিকার দেওয়া সেটাতে সজ্ঞানে সাইন করেনি। সে জানতো না ১৮ নম্বর অনুচ্ছেদে কিছু উল্লেখ ছিলো কি ছিলো না।
<span;>তার ভাষ্যমতে, তার ধারণা ছিল এই ছবি আমি শুধু দেখানোর জন্যই দিয়েছি। আর যদি সত্যি হয়েও থাকে তার জানামতে এটি কার্যকর হতে ৯০ দিন সময় লাগে। এই ৯০ দিনের মধ্যে মীমাংসা হয়ে যাবে ভেবে ভ্রূক্ষেপ করেনি। এই ঘটনার দুই দিন পর আমার স্বামী আমার সাথে দেখা করে এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক হবার পর্যায়ে আসে। এক পর্যায়ে আমরা আবারও সাংসারিক জীবন শুরু করি।
<span;>২য় ঘটনা –
<span;>গত ২৩শে জুন আমাদের মধ্যে আবারও কলহ বাধে। ঝামেলার এক পর্যায়ে এসে আমি আমার স্বামীর কাছে তালাক চাইলে সে বলে, “আমি তালাক দিবো না। তোমার দরকার হলে তুমি দাও”। উল্লেখ্য যে তার ধারণা ছিল যে আমি তার থেকে মৌখিক ভাবে তালাক দিতে বা নিতে পারিনা। তারমতে, কাজী অফিস থেকে নোটিশ পাঠিয়ে ৩ মাসের সময় নিয়ে তালাক দিতে হয়। এজন্য ভেবেছিলো এই তিন মাসের মধ্যে আমার মন পরিবর্তন হতেই পারে। আমাকে কাজী অফিসে গিয়ে নোটিশ পাঠানোর সম্মতি দিয়ে ছিলো।
<span;>তার এই কথায় রাগান্বিত হয়ে আমি বলি যে, আচ্ছা ঠিকাছে। এর আগে তোমার থেকে আমি এক তালাক নিয়েছিলাম এখন আমি দুই তালাকও নিয়ে নিলাম। বলে আমি তাকে বলি আমি মেহেরুন নেছা, আমি আবু সাঈদ থেকে তালাক গ্রহণ করলাম। এটি আমি দুই/তিনবার বললাম। এ কথা শুনে আমার স্বামী বলে যে, তোমার তালাক আমি গুনি না মানি ও না। মৌখিক তালাক দেওয়ার এখতিয়ার শুধু আমারই আছে।
<span;> তুমি হাজার বার তালাক বললেও আমার কিছু হবে না।
<span;>এ কথা শুনে আমি তার কাছ থেকে আবারো তালাক চাইলাম এবং বললাম সে যেনো তালাক দেয়। কেননা আমি কোন জিনিস ঝুলিয়ে রাখা পছন্দ করিনা। তখন আমার স্বামী বলে আমি দিলে আরো দুই তিন দিন পর বা এক সপ্তাহ পর দিবো। কিন্তু মৌখিক ভাবে দিবো না। নোটিশের সাথে সাথে তালাক দিব।
<span;>তারপর বিবাদ চলতেই থাকে। পরে সে তালাক দিবে বলে জানায় এবং বলে আমি আবু সাঈদ, মেহেরুন নেছা কে সজ্ঞানে তিন তালাক দিচ্ছি। এই বলে সে এক তালাক বলে এবং এর কিছুক্ষণ পর সে দুই তালাক বলে থেমে যায়।
<span;>উল্লেখ্য আমার স্বামীর ভাষ্যমতে সে “সজ্ঞানে তালাক দিচ্ছি কথাটি বলেছে। ” সজ্ঞানে তিন তালাক দিচ্ছি” একথাটি বলেনি। এ ব্যাপারে সে শতভাগ আস্থাশীল এবং আল্লাহর নামে শপথ করে বলতে পারে যে সে “তিন” শব্দটি উচ্চারণ করেনি।
<span;>এ ক্ষেত্রে আমিও শতভাগ নিশ্চিত যে সে তিন শব্দটি বলেছে। এবং আল্লাহর নামে শপথ করে বলতে পারি। তবে আমরা দুইজন ই একমত যে আমার স্বামী মৌখিক ভাবে দুই তালাক বলেছে।
<span;>এখন এসকল ঘটনার প্রেক্ষিতে আমার তিনটি সন্দেহ পোষণ করছি৷
<span;>১. আমার স্বামীর বলা তিন তালাক শব্দটি।
<span;>২. আমার নোটিশের মাধ্যমে ১ তালাক আর আমার স্বামীর বলা দুই তালাক মিলে কি তিন তালাক সম্পূর্ণ হলো কিনা।
<span;>৩. আর আমি তার কাছ থেকে মৌখিক ভাবে যে তালাক নিয়েছি সেটি।
<span;>এ ঘটনার ২/১ দিনের মধ্যে আমাদের মীমাংসা হয়ে গেলেও মনের মধ্যে সন্দেহ হতে শুরু করে যে আসলেই আমাদের বিবাহ বলবৎ আছে নাকি তালাক সম্পন্ন হয়েছে। এটা নিয়ে আমরা বিভিন্ন মানুষের সাথে বলি। তারা স্পষ্ট কিছু না বলে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করতে বলেন অথবা লিখিত আকারে জানাতে বলেন। তাই সমস্ত ঘটনাই লিখিত আকারে জানালাম। দয়া করে সঠিক পরামর্শ দিবেন।
<span;>আর এই লিখিত আকারে ঘটনা গুলো সম্বন্ধে আমরা স্বামী স্ত্রী দুইজন ই ওয়াকিবহাল। আমরা দুইজন এটি পড়েছি এবং সজ্ঞানে সহমত পোষণ করছি।