As-Sunnah Trust

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 5948

হালাল হারাম

প্রকাশকাল: 13 May 2022

প্রশ্ন

আস-সালামু আলাইকুম, হুজুর মেয়েদের কলেজে বা ইউনিভার্সিটিতে পড়া জায়েয আছে কি? পুরুষদের দিকে ইচ্ছাকৃতভাবে তাকানো তো গুনাহ, আমাদের কলেজে অনেক শিক্ষক (স্যার) আছেন অবিবাহিত এবং ক্লাসের সময় তো স্যারদের দিকে তাকিয়ে ক্লাস করতে হয়। স্যারদের দিকে তাকিয়ে ক্লাস করা কি হালাল? এবং ভবিষ্যতে ইউনিভার্সিটিতে পড়া হালাল হবে কি?

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। মেয়েদের কলেজে বা ইউনিভার্সিটিতে পড়তে সমস্যা নেই। তবে সেট হতে হবে অবশ্যই পূর্ণ পর্দা রক্ষা কর। পর্দা রক্ষা করা ফরজ। আর পড়া লেখা আবশ্যকীয় কিছু না। সুতরাং পড়া লেখার নামে পর্দা বিসর্জন দেয়া যাবে না। আল্লাহ তায়ালা নারী পুরুষ উভয়ের উপর পর্দা ফরজ করেছেন । পুরুষদের বিষয়ে আল্লাহ বলেন, قُلْ لِّـلۡمُؤۡمِنِيۡنَ يَغُـضُّوۡا مِنۡ اَبۡصَارِهِمۡ وَيَحۡفَظُوۡا فُرُوۡجَهُمۡ ؕ ذٰ لِكَ اَزۡكٰى لَهُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ خَبِيۡرٌۢ بِمَا يَصۡنَـعُوۡنَ ﴿۳۰ নবী! মুমিন পুরুষদের বলে দাও তারা যেন নিজেদের দৃষ্টি সংযত করে রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানসমূহের হেফাজত করে। এটি তাদের জন্য বেশী পবিত্র পদ্ধতি। যা কিছু তারা করে আল্লাহ তা জানেন। সুরা আন্ নূর : আয়াত ৩০ মহিলাদের পর্দার বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, وَ قُلۡ لِّلۡمُؤۡمِنٰتِ یَغۡضُضۡنَ مِنۡ اَبۡصَارِهِنَّ وَ یَحۡفَظۡنَ فُرُوۡجَهُنَّ وَ لَا یُبۡدِیۡنَ زِیۡنَتَهُنَّ اِلَّا مَا ظَهَرَ مِنۡهَا وَ لۡیَضۡرِبۡنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلٰی جُیُوۡبِهِنَّ ۪ وَ لَا یُبۡدِیۡنَ زِیۡنَتَهُنَّ اِلَّا لِبُعُوۡلَتِهِنَّ اَوۡ اٰبَآئِهِنَّ اَوۡ اٰبَآءِ بُعُوۡلَتِهِنَّ اَوۡ اَبۡنَآئِهِنَّ اَوۡ اَبۡنَآءِ بُعُوۡلَتِهِنَّ اَوۡ اِخۡوَانِهِنَّ اَوۡ بَنِیۡۤ اِخۡوَانِهِنَّ اَوۡ بَنِیۡۤ اَخَوٰتِهِنَّ اَوۡ نِسَآئِهِنَّ اَوۡ مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُهُنَّ اَوِ التّٰبِعِیۡنَ غَیۡرِ اُولِی الۡاِرۡبَۃِ مِنَ الرِّجَالِ اَوِ الطِّفۡلِ الَّذِیۡنَ لَمۡ یَظۡهَرُوۡا عَلٰی عَوۡرٰتِ النِّسَآءِ ۪ وَ لَا یَضۡرِبۡنَ بِاَرۡجُلِهِنَّ لِیُعۡلَمَ مَا یُخۡفِیۡنَ مِنۡ زِیۡنَتِهِنَّ ؕ وَ تُوۡبُوۡۤا اِلَی اللّٰهِ جَمِیۡعًا اَیُّهَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ আর মুমিন নারীদেরকে বল, যেন তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। সুরা আন্ নূর : আয়াত ৩০।


এবার দেখুন, সামনে যুবতী, প্রাপ্ত বয়স্ক ছা্ত্রী বসা থাকলে কোন শিক্ষক আয়াতের নির্দেশগুলো পালন করতে পারবে কিনা? বা কোন ছাত্রী কুরআনের এই নির্দেশ পালন করতে পারবে কি না? ছাত্রী ও শিক্ষকদের মাঝে দেয়াল বা মোটা কাপড়ে তৈরী পর্দা দেওয়া ছাড়া আয়াতের নির্দেশগুলো নূন্যতম পালন করাও সম্ভব নয়।


দ্বিতীয়ত, যদি ধরে নিই সকল ছাত্রী ঢিলেঢালা লম্বা পোশাকে পূর্ণ শরীর ঢেকে ক্লাসে বসে তাহলেও মনে রাখতে হবে দেহের পর্দার সাথে মনের পর্দাও রক্ষা করা জরুরী। এভাবে দেহের পর্দা কিছুটা রক্ষা হলেও মনের পর্দা রক্ষা হবে না। প্রকাশ্য শত্রু শয়তানে সব সময় ধোকা দিতে থাকবে। অনবরত ধোকার মধ্যে থেকে গুনাহের কাজে জড়িয়ে পড়া খুবই স্বাভাবিক। তাই ইসলামের দৃষ্টিতে মহিলা ও পুরুষদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আলাদা হওয়া জরুরী। মহিলাদরে পড়াবে মহিলারা আর পুরুষদের পুরুষরা। যদি মহিলাদের পড়ানোর জন্য যোগ্য মহিলা শিক্ষক পাওয়া না যায় সেক্ষেত্রেই কেবল পরুষ শিক্ষক মেয়েদের পড়াতে পারবে, তবে ছাত্রী ও শিক্ষকের মাঝে দেয়াল বা মোটা পর্দার ব্যবস্থা থাকতে হবে, অথবা মেয়েরা পূর্ণ পর্দার সাথে ক্লাসে বসবে।