As-Sunnah Trust

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 5583

ব্যক্তিগত ও পারিবারিক

প্রকাশকাল: 13 May 2021

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম হুজুর. আমি একটা বিষয় নিয়ে পরামর্শ করতে চাচ্ছি. আমি বিগত পাঁচ বছর যাবত ইতালিতে বসবাস করছি. 2020 সালে আমাদের ইতালিতে অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতা দানের জন্য একটা সুযোগ দান করে. আমিও বৈধতা লাভের জন্য আবেদন করে. দুর্ভাগ্যবশত তারা আমার আবেদন নাকচ করে দেয়. আমি ওই জায়গায় সর্বদা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার চেষ্টা করি. এবং আল্লাহর কাছে বৈধতা লাভের আশায় প্রচুর দোয়া করি. বিগত রামাদান মাসে তাহাজ্জুদের নামাজ রত অবস্থায় আমি প্রচুর কান্নাকাটি করি. আমি যখন কাজে যাই কাজ রত অবস্থায় আমি আল্লাহর জিকির আজকার করি. অথচ আজ আমি দেখতে পাচ্ছি আমার পাশের বন্ধুবান্ধব যারা কখনো নামাজ এবং রোজা রাখেনি আজ তারা বৈধতা লাভ করেছে. আমি ছোটবেলা থেকে নামাজ আদায় করতাম আগে কখনো এভাবে আমার চোখের জল আসতো না এখন নামাজ রত অবস্থায় দুই হাতে আমার চোখের পানি আসে এবং আল্লাহর কাছে আমি কান্নাকাটি করি আল্লাহ যেন আমাকে বৈধতা দান করে. এমত অবস্থায় আমি আরো বেশি আল্লাহর কাছে দোয়া করি এবং এবাদত অনেক বেশি করি অথচ আমি এখন দেখতে পাচ্ছি আমার কিছুই হচ্ছে না আমি এদিক দিয়ে অনেক হতাশ হয়ে যাচ্ছি জানিনা আমার কোন ভুল হচ্ছে কিনা আমি নিজেকে আর কন্ট্রোল রাখতে পারতেছি না দয়া করে আমাকে একটু পরামর্শ দিন. মাঝে মধ্যে মনে হয় বুকের ভেতরটা পুড়ে যাচ্ছে কষ্টে. এমত অবস্থায় আমাকে একটু পরামর্শ দিবেন কিভাবে আমি আমার এই হতাশা দূর করতে পারবো ধন্যবাদ

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। হতাশ হবেন না, কোন অবস্থাতেই হতাশ হওয়া যাবে না। এই যে আপনি আল্লাহর কাছে কাঁদতে পারছেন, তাঁর বিধার পালন করতে পারছেন, আল্লাহ আপনাকে একনিষ্ঠভাবে ইবাদত করার সুযোগ দান করেছেন, এগুলো কিন্তু আপনার বন্ধরা যা পেয়েছে তার চেয়ে অনেক অনেক বেশী। এভাবে ইবাদতের মাধ্যমে আপনি আল্লাহর প্রিয় পাত্র হয়ে উঠছেন, অন্যরা কিন্তু সেটা পারছে না। দুনিয়ার টাকা পয়সার চেয়ে আখেরাতের সওয়াবের মূল্য অনেক বেশী। সুতরাং শেষ বিচারে তাদের চেয়ে আপনিই বেশী লাভবান হচ্ছেন। দ্বিতীয়ত আল্লাহ হয়তো দুনিয়াতেই তাদের চেয়ে আপনাকে অনেক বেশী দান করবেন। কিন্তু আল্লাহ আপনাকে চূড়ান্ত পরীক্ষা নিচ্ছেন যে, আল্লাহর উপর আপনার পরিপূর্ণ ভরসা আছে কি না। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলেই আপনি অকল্পনীয় উৎস থেকে পর্যাপ্ত দুনিয়ার সম্পদ অর্জন করবেন। যেমনটি কুরআনে আল্লাহ বলেছেন,

وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا (2) وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ

যে আল্লাহকে ভয় করবে, আল্লাহ তার একটা রাস্তা বের করে দিবেন। এমন উৎস থেকে রিযিক দান করবেন যা কখানো সে কল্পনাও করে নি। যে আল্লাহর উপর ভরসা করে আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট। সূরা তলাক, আয়াত ২-৩। সুতরাং সবর আর ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য চাইতে থাকুন, ইনশাআল্লাহ একদিন আল্লাহ চাওয়ার চেয়ে বেশী কিছু দান করবেন। কুরআন এভাবেই আমাদের আদেশ করেছেন।

أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ

হে ঈমানদাররা! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। সুরা বাকারাহ, আয়াত ১৫৩।