As-Sunnah Trust

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 4928

সালাত

প্রকাশকাল: 28 Jul 2019

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম, আমার প্রশ্ন হল, হানাফী মাজহাব ( মালিকি মাজহাব সহ) বক্তব্য অনুযায়ী রফউল ইয়াদাইন মানসুখ, এবং এর উপর আমল করা গুণাহের কাজ, কারণ রহিত হয়ে যাওয়া আমল করলে তা কবীরা গুণাহের কারণ এবং তা রাসুলুল্লাহ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিপরীতে আমল করা। কিন্তু আহলে হাদিস সহ হাম্বলী ও শাফেয়ী মাজহাবে রফউল ইয়াদাইন করা সুন্নাহ। তাহলে রহিত হয়ে যাওয়া আমল করলে চার মাজহাবই হক্ব কথাটা ভুল নয় কি? আর রফউল ইয়াদাইনের বিষয়ে বিস্তারিত খুঁজতে গেলে দেখা যায়, ইমাম বুখারী জুযউ রফইল ইয়াদাইন নামক আলাদা একটা কিতাব রচনা করেছিলেন। এখন আমার প্রশ্ন হলো, ইমাম বুখারী এতবড় একজন ইমাম হওয়া সত্ত্বেও তিনি মানসুখ হয়ে যাওয়া আমলের উপর একটা বই লিখলেন কেনো? আহলে হাদীস, হাম্বলী মাজহাব ও শাফেয়ী মাজহাবে এই মানসুখ হয়ে যাওয়া আমল করা হয় কেনো? তাহলে তো ৪ মাজহাব হক্ব এই কথাটা মিথ্যা বরং ২ মাজহাব বাতিল নয় কি? আমরা জেনে এসেছি যে হানাফী মাজহাবের দলীলই গ্রহণযোগ্য, তাহলে কাবার ইমাম রহিত হয়ে যাওয়া রফউল ইয়াদাইন করলে তো তার পেছনে হানাফী মাজহাবের অনুসারীদের সালাত হওয়ার কথা নয়? অনেক হুজুর বলেছেন যে, আমরা যারা হানাফী, তাদের জন্য অন্য মাজহাবের ইমামের পেছনে সালাত হবেনা, কারণ তারা রহিত হওয়া আমল করে।এই বিষয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা চাইছি।

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। আমরা যারা হানাফী, তাদের জন্য অন্য মাজহাবের ইমামের পেছনে সালাত হবেনা, কারণ তারা রহিত হওয়া আমল করে। এই উদ্ভট কথা যারা বলে তারা চরম মূর্খ। ভেবে দেখুন তো ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বাল যদি নামায পড়াতো, তাহলে কি তার পিছনে অন্যদের নামায হতো না? সুতরাং এই ধরণের মূর্খতাপূর্ণ কথা কাজ বাদ দেওয়া আবশ্যক। কোন বিষয় মানসুখ হওয়ার বিষয়ে যদি সর্বাক্যমত হয় তাহলেই কেবল তার উপর আমল করা যাবে না। কোন বিষয় কোন ফকীহের মতে মানসুখ হলে আর কারো মতে মানসুখ না হলে তার উপর আমল করা যাবে না, বিষয়টি এমন নয়। যে ফকীহ মানসুখ মনে করেন না, তার মতানুসারে তার অনুসারীরা আমল করতেই পারে। চার মাজহাব হক অর্থ হলো যে সব বিষয়ে কুরআন হাদীসে স্পষ্ট নেই বা যে বিষয়ে হাদীসের বিবরণ একাধিক সে সব বিষয়ে এর চার মাজহাব স্ব-স্ব উসূলের ভিত্তিতে কুরআন-হাদীস অনুযায়ী মাসলা ইজতিহাদ বা বের করেছেন। তাদের নিজস্ব মতামত প্রচার করা তাদের উদ্দেশ্যে ছিল না, বরং কুরআন হাদীস থেকে তারা যেটা বুঝতে পেরেছেন সেটা বলেছেন, করেছেন। এই ইজতিহাদের ক্ষেত্রে কোন ফকীহর ভুল হওয়া বা তার দলীল দূর্বল হওয়া অস্বাভাবিক নয়। পরবর্তীতে ভুল বা দূর্বল দলীল স্পষ্ট হলে অনুসারীদের জন্য আবশ্যক সঠিকের দিকে বা শক্তিশালী দলীলের দিকে ফিরে আসা, না আসলে সেটা হবে ইসলামের চেয়ে মাজহাবকে বেশী গুরুত্ব দেওয়া। যেটা চরম অপরাধ। মনে রাখবেন, কজন মুসলিমের জন্য কুরআন-সুন্নাহ মানা ফরজ। সুতরাং একজন মুসলিমকে কুরআন-সুন্নাহই মানতে হবে। কিন্তু অধিকাংশ মুসলিম এবং সাধারণ আলিমগণ কুরআন-সুন্নাহ থেকে মাসআলা-মাসায়েল জানতে অক্ষম। তাই তাদেরকে এমন কাউকে না কাউকে অনুসরণ করতে হবে যে কুরআন-সুন্নাহ থেকে মাসআলা জানতে সক্ষম। আর এভাবে কাউকে অনুসরণ করার নামই মাজহাব। তার মধ্যে চারটি মাজহাব প্রসিদ্ধ। আর এর কোন একটি মানাই সাধারণ মুসলিমের জন্য নিরাপদ । কোন মাসআলার দলীল যয়ীফ হলে আপনি কোন বিজ্ঞ আলেমের পরামর্শে সহীহ দলীল অনুযায়ী আমল করতে পারেন তবে কখনোই নিজের সিদ্ধান্ত নিবেন না। আর যারা কুরআন-সুন্নাহ থেকে মাসআলা জানতে সক্ষম তাদের তো কাউকে অনুসরণের প্রয়োজন নেই। তবে এমন ব্যক্তি পৃথিবীতে খুব কমই আছে। এই ধরণের একটি প্রশ্নের জবাবেআমাদের দেয়া 0155 নং প্রশ্নেরউত্তরে শায়খ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহ. ইংরেজীতে লিখেছিলেন, What you do is the same that the followers of Madhabs do. They also accept some scholars and follow them. The main duty of a Muslim is to follow the Quran and Sunnah. But the most of the muslims can not study them. So the depend of mazhabs or scholars. You should try your best to study the Quran and sunnah yourself. If not possible, you should follow one Alim and make your decision depending on Sunnah, not on your personal trend or choice.। আর হানাফী বা মালেকী মাজহাবে রাফউল ইয়াদাইন মানসুখ নয়। তাদের মতেরাফউল ইয়াদাইন না করা উত্তম। করলে কারো নামায নষ্ট হব একথা তারা বলেন না।