ওয়া আলাইকুুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ।হাজরে আসওয়াদ আরবী শব্দ। যার র্অথ হলো কালো পাথর। হযরত ইবরাহীম আ. র্সবপ্রথম কাবা ঘরে এই পাথরটি স্থাপন করনে। তখন পাথরটি সাদা ছলি। মানুষরে পাপ গ্রহন করার কারণে তা কালো হয়ছেে বলে হাদীস শরীফে উল্লখে আছ। হজ্বে গয়িে এই পাথর র্স্পশ করে চুমা দয়ো মুস্তাহাব। প্রখ্যাত ঐতহিাসকি মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক বলনে, যখন গৃহ নির্মাণ কাজে কিছুটা অগ্রসর হলো, তখন ইসমাঈল আ. পিতা ইবরাহীম আ.-এর পায়ের নিচে একটি পাথর রেখে দিলেন। যার ওপর দাঁড়িয়ে তিনি নির্মাণ কাজ করতেন। আর ইসমাঈল আ. কাবার বিভিন্ন কোনে অসমাপ্ত কাজ পূর্ণ করতেন। অবশেষে নির্মাণ কাজ বর্তমান হাজরে আসওয়াদ এর স্থান পর্যন্ত এলে, ইবরাহীম আ. ইসমাঈল আ.কে লক্ষ্য করে বললেন- আমি একটি পাথরের টুকরো চাই যা আমি এই স্থানটিতে রাখবো। লোকেরা দেখে বুঝবে যে, তাওয়াফ এই স্থানটি থেকে শুরু হবে। পিতার নির্দেশে ইসমাঈল আ. পাথর খোঁজতে গিয়ে পাথর হাতে ফিরে আসার পূর্বেই জিবরাঈল আ. হাজরে আসওয়াদ নিয়ে উপস্থিত হন। আল্লাহ তাআলা নূহ আ.-এর প্লাবনের সময় পাথরটিকে মক্কায় অবস্থিত আবু কুবাইস পাহাড়ে সংরক্ষণ করেন। এবং ঘোষণা দেন, আমার খলীল ইবরাহীমকে যখন আমার ঘর নির্মাণ করতে দেখবে, তখন তাঁর নিকট পাথরটি পৌঁছে দিবে। (বর্ণনাকারী বলেন) তারপর ইসমাঈল আ. ফিরে এসে পিতাকে লক্ষ্য করে বললেন, এ পাথর আপনি কোথা থেকে লাভ করলেন? উত্তরে বললেন, পাথরটি আমার নিকট এমন এক ব্যক্তি নিয়ে এসেছে, যিনি আমাকে তোমার পাথরটি গ্রহণ হতে বিমুখ করে দিয়েছে। আর তিনি হলেন সম্মানিত জিবরাঈল আ.। তারপর হাজরে আসওয়াদকে যখন তার স্বীয় স্থানে প্রতিস্থাপন করা হলো। তখন ইবরাহীম আ. তার চার পার্শ্ব পাকা করে দিলেন। এবং তখন থেকেই তার অত্যাধিক শুভ্রতার দ্বারা চারপাশকে ঝলমলে করে রাখতো। যেন তার জ্যোতি পূর্ব-পশ্চিম, ডানে-বামে ঠিকরে পড়ছে। (বর্ণনাকারী আরো বলেন: হাজরে আসওয়াদ এত আলোকময় ছিলো যে, মনে হতো কাবা ঘৃহের চার পার্শ্ব থেকে যেন তার দ্যুতি দিয়ে পুরো বিশ্বকে আলোকিত করে ফেলবে। আখবারুল মক্কা, আবুল ওয়ালিদ মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ, ১/৪০-৪১। হাজরে আসওয়াদ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন,
نزل الحجر الأسود من الجنة وهو أشد بياضا من اللبن فسودته خطايا بني آدم
হাজরে আসওয়াদ জান্নাত থেকে এসেছে। তার রঙ দুধের চেয়ে বেশি সাদা ছিলো। এরপর বনী আদমের পাপরাশি তাকে কালো বানিয়ে দিয়েছে। [জামে তিরমিযী : ৮৭৭
হাদীসটি সহীহ। ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। শায়খ অলাবনীও সহীহ বলেছেন। অন্য হাদীসে আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. বলেন,
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- كَانَ لاَ يَسْتَلِمُ إِلاَّ الْحَجَرَ وَالرُّكْنَ الْيَمَانِىَ
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সা. হাজরে আসওয়াদ এবং রুকনে ইয়ামানী স্পর্শ করে চুমা দিতেন। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩১২২; সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৬০৯। এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট হওয়া দরকার যে, উক্ত পাথরকে ইবাদত বা পূজা হিসাবে সম্মান দেয়া হয় না। বরং জান্নাতের স্মৃতি চিহ্ন হিসাবে তাকে ভালবাসা হয়, সম্মান দেয়া হয়। যেমন আপনার বাবা মারা গেলে তার কোন ব্যবহৃত জিনিসকে স্মৃতি হিসেবে আপনার চুমা দেয়া বা ভালবাসা কিংবা আপনার পিতা-মাতাকে আপনার ভালবেসে চুমা দেয়া। এগুলোকে যেমন ইবাদত হিসাবে সম্মান দেয়া হয় না বরং স্মৃতি চিহ্ন হিসাবে বা ভালবাসার চিহ্ন হিসাবে সম্মান দেয়া হয় তেমনি ঐ পাথরটিকেও শুধমাত্র জান্নাতের স্মৃতি চিহ্ন হিসাবেই সম্মান দেয়া হয়, ভালবাসা হয়। এর বাইরে সেটা একটা পাথর ছাড়া আর কিছুই নয়। যেমনটি বলেছেন হযরত উমার রা. এই হাদীসটিতে : عَنْ عُمَرَ أَنَّهُ جَاءَ إِلَى الْحَجَرِ الأَسْوَدِ فَقَبَّلَهُ فَقَالَ إِنِّي أَعْلَمُ أَنَّكَ حَجَرٌ لاَ تَضُرُّ وَلاَ تَنْفَعُ وَلَوْلاَ أَنِّي رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يُقَبِّلُكَ مَا قَبَّلْتُكَ
অর্থ: হযরত উমার রা. একবার হাজরে আসওয়াদের নিকট আসলেন এবং চুম্বন করলেন অত:পর বললেন, আমি জানি যে, তুমি একটি পাথর, তোমার কোন ক্ষতি করার ক্ষমতা নেই, উপকার করারও ক্ষমতা নেই। যদি আমি রাসূলুল্লাহ সা. কর্তৃক তোমাকে চুম্বন করতে না দেখতাম তাহলে তোমাকে চুম্বন করতাম না। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫৯৭। আশা করি আপনি আপনার উত্তর পেয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা আপনাদের ইসলামের পথে অবিচল রাখুন।