As-Sunnah Trust

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 2260

অর্থনৈতিক

প্রকাশকাল: 7 Apr 2012

প্রশ্ন

আসসালামুয়ালাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ আমি একজন সাধারন শিক্ষক। ইসলাম কে অনেক ভালবাসি এবং এর বিধি বিধান জেনে মানার চেষ্টা করি আলহামদুলিল্লাহ। আমার একটা প্রশ্ন যেটার জানার জন্য চেষ্টা করছি কিন্তু বিস্তারিত জানতে পারছিনা। বিষয়টি হল ইন্টারনেট এ out sourcing এর মাধ্যমে টাকা উপার্জন কি ইসলামের দৃষ্টিতে হালাল না হারাম বিস্তারিত জানালে উপকৃত হতাম।

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম।প্রথমেই আমরা দেখব আউট সোর্সিং কি? আউটর্সোসিং তথা ফ্রল্যিান্সিং শব্দরে মূল র্অথ হল মুক্ত পশো। র্অথাৎ মুক্তভাবে কাজ করে আয় করার পশো। আর একটু সহজ ভাবে বললে ইন্টারনেট ব্যাবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতষ্ঠিান বিভিন্ন ধরনরে কাজ করিয়ে নেয়। নিজের প্রতষ্ঠিানের বাইরে অন্য কাউকে দিয়ে এসব কাজ করানোকে আউটর্সোসিং বলে আর যারা আউটর্সোসিংয়ের কাজ করে দেন, তাঁদরেকে ফ্রল্যিান্সার বলে। আউটসোর্সিং উপার্জন জায়েজ। তবে এই শর্তে যে, কাজটি হালাল হতে হবে, হারাম হতে পারবে না (সুদ ভিত্তিক ব্যাংক এবং হারাম পণ্যের কোম্পানীর কাজ হারামের অন্তর্ভূক্ত হবে) এবং যে সময়ে কাজ করবেন, ঐ সময়ে অন্যকারো কাজ করার ব্যাপারে চুক্তিবদ্ধ থাকা যাবে না। যেমন, আপনি কোন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন, সেই প্রতিষ্ঠানের সাথে আপনার চুক্তি হলো সকল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আপনি কাজ করবেন এই অবস্থায় আপনার জন্য জায়েজ হবে না ঐ সময়ের মধ্যে আউটসোর্সিং উপার্জন করা। কারণ আপনি প্রতিষ্ঠানের সাথে উক্ত সময়ে প্রতিষ্ঠানের কাজ করবেন বলে ওয়াদা বদ্ধ। এবং ঐ সময়ে প্রতিষ্ঠানের কাজ করা আপনার আমানতের অন্তভক্ত। আর পবিত্র কোরআন ও হাদীসে ওয়াদা পালন ও আমানত রক্ষা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমানত রক্ষা ও ওয়াদা পালনের ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ১. يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَوْفُواْ بِالْعُقُودِ হে ঈমানদারগণ, তোমরা তোমাদের চুক্তি পূর্ণ কর। সূরা মায়েদা-১। ২. ا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تَخُونُواْ اللَّهَ وَالرَّسُولَ وَتَخُونُواْ أَمَانَاتِكُمْ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ হে ঈমানদারগণ তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের খেয়ানত করবে না। এবং নিজেদের আমানতের খেয়ানত করবে না । এমন অবস্থায় যে, তোমরা জান। সূরা আনফাল-২৭ ৩. يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا لِمَ تَقُولُونَ مَا لا تَفْعَلُون كَبُرَ مَقْتًا عِندَ اللَّهِ أَن تَقُولُوا مَا لا تَفْعَلُونَ হে ঈমানদারগণ তোমরা যা করবে না তা বলবে কেন? আল্লাহর নিকট সবচেয়ে ঘৃন্য বিষয় হলো তোমরা এমন বিষয় বলা যা তোমরা করবে না। সূরা সফ্- ১-২ ৪. إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تُؤَدُّوا الْأَمَانَاتِ إِلَى أَهْلِهَا – ৫৮নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা আমানতকে তার প্রাপ্য ব্যক্তির উপর পৌছে দিবে। সূরা নিসা-৫৮। মূমিনের গুণাবলীর বর্ণনা দিতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ، وَالَّذِينَ هُمْ لِأَمَانَاتِهِمْ وَعَهْدِهِمْ رَاعُونَ আর যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রতি রক্ষা করে। সূরা মূমিনূন-৮। আর হাদীসে রাসূল সা. বলেছেন,(আবু হুরায়রা রা.থেকে বর্ণিত), آيَةُ الْمُنَافِقِ ثَلاَثٌ إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ ، وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ ، وَإِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ মুনাফিকের নিদর্শন তিনটি, ১. মিথ্যা কথা বলে, ২. ওয়াদা ভঙ্গ করে, ৩. আমানতের খেয়ানত করে। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৩। উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে,আমানতের খেয়ানত করা এবং ওয়াদা ভঙ্গ করা খুবই ঘৃনিত কাজ। সুতরাং এই জঘন্য কাজ থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। মোটকথা শরীয়তে আউটসোর্সিং আয় জায়েজ। তবে শর্ত হলো ১. মূল কাজটি হালাল হতে হবে। ২. অন্যকারো সাথে চুক্তিবদ্ধ সময়ে করা যাবে না, নিজের অবসর সময়ে করতে হবে। আল্লাহ ভাল জানেন।