নাভীর নিচে হাত বাধার যেমন সহীহ হাদীস নেই তেমনি বুকের উপর বাধারও সহীহ দলীল নেই। সহীহ হাদীসে সাহাবী ওয়ায়েল ইবনে হুজর রা. রাসূলুল্লাহ সা. এর নামাযের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, ثُمَّ وَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى الْيُسْرَى অর্থাৎ (রাসূলুল্লাহ সা. ) তাঁর ডান হাতকে বাম হাতের উপর রাখলেন। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯২৩। সহীহ বুখারীতে এই বিষয়ে বর্ণিত আরেকটি হাদীস হলো,
عَنْ أَبِي حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ كَانَ النَّاسُ يُؤْمَرُونَ أَنْ يَضَعَ الرَّجُلُ الْيَدَ الْيُمْنَى عَلَى ذِرَاعِهِ الْيُسْرَى فِي الصَّلاَةِ. قَالَ أَبُو حَازِمٍ لاَ أَعْلَمُهُ إِلاَّ يَنْمِي ذَلِكَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
তাবেঈ আবু হাযিম সাহাবী সাহল ইবনে সাদ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, মানুষদের আদেশ দেওয়া হতো সালাতের মধ্যে ডান হাত বাম হাতের বাহুর উপর রাখতে। আবু হাযিম বলেন, এই নির্দেশকে তিনি নাবীউল্লাহ সা. এর প্রতি সম্পৃক্ত করেছেন বলেই আমি জানি। সহীহ বুখারী, হাদীস নং৭৪০। হাত রাখার ব্যাপারে সহীহ সূত্রে অনেক সাহাবী থেকে শুধু এতটুকুই জানা যায় অর্থাৎ বাম হাতের উপর ডান হাত রাখা। হাত রাখার স্থান নিয়ে বর্ণিত হাদিসগুলো একটিও ইলমী গবেষণার আলোকে সহীহ নয়। ইমাম তিরমিযী রহ. এর বক্তব্য আমাদের এই বিষয়ে একটি সঠিক সমাধান দিতে পারে। অন্য একজন সাহাবী থেকে উপরের অনুরুপ একটি হাদীস বর্ণনা করে তিনি বলেছেন,
والعمل على هذا عند أهل العلم من أصحاب النبي صلى الله عليه و سلم والتابعين ومن بعدهم يرون ا يضع الرجل يمينه على شماله في الصلاة ورأى بعضهم أن يضعهما فوق السرة ورأى بعضهم أن يضعهما تحت السرة وكل ذلك واسع عندهم
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সা. এর সাহাবী, তাবেয়ী এবং পরবর্তী আলেমদের নিকট আমল এর উপরই। তারা মনে করেন ব্যক্তি নামাযের মধ্যে তার ডান হাতকে বাম হাতের উপর রাখবে। তাদের কেউ কেউ মনে করেন নাভির উপর রাখবে আবার কেউ কেউ মনে করেন নাভীর নিচে রাখবে। তাদের নিকট উভয় পদ্ধতি গ্রহনের অবকাশ আছে। জামে তিরমিযী,২৫২ নং হাদীসের আলোচনা। সুতরাং উপরের আলোচনা থেকে আমরা সহজেই বুঝতে পারি যে, এই বিষয়ে মাতামাতি না করে আমাদের উচিৎ যে কোন একটি পদ্ধতির উপর আমল করা। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পড়ুন ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহ. রচিত সালাতের মধ্যে হাত বাঁধার বিধান, একটি হাদীসতাত্ত্বিক পর্যালোচনা বইটি।