As-Sunnah Trust

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 153

নফল নামায

প্রকাশকাল: 1 Jul 2006

প্রশ্ন

মুহতারাম। আস-সালামু আলাইকুম। আমার প্রশ্ন হল ১. বিতির এর সালাতের শেষ রাকাতে কুনুত এর আগে তাকবির সহ যে রাফাউল ইয়াদাইন করে হাত বেধে কুনুত পরার যে নিয়ম চালু আছে, তার দলিল সম্পরকে। আমি জানতে চাই কুনুত এর আগে তাকবির বলা এবং রাফাউল ইয়াদাইন করে হাত বাধার কোন সহিহ দলিল আছে কিনা। ২. বিতির এর সালাতের দিতীয় রাকাতে বইঠক এর কোন সহিহ দলিল আছে কিনা।

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আপনার প্রথম প্রশ্নের মধ্যে তিনিটি বিষয় রয়েছে। ১। বিতর নামাযে তাকবীর দিয়ে কুনুত। ২। কুনুতের সময় হাত উঠানো। ৩। কুনুতের পূর্বে নতুন করে হাত বাঁধা। নিচে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো। বিতর নামাযে তাকবীর দিয়ে কুুনুত: তাকবীর দিয়ে কুনুত পড়ার বিষয়ে একটি হাদীসে বর্ণিত আছে, كَانَ عَبْدُ اللهِ لَا يَقْنُتُ إِلَّا فِي الْوِتْرِ، وَكَانَ يَقْنُتُ قَبْلَ الرُّكُوعِ، يُكَبِّرُ إِذَا فَرَغَ مِنْ قِرَاءَتِهِ حِينَ يَقْنُتُ অর্থ: আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. শুধু বিতরের সালাতেই কুনুত পড়তেন। আর তিনি রুকুর পূর্বে কুনুত পড়তেন। যখন কুরআন পড়া শেষ করতেন তখন তাকবীর দিয়ে কুনুত পড়তেন। শরহে মুশকিলিল আছার, হাদীস নং ৪৫০৪, ১১/৩৭৪। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাতে (হাদীস নং ৭০২১)ভিন্ন সনদে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ থেকে অনুরুপ বর্ণিত আছে। উভয় হাদীসের সনদে দূর্বলতা আছে। তবে দ্বিতীয় হাদীসটি প্রথম হাদীসের বক্তব্যকে সমর্থন করায় শায়খ শুয়াইব আর নাউত প্রথম হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। দেখুন: শরহে মুশকিলিল আছার, ১১/৩৭৪। এই হাদীসে আমরা দেখছি সাহবী ইবনে মাসউদ কুনুত পড়ার পূর্বে তাকবীর দিতেন। কুনুতের সময় হাত উঠানো: ফজরের নামাযের কুনুতের সময় উমার রা. হাত উঠাতেন বলে বর্ণিত আছে। হাদীসটি হলো, عَنْ أَبِى عُثْمَانَ قَالَ : صَلَّيْتُ خَلْفَ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِىَ اللَّهُ عَنْهُ فَقَرَأَ ثَمَانِينَ آيَةً مِنَ الْبَقَرَةِ ، وَقَنَتَ بَعْدَ الرُّكُوعِ ، وَرَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى رَأَيْتُ بَيَاضَ إِبْطَيْهِ ، وَرَفَعَ صَوْتَهُ بِالدُّعَاءِ حَتَّى سَمِعَ مَنْ وَرَاءَ الْحَائِطِ অর্থ: আবী উসমান রহ. বলেন, আমি উমার রা. এর পিছনে নামায আদায় করলাম তিনি সূরা বাকারাহ থেকে আশিটি আয়াত তেলাওয়াত করলেন। তিনি রুকুর পরে কুনুত পড়লেন এবং তার দুহাত উত্তোলন করলেন এমন কি আমি তার বগলের সাদা অংশ দেখে ফেললাম। তিনি এতো উচ্চস্বরে দোয়া করলেন যে, দেয়ালের পিছনে যারা আছে তারাও শুনতে পেলো। আস-সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্কী, হাদীস নং ৩২৭৪। একই হাদীস আরো দুটি সনদে তিনি উল্লেখ করেছেন। দেখুন ৩২৭৩ এবং ৩২৭৫ নং হাদীস। ৩২৭৫ নং হাদীসের পরে ইমাম বায়হাক্কী রহ. বলেছেন, وَهَذَا عَنْ عُمَرَ رَضِىَ اللَّهُ عَنْهُ صَحِيحٌ এটা উমার রা. থেকে সহীহ সূত্রে বর্ণিত। উপরের হাদীসটি আরো বর্ণিত আছে মুসান্নিফে ইবনে আবি শায়বাতে। হাদীস নং ৭১১৪ এবং ৭১১৫। এই হাদীসটির সমস্ত বর্ণনাগুলো একত্র করলে দেখা যায় এটা ফজরের নামাযের ঘটনা। আর বিভিন্ন সনদে হাদীসটি বর্ণিত হওয়ায় হাদীসটি সহীহ কিংবা হাসান পর্যায়ের হবে। এই হাদীস থেকে বুঝা যায় দুআ কুনুত পড়ার সময় হাত উঠানো যায়। তবে হাত উঠিয়ে তিনি আমাদের দেশের মোনাজাত করার মত করতেন না কান পর্যন্ত উঠাতেন তা স্পষ্ট নয়। কোন কোন সাহবী থেকে বর্ণিত আছে যে, তারা মোনাজাতের মত করে হাত তুলতেন। কুনুতের পূর্বে নতুন করে হাত বাঁধা: এই মর্মে কোন হাদীস বর্ণিত আছে বলে আমাদের জানা নেই। তবে এই ভাবে বিতর পড়াকে আলেমগণ সুন্নাহ সম্মত বলেছেন। আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য এসম্পর্কে আমাদের দেয়া অন্য প্রশ্নর উত্তর দেখুন।