As-Sunnah Trust

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 1526

ব্যক্তিগত ও পারিবারিক

প্রকাশকাল: 4 Apr 2010

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম । আমি একজন মুসলিম, একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের সাথে যুক্ত। আমার পরিবারও ঐ রাজনৈতিক দলে সাথে যুক্ত। কয়েক দিন ধরে কিছু মানুষ ফতোয়া দিচ্ছে আমরা নাকি কাফের, আমাদের জানাযা হারাম। আমরা তো আল্লাহর রহমতে নামাজ রোজা করি। আমাদের সম্পর্কে এটা বলা কি ঠিক?

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। আলহামদুলিল্লাহ। আপনারা নামায রোজা করেন,এটা খুব ভালো। তবে ইসলাম শুধু নামায রোজা পালন করলেই হবে না। আল্লাহ কুরআনে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করতে বলেছেন, شَرَعَ لَكُم مِّنَ الدِّينِ مَا وَصَّىٰ بِهِ نُوحًا وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰ ۖ أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ অর্থঃ “তোমাদের জন্য দ্বীন তথা আনুগত্যের বিধান ধার্য করা হয়েছে যা নূহ (আঃ) কেও নির্দেশ করা হয়েছিল এবং যা তোমার নিকট অহী করেছি এবং যা ইবরাহীম (আঃ), মূসা (আঃ) ও ঈসা (আঃ) কে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে, তোমরা দ্বীনকে (ধর্মীয় বিধি বিধান) কায়েম কর (প্রতিষ্ঠা কর) এবং এ বিষয়ে মতবিরোধ করো না। ” (সূরা আশ শূরা:১৩) আর দ্বীন বা ধর্ম আল্লাহর নিকটে শুধুমাত্র ইসলাম। إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللَّهِ الْإِسْلَامُ অর্থ: “নিশ্চয় আল্লার নিকট একমাত্র ইসলামই দ্বীন (জীবন বিধান)। ”-(সূরা আলে ইমরান: ১৯) وَمَن يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَن يُقْبَلَ مِنْهُ অর্থ: যে ইসলাম ছাড়া অন্য প্রকার আনুগত্যের বিধান চয় তার থেকে সেটা গ্রহণ করা হবে ন। ”-(সূরা আলে ইমরান: ৮৫) আর মুসলিম হিসেবে ইসলামের বিধান আংশিক মানার সুযোগ নেই। আল্লাহ বলেন: ادْخُلُوا فِي السِّلْمِ كَافَّةً وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ ۚ অর্থ: “তোমরা পূর্ণরূপে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ করো না। ”-(সূরা আল বাকারা: ২০৮) আর ইসলাম কী? এই প্রশ্নের উত্তরে আল্লাহর রাসূল বলেন, الإسلام أن تعبد الله ولا تشرك به شيئا وتقيم الصلاة وتؤتي الزكاة المفروضة وتصوم رمضان অর্থ: ইসলাম হলো আল্লাহর ইবাদত করা, তার সাথে কোন কিছু শরীক না করা, নামায কায়েম করা, যাকাত দেয় এবং রমাজানের রোজা রাখা। ( অন্য একটি হাদীসে হজ্জের কথাও আছে। সহীহ বুখারী,হাদীস নং4499। এই হাদীসে ইসলামের মৌলিক কিছু বিধি বিধান উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া কুরআন ও হাদীসে যত বিধি বিধান, আদেশ-নিষেধ করা হয়েছে সবই ইসলাম ধর্ম। আর ধর্মের এই কাজগুলো শুধু ব্যক্তির উপরই ফরজ নয়। এগুলো জনগন যেন মেনে চলে সেটা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের উপরও ফরজ। মূমিনদের গুনাগণ আলোচনা করতে গিয়ে আল্লাহ কুরআনে বলেন, الَّذِينَ إِن مَّكَّنَّاهُمْ فِي الْأَرْضِ أَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ وَأَمَرُوا بِالْمَعْرُوفِ وَنَهَوْا عَنِ الْمُنكَرِ ۗ وَلِلَّهِ عَاقِبَةُ الْأُمُورِএরা এমন সব লোক যাদেরকে আমি যদি পৃথিবীতে কর্তৃত্ব-ক্ষমতা দান করি তাহলে এরা নামায কায়েম করবে, যাকাত দেবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং খারাপ কাজ নিষেধ করবে (অর্থাৎ ধর্মের সকল বিধি বিধান কায়ম করবে)৷ আর সমস্ত বিষয়ের পরিণাম আল্লাহর হাতে৷ সূরা হজ্জ, আয়াত ৪১। নাময-রোজা জাতীয় ব্যক্তিগত ইবাদতগুলো আমরা সাধারণ মানুষেরা পালন করতে পারি, কিন্তু কুরআনের এমন কিছু বিধান আছে যেগুলো রাষ্ট্রই শুধু প্রতিষ্ঠা করতে পারে। যেমন, সূরা মায়েদার ৩৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে- وَالسَّارِقُ وَالسَّارِقَةُ فَاقْطَعُوا أَيْدِيَهُمَا جَزَاءً بِمَا كَسَبَا نَكَالًا مِنَ اللَّهِ وَاللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ “যে পুরুষ চুরি করে এবং যে নারী চুরি করে তাদের হাত কেটে দাও তাদের কৃতকর্মের সাজা হিসেবে। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি। আল্লাহ পরাক্রান্ত, জ্ঞানময়। ব্যভিচারের শাস্তির বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿ٱلزَّانِيَةُ وَٱلزَّانِي ۡلِدُواْ كُلَّ وَٰحِدٖ مِّنۡهُمَا مِاْئَةَ جَلۡدَةٖۖ وَلَا تَأۡخُذۡكُم بِهِمَا رَأۡفَةٞ فِي دِينِ ٱللَّهِ إِن كُنتُمۡ تُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِۖ وَلۡيَشۡهَدۡ عَذَابَهُمَا طَآئِفَةٞ مِّنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٢﴾ [النور: ٢] “ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী; তাদের প্রত্যেককে তোমরা একশ করে বেত্রাঘাত করবে। আল্লাহর বিধান কার্যকরী করণে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে প্রভাবিত করতে না পারে যদি তোমরা আল্লাহ তা‘আলা ও পরকালে বিশ্বাসী হয়ে থাকো এবং মুমিনদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে”। [সূরা আন-নূর, আয়াত: ২] আরো একটি আয়াত দেখুন وَ کَتَبۡنَا عَلَیۡهِمۡ فِیۡهَاۤ اَنَّ النَّفۡسَ بِالنَّفۡسِ ۙ وَ الۡعَیۡنَ بِالۡعَیۡنِ وَ الۡاَنۡفَ بِالۡاَنۡفِ وَ الۡاُذُنَ بِالۡاُذُنِ وَ السِّنَّ بِالسِّنِّ ۙ وَ الۡجُرُوۡحَ قِصَاصٌ ؕ فَمَنۡ تَصَدَّقَ بِهٖ فَهُوَ کَفَّارَۃٌ لَّهٗ ؕ وَ مَنۡ لَّمۡ یَحۡکُمۡ بِمَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰهُ فَاُولٰٓئِکَ هُمُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۴۵﴾ আমি তাদের জন্য তাতে বিধান দিয়েছিলাম যে, জানের বদলে জান, চোখের বদলে চোখ, নাকের বদলে নাক, কানের বদলে কান, আর দাঁতের বদলে দাঁত। আর জখমের বদলে অনুরূপ জখম। কেউ ক্ষমা করে দিলে তাতে তারই পাপ মোচন হবে। আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিচার ফায়সালা করে না তারাই যালিম। সূরা মায়েদা, আয়াত ৪৫। এই ধরণের বহু ফৌজদারী ও দেওয়ানী বিধান কুরআন হাদীসে আছে। এগুলোই বলে শরীয়াাহ আইন। নীচের আয়তগুলো ভালে করে খেয়াল করুন: ﴿وَمَن لَّمۡ يَحۡكُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡكَٰفِرُونَ﴾ [المائ