ওয়া আলাইকুমুস সালাম। প্রশ্নে বর্ণিত আমলটি সকালে, সন্ধায়, দিনের বেলা, নামাযের পরে বিভিন্ন সময় করা যায়। এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পড়ুন, ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রচিত সহীহ মাসনুন ওযীফা এবং রাহে বেলায়াত বই দুটি। উক্ত আমলের ফজিলত সম্পর্কে বর্ণিত একটি হাদীস নিম্নরূপ:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، قَالَ جَاءَ الْفُقَرَاءُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا ذَهَبَ أَهْلُ الدُّثُورِ مِنَ الأَمْوَالِ بِالدَّرَجَاتِ الْعُلاَ وَالنَّعِيمِ الْمُقِيمِ يُصَلُّونَ كَمَا نُصَلِّي وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ وَلَهُمْ فَضْلٌ مِنْ أَمْوَالٍ يَحُجُّونَ بِهَا وَيَعْتَمِرُونَ وَيُجَاهِدُونَ وَيَتَصَدَّقُونَ قَالَ أَلاَ أُحَدِّثُكُمْ بِأَمْرٍ إِنْ أَخَذْتُمْ بِهِ أَدْرَكْتُمْ مَنْ سَبَقَكُمْ وَلَمْ يُدْرِكْكُمْ أَحَدٌ بَعْدَكُمْ وَكُنْتُمْ خَيْرَ مَنْ أَنْتُمْ بَيْنَ ظَهْرَانَيْهِ إِلاَّ مَنْ عَمِلَ مِثْلَهُ تُسَبِّحُونَ وَتَحْمَدُونَ وَتُكَبِّرُونَ خَلْفَ كُلِّ صَلاَةٍ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ فَاخْتَلَفْنَا بَيْنَنَا فَقَالَ بَعْضُنَا نُسَبِّحُ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ وَنَحْمَدُ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ وَنُكَبِّرُ أَرْبَعًا وَثَلاَثِينَ فَرَجَعْتُ إِلَيْهِ فَقَالَ تَقُولُ سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَاللَّهُ أَكْبَرُ حَتَّى يَكُونَ مِنْهُنَّ كُلِّهِنَّ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ
অর্থ: আবু হুরায়রা রা.থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, কিছু দরিদ্র লোক নবী সা. এর কাছে এসে বললেন, ধনীরা তাদের সম্পদ দান করে আমাদের চেয়ে মর্যাদার দিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা আমাদের মত সালাত আদায় করে, রোজা রাখে। কিন্তু তারা দান-সদাকা করে, জিাহাদ করে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী হয়েছে। তখন রাসূলুল্লাহ সা. বললেন, আমি কি তোমাদের এমন একটি আমলের বিষয়ে অবহিত করব না যা করলে তোমরা তোমাদের অগ্রবর্তীদের সমান হয়ে যাবে আর কেউ তোমাদের পরে তোমাদের মত মর্যাদা পাবে না আর তোমরা হবে সময়ের সবচেয়ে উত্তম মানুষ তবে যারা অনুরুপ আমল করবে তারা এমন মর্যাদা পাবে? তোমরা প্রত্যেক সালাতের পরে তেত্রিশ বার করে তাসবীহ পড়বে, হামদ পেশ করবে এবং আল্লাহর বড়ত্ব পেশ করবে। এরপর এরপর আমরা মতভেদে লিপ্ত হলাম। কেউ বলল, তাসবীহ ও হামদ তেত্রিশ বার আর তাকবীর চৌত্রিশ বার । এরপর আবার আমরা তাঁর কাছে গেলাম। তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুল্লিাহ, আল্লাহু আকবার প্রত্যেকটিই তেত্রিশবার। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮৪৩। অন্য সহীহ হাদীসে আল্লাহু আকবার চৌত্রিশ বারের কথাও বলা হয়েছে। জুমুয়ার দিনের ফজিলত ও আমল নিয়ে অনেক হাদীস বর্ণিত আছে। সহীহ হাদীসে এই দিনে রাসূলুল্লাহ সা. বেশী বেশী করে দরুদ পাঠ করার কথা বলেছেন। সূরা কাহফ পাঠ করার কথাও সহীহ হাদীসে উল্লেখ আছে। এছাড়া জুমুয়ার সালাতে যাওয়ার জন্য অনেক আদব শিক্ষা দিয়েছেন রাসূলুল্লাহ সা.। এগুলির মধ্যে রয়েছে জুুমুয়ার দিনে গোসল করা, সুগন্ধি মাখা এবং সবচেয়ে ভাল পোশাক পরিধান করা, হেঁটে যাওয়া, সকাল সকাল মসজিদে উপস্থিত হওয়া, মসজিদে প্রবেশ করে কিছু সুন্নাত-নফল সালাত আদায়া করা, মসজিদের মধ্যে আগেই উপস্থিত কোন মুসল্লিকে কষ্ট না দেওয়া, কারো ঘাঁড়ের উপর দিয়ে না যাওয়া, দুই জনের মাঝে ঠেলে বসে না পড়া, ইমামের নিকটবর্তী হয়ে বসা, নীরবে মনোযোগের সাথে ইমামের বক্তৃতা শ্রবণ করা ইত্যাদী। দলীলসহ বিস্তারিত জানতে দেখুন, ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রচিত, খুতবাতুল আহকাম পৃষ্ঠ ১৬৭।