আসসালামু আলাইকুম। সন্তান পালক নেয়ার বা দত্তক নেয়ার কোনো শরয়ী বিধান ইসলামে নেই। অর্থাৎ কেউ কোনো শিশুকে দত্তক নিলে ইসলাম তাকে তার সন্তান হিসেবে গণ্য করে না। বরং সন্তান সবসময় তার আসল পিতার দিকেই সম্পৃক্ত হবে। কোনো গরীব শিশুকে সাহায্য করণার্থে তাকে ভরণপোষণ করা একটি সৎ কাজ, নি:সন্দেহে। তবে এতে সত্যিকার অর্থেই সে তার বাবা হয়ে যায় না। দত্তক নেয়া শিশুটি তার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে না। এবং পর্দার ক্ষেত্রেও তা কোনো প্রভাব ফেলবে না। অর্থাৎ শিশুটি ছেলে হলে বড় হয়ে তাকে দত্তক নেয়া মায়ের সাথে পর্দা করতে হবে। আবার মেয়ে হলে তাকে দত্তক নেয়া পিতার সাথে পর্দা করতে হবে এবং সে তাকে দত্তক নেয়া পিতার ছেলের সাথে বিবাহও করতে পারবে। কারণ শরীয়তে এ সম্পর্ক কখনোই বংশীয় সম্পর্কে পরিণত হয় না। তৎকালীন আরব সমাজে পালকপুত্রকে নিজের পুত্র মনে করা হতো্।এই বিশ্বাসকে বাতিল গণ্য করে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَمَا جَعَلَ أَدْعِيَاءَكُمْ أَبْنَاءَكُمْ ذَٰلِكُمْ قَوْلُكُم بِأَفْوَاهِكُمْ وَاللَّهُ يَقُولُ الْحَقَّ وَهُوَ يَهْدِي السَّبِيلَ
এবং তোমাদের পোষ্যপুত্রদেরকে তোমাদের পুত্র করেননি। এগুলো তোমাদের মুখের কথা মাত্র। আল্লাহ ন্যায় কথা বলেন এবং পথ প্রদর্শন করেন। (৩৩:৪)
হ্যাঁ, কেউ চাইলে সে তার জীবদ্দশায় তার পালক সন্তানের জন্য অসীয়ত করে যেতে পারে, এটা বরং উত্তম। এতে তার মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি তার পালক সন্তান পাবে। তবে সে সম্পদের ওয়ারিস হবে না। এই বিষয়ে আল্লাহ বলেন, وَأُوْلُو الأَرْحَامِ بَعْضُهُمْ أَوْلَى بِبَعْضٍ فِي كِتَابِ اللَّهِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُهَاجِرِينَ إِلاَّ أَن تَفْعَلُوا إِلَى أَوْلِيَائِكُم مَّعْرُوفًا অর্থ: আল্লাহর কিতাব অণুসারে আনসার ও মুহাজিরগণ থেকে নিকটাত্নীয়গণ পরস্পর অধিক নিকটবর্তী। তবে তোমরা তোমাদের বন্ধুদের ব্যাপারে ভাল কোন ব্যবস্থা করতে পারো। সূরা আহযাব, আয়াত ৬। মুফাসসিরগণ বলেছেন, এক সময় মুহাজিরগণ ও আনসারগণ একে অপরের ওয়ারিস হতো। এই আয়াতটি সেই বিধান রহিত করে দেয়। ইবনে কাসীর, উক্ত আয়াতের তাফসীর।