প্রথমত: এ বিষয়টি যিনি বলেছেন তিনি সম্ভবত কুরআন অধ্যয়ন করেন নি। কুরআনে হুরের বিষয়টির সাথে যৌনতা, দৈহিক সম্পর্ক ইত্যাদির সামান্যতম আবেশ নেই। বারংবার বলা হয়েছে যে, তাদেরকে জোড়া বানিয়ে দেওয়া হবে হুরের সাথে। আরবী ও অন্যান্য লিঙ্গ সচেতন ভাষায় সাধারণ বিধিবিধানে পুংলিঙ্গ ব্যবহার করেই বিধিবিধান প্রদান করা হয়। এরপরও হুর শব্দটি স্ত্রীলিঙ্গ নয়। নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই শব্দটি ব্যবহৃত হয়। আর মানবীয় প্রকৃতির সাথে একটি সুসমঞ্জস। মানুষ প্রকৃতিগতভাবে আত্মা ও মনের শান্তির জন্য জোড়া চায়। জান্নাতে মহান আল্লাহ তাদেরকে জোড়া প্রদান করবেন; যেন তারা মানবীয় প্রকৃতির প্রশান্তি ও পরিতৃপ্তির পূর্ণতা লাভ করতে পারে। দ্বিতীয়ত: এ বিষয়টি যিনি বলেছেন তিনি সম্ভবত অন্য কোনো ধর্মগ্রন্থও অধ্যয়ন করেন নি। বাইবেল, বেদ, রামায়ন, মহাভারত ও অন্যান্য ধর্মগ্রন্থে অশ্লীলতার ছড়াছড়ি পর্নোগ্রাফিকেও হার মানায়। পিতা-কন্যার ব্যভিচার, ভাই-বোনের ভ্যবিচার, শ্বশুর-পুত্রবধুর ব্যভিচার, পিতার স্ত্রীদের প্রকাশ্যে ধর্ষণ, উলঙ্গ হয়ে নাচানাচি, মাতলামি ইত্যাদির বর্ণনায় পবিত্র বাইবেল পরিপূর্ণ। সাধারণ বিষয়ের বর্ণনাতেও অশ্লীল উপমা ও রূপক ব্যবহার করা হয়েছে। পক্ষান্তরে কুরআনে স্বাভাবিক যৌন স্বাস্থ্য বিষয়ক বর্ণনাও সকল অশ্লীতার ছোয়া থেকে মুক্ত। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, ইহূদী, খৃস্টান, হিন্দু বা অন্য ধর্মের কোনো কোনো অনুসারী নিজেদের ধর্মগ্রন্থের অপবিত্রতম পর্নোগ্রাফীর চেয়েও অশ্লীল গল্পগুলোকে ধর্মগ্রন্থের ভাবগাম্ভির্যের সাথে সাংঘর্ষিক মনে না করলেও কুরআনের মধ্যে বিদ্যমান অশ্লীলতা বা দৈহিকতার সামান্যতম ছোয়ামুক্ত হুর বিষয়ক বক্তব্যগুলোকে ধর্মগ্রন্থের ভাবগাম্ভীর্যের সাথে অসামাঞ্জস্য বলে দাবি করেন।