As-Sunnah Trust

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 5928

ব্যক্তিগত ও পারিবারিক

প্রকাশকাল: 23 Apr 2022

প্রশ্ন

আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আমার প্রশ্নটা অনেক বড় কষ্ট করে একটু ধৈর্য নিয়ে পড়িয়েন। আমার বাবা ফরজ ইবাদত গুলো একটা ও আদায় করে না আর আমার মা সব ফরজ ইবাদত গুলো মা শা- আল্লাহ পালন করে।আমার বাবা আমার দাদা থেকে অনেক সম্পদ পেয়েছিল মা শা- আল্লাহ। আমার বাবাকে ছোট বেলা থেকে দেখছি অনেক টাকা, সম্পদ নষ্ট করতে। তিনি আমার মাকে অনেক অত্যাচার করতো এবং এখনো ধমক, চিৎকার-চেচামেচি করে।ছোটবেলা আমাদেরকে রেখে এদিক সেদিক চলে যেতেন। স্ত্রী সন্তানদের হক তিনি কখনোই আদায় করেনি।তারপরও আলহামদুলিল্লাহ দ্বীনি জ্ঞান থাকায় ওনাকে যথেষ্ট সম্মান দি কিন্তু তার মর্ম তিনি বুঝেনা। টাকা পয়সা,গয়না সব নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন খারাপ কাজ করেছেন। বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে গিয়ে মামলা খেয়েছেন আর আমার মা বিভিন্ন কোর্টে গিয়ে সব ঝামেলা শেষ করতো। আমাদের সন্তানদের নামে আমার মায়ের নামে আত্মীয়, প্রতিবেশীর কাছে মিথ্যা কথা বলে বদনাম করে।আমার মাকে ঘুমে থাকা অবস্থায় মাথায় আঘাত দিয়ে ৭ টা সেলাই পর্যন্ত দেয়াই নেওয়াইছে তারপর ও আমার মা ধৈর্য ধারণ করেছে তারপরও মা কোনো শাস্তি দেয় নাই শুধু ৩ সন্তান আর সম্মানের কথা ভেবে। এছাড়া ও আরো অনেক অত্যাচারের শিকার আমার মা ও আমরা তিন ভাই বোন হয়েছি। এখন আমাদের জীবন অতিবাহিত করার মতো তেমন কোনো পথ নেই। আরো ১৫০ শতকের মতো জায়গা আছে সেগুলো তিনি বিক্রি করলে সেই আবার আগের মতো টাকা গুলো নস্ট করবে, অল্প কিছু টাকা একটা যানবাহন থেকে আসে সেটা নাকি তিনি বিক্রি করে দিবে। ওটা বিক্রি করলে আমাদের কোনো রকম করে খেয়ে বাঁচার ও কিছু থাকবে না। প্রশ্ন ১ঃ আমার মাকে মারার সময় আমরা সন্তানরা বাঁচাতে গিয়ে বাবাকে চাপ দিয়ে ধরে রাখলে বা কোনো রকম ভাবে দমাই রাখলে কি গুনাহ হবে? প্রশ্ন ২ঃ বাবাকে অনেক ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করি তিনি উল্টো ধমক, চিৎকার-চেচামেচি করে। দেখা যায় মাঝে মাঝে আমিও চিৎকার-চেচামেচি করি। এতে কি গুনাহ হবে? আর কত উল্টা পাল্টা সহ্য করবো। প্রশ্ন ৩ঃ আশেপাশের অনেকেই বুদ্ধি দেয় যে বাকি সম্পদ যা আছে তা জোর করে হলেও আমার মা এবং আমরা সন্তানদের নামে লিখে নিয়ে ফেলতাম না হয় সে সম্পদগুলোও নস্ট করবে। এমন করা কি জায়েজ হবে?

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। আপনাদের উপর আবশ্যক হলো আপনার আব্বাকে সম্পূর্ণভাবে এমন কাজে থেকে বিরত করা। যদি বিরত না রাখেন, বাধা না দেন তাহলে আপনারা গুনাহগার হবেন।

২। এই ধরণের লোকদের সাথে চিৎকার-চেচামেচি করে তেমন কোন লাভ হয় না। সুতরাং ভদ্রভাবেই তাকে বুঝাবেন। তবে কোন সময় ধৈর্যচ্যৃতি হলে আশা করি আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন।৩। অপচয় করে সম্পদ নষ্ট করলে তাকে বাঁধা দেয়া আপনাদের দায়িত্ব। নীচের হাদীসটি লক্ষ্য করুন :حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ عَنْ أَبِيهِ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَعُودُنِي عَامَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ مِنْ وَجَعٍ اشْتَدَّ بِي فَقُلْتُ إِنِّي قَدْ بَلَغَ بِي مِنْ الْوَجَعِ وَأَنَا ذُو مَالٍ وَلاَ يَرِثُنِي إِلاَّ ابْنَةٌ أَفَأَتَصَدَّقُ بِثُلُثَيْ مَالِي قَالَ لاَ فَقُلْتُ بِالشَّطْرِ فَقَالَ لاَ ثُمَّ قَالَ الثُّلُثُ وَالثُّلُثُ كَبِيرٌ أَوْ كَثِيرٌ إِنَّكَ أَنْ تَذَرَ وَرَثَتَكَ أَغْنِيَاءَ خَيْرٌ مِنْ أَنْ تَذَرَهُمْ عَالَةً يَتَكَفَّفُونَ النَّاسَ وَإِنَّكَ لَنْ تُنْفِقَ نَفَقَةً تَبْتَغِي بِهَا وَجْهَ اللهِ إِلاَّ أُجِرْتَ بِهَا حَتَّى مَا تَجْعَلُ فِي فِي امْرَأَتِكَ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أُخَلَّفُ بَعْدَ أَصْحَابِي قَالَ إِنَّكَ لَنْ تُخَلَّفَ فَتَعْمَلَ عَمَلاً صَالِحًا إِلاَّ ازْدَدْتَ بِهِ دَرَجَةً وَرِفْعَةً ثُمَّ لَعَلَّكَ أَنْ تُخَلَّفَ حَتَّى يَنْتَفِعَ بِكَ أَقْوَامٌ وَيُضَرَّ بِكَ آخَرُونَ اللَّهُمَّ أَمْضِ لأَصْحَابِي هِجْرَتَهُمْ وَلاَ تَرُدَّهُمْ عَلَى أَعْقَابِهِمْ لَكِنْ الْبَائِسُ سَعْدُ بْنُ خَوْلَةَ يَرْثِي لَهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ مَاتَ بِمَكَّةَ

সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, বিদায় হাজ্জে একটি কঠিন রোগে আমি আক্রান্ত হলে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার খোঁজ খবর নেয়ার জন্য আসতেন। একদা আমি তাঁর কাছে নিবেদন করলাম, আমার রোগ চরমে পৌঁছেছে আর আমি সম্পদশালী। একমাত্র কন্যা ছাড়া কেউ আমার উত্তরাধিকারী নেই। তবে আমি কি আমার সম্পদের দু’ তৃতীয়াংশ সাদাকা করতে পারি? তিনি বললেন, না। আমি আবার নিবেদন করলাম, তাহলে অর্ধেক। তিনি বললেন, না। অতঃপর তিনি বললেন, এক তৃতীয়াংশ আর এক তৃতীয়াংশও বিরাট পরিমাণ অথবা অধিক। তোমার ওয়ারিসদের অভাবমুক্ত রেখে যাওয়া, তাদেরকে খালি হাতে পরমুখাপেক্ষী অবস্থায় রেখে যাওয়ার চেয়ে উত্তম। [1] আর আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি লাভের জন্য তুমি যে কোন ব্যয় করো না কেন, তোমাকে তার বিনিময় প্রদান করা হবে। এমনকি যা তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দিবে (তারও প্রতিদান পাবে)। আমি নিবেদন করলাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! (আফসোস) আমি আমার সাথীদের হতে পিছনে থেকে যাব? তিনি বললেন, তুমি যদি পিছনে থেকে নেক ‘আমল করতে থাক, তাহলে তাতে তোমার মর্যাদা ও উন্নতি বৃদ্ধিই পেতে থাকবে। তাছাড়া, সম্ভবত, তুমি পিছনে (থেকে যাবে)। যার ফলে তোমার দ্বারা অনেক কাওম উপকার লাভ করবে। আর অন্যরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হে আল্লাহ্! আমার সাহাবীগণের হিজরত বলবৎ রাখুন। পশ্চাতে ফিরিয়ে দিবেন না। কিন্তু আফসোস! সা‘দ ইবনু খাওলার জন্য (এ বলে) আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জন্য শোক প্রকাশ করছিলেন, যেহেতু মক্কা্য় তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। সহীহ বুখারী দু’ তৃতীয়াংশও যখন আল্লাহর রাসূল সা. আল্লাহর ওয়াস্তে দান করতে নিষেধ করেছেন, সেখানে সন্তানদের দিকে না তাকিয়ে সব টাকা পয়সা অপচয় করে উড়িয়ে দিলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে।

স্ত সম্পদ বা সম্পদের, হাদীস নং ১২৩৩।

সম