আলিম ও ফকীগণ তাবিজের বিষয়ে কিছু মতভেদ করেছেন। তাঁদের মতে তাবিজ দু প্রকারের। প্রথমত: যে তাবিজে দুর্বোধ্য বা অবোধ্য কোনো নাম, শব্দ বা বাক্য, কোনো প্রকারের বৃত্ত, দাগ, আঁক অথবা বিভিন্ন সংখ্যা লেখা হয়। এগুলির সাথে অনেক সময় কুরআনের আয়াত বা হাদীস লেখা হয়। এ প্রকারের তাবিজ ফকীহগণের সর্বসম্মত মতে হারাম। এগুলোতে শিরক থাকার সম্ভাবনা খুবই বেশি। কারণ এ সকল দুর্বোধ্য নাম, শব্দ, দাগ বা সংখ্যা শয়তানের নাম, প্রতীক বা শয়তানকে সন্তুষ্ট করার জন্য ব্যবহৃত বলেই বুঝা যায়। তা না হলে এ সকল অর্থহীন বিষয় তাবিজে সংযুক্ত করার দরকার কী?
দ্বিতীয় প্রকারের তাবিজ যে তাবিজে কুরআনের আয়াত, হাদীসের বাক্য অথবা সুস্পষ্ট অর্থের শিরকমুক্ত কোনো বাক্য লিখে দেওয়া হয়। এ ধরনের তাবিজ ব্যবহার কোনো কোনো সাহাবী-তাবিয়ী ও পরবর্তী অনেক আলিম ও ফকীহ জায়েয বলেছেন। তাঁরা তাবিজকে ঝাড়ফুঁকের মত একই বিধানের বলে গণ্য করেছেন। বিশেষত অমুসলিম গণক, সন্যাসী ও কবিরাজদের সুস্পষ্ট শিরক থেকে মুসলিমদেরকে রক্ষা করতে কুরআন ও হাদীসের দুআ দিয়ে তাবিজ ব্যবহার অনেক প্রসিদ্ধ আলিম বৈধ বলে গণ্য করেছেন। অন্যান্য অনেক আলিম দ্বিতীয় প্রকারের তাবিজকেও হারাম বলে গণ্য করেছেন। তাঁরা বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবীগণের হাদীসগুলোতে এরূপ কোনো পার্থক্য ছাড়াই তাবিজ ব্যবহার নিষেধ করা হয়েছে। ঝাড়ফুঁকের ক্ষেত্রে যেরূপ অনুমোদন তিনি প্রদান করেছেন সেরূপ কোনো অনুমোদন তাবিজের ক্ষেত্রে কোনো হাদীসে পাওয়া যায় না। কাজেই কুরআন, হাদীস বা সুস্পষ্ট অর্থবোধক শিরকমুক্ত বাক্য দ্বারা ঝাড়ফুঁক বৈধ হলেও এগুলো দ্বারা তাবিজ ব্যবহার বৈধ নয়। দলীলসহ বিস্তারিত জানতে আমাদের দেয়া 0018 নং প্রশ্নের উত্তর দেখুন।