১. ২. ওহীর বিকৃতি বা বিলুপ্তির কারণ
কুরআন-হাদীসের বর্ণনা এবং বিভিন্ন ধর্মের ইতিহাস থেকে আমরা দেখতে পাই যে, ওহীর মাধ্যমে প্রাপ্ত জ্ঞান বিলুপ্ত হওয়ার প্রধান কারণ দুটি:
১. অবহেলা, মুখস্থ না রাখা বা অসংরক্ষণের ফলে ওহীলব্ধ জ্ঞান বা গ্রন্থ হারিয়ে যাওয়া বা বিনষ্ট হওয়া।
২. মানবীয় কথাকে ওহীর নামে চালানো বা ওহীর সাথে মানবীয় কথা বা জ্ঞানের সংমিশ্রণ ঘটানো।
প্রথম পর্যায়ে ‘ওহী’-র জ্ঞান একেবারে হারিয়ে যায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ‘ওহী’ নামে কিছু ‘জ্ঞান’ সংরক্ষিত থাকে, যার মধ্যে ‘মানবীয় জ্ঞান ভিত্তিক’ কথাও সংমিশ্রিত থাকে। কোন কথাটি ওহী এবং কোন কথাটি মানবীয় তা জানার বা পৃথক করার কোনো উপায় থাকে না। ফলে ‘ওহী’ নামে সংরক্ষিত গ্রন্থ বা জ্ঞান মূল্যহীন হয়ে যায়। পূর্ববর্তী অধিকাংশ জাতি দ্বিতীয় পদ্ধতিতে ওহীর জ্ঞানকে বিকৃত করেছে। ইহুদী, খ্রিস্টান ও অন্যান্য অধিকাংশ ধর্মাবলম্বীদের কাছে ‘ধর্মগ্রন্থ’, Divine scripture ইত্যাদি নামে কিছু গ্রন্থ সংরক্ষিত রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে অগণিত মানবীয় কথা, বর্ণনা ও মতামত সংমিশ্রিত রয়েছে। ওহী ও মানবীয় কথাকে পৃথক করার কোনো পথ নেই এবং সেগুলো থেকে ওহীর শিক্ষা নির্ভেজালভাবে উদ্ধার করার কোনো পথ নেই।
বই: হাদীসের নামে জালিয়াতি
লেখক: ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ
প্রকাশ: জুন ২০২২, পৃ. ৩৬-৩৭