আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 6596

ব্যক্তিগত ও পারিবারিক

প্রকাশকাল: 18 ডিসে. 2023

প্রশ্ন

আস-সালামু ওয়া আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
আমি বেসরকারী রিয়েল-এস্টেট কোম্পানী-তে চাকুরি করি।
যাদের কাজই হলো রাজউক কর্তৃক প্লট ক্রয়-বিক্রয় করা।

১) নাম্বার প্রশ্নঃ রাজউক এর কোন প্লট ক্রয়-বিক্রয় ক্ষেত্রে রাজউক কর্তৃক ফাইল অনুমোদন করতে হয়।
এইটা আবার দুই ভাগে বিভক্তঃ যথা

১। উত্তরা অফিস, ২। হেড অফিস/মতিঝিল।
এই দুই অফিসে ফাইল অনুমোদন করতে ৮০,০০০/- থেকে ৮৫,০০০/- টাকা খরচ হয়।
আমার প্রশ্ন হলো যে, বায়ার অথবা সেলার হইতে আমি যে চুক্তির বিনিময়ে দুইটি অফিসেরই ফাইল অনুমোদন
করিয়ে দিবো ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকার বিনিময়ে। আমি যে, চুক্তির ভিত্তিতে ১ লক্ষ টাকা নিয়ে ফাইল
অনুমোদন করিয়ে দেওয়ার পর, অবশিষ্ট ১৫-২০ হাজার টাকা আয় করলাম সেটা হালাল হবে কী? কেননা ঘুষ
ছাড়া এসকল সরকারী অফিসে কোন কার্যক্রম করা যায়না। যদিও আমি বা আমরা অপছন্দ হওয়া সত্বেও
নিরুপায় হয়েই ঘুষ দিয়ে এই কাজগুলো করিয়ে থাকি।

২) নাম্বার প্রশ্নঃ একটি প্লট যখন রেজিস্ট্রি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। তখন সেটা রাজউক এবং ভুমি নামজারী করতে হয়। এখানে ২ ধরনের নামজারী করতে হয়। এইগুলো আমরা ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকার বিনিময়ে বায়ার/সেলার-দের সাথে চুক্তি করে কাজ করে থাকি। এখানেও ২টি নামজারী করতে ৩৮ থেকে ৩৯ হাজার টাকা খরচ হয়। যেখানে সরকার পায় মাত্র-১২০০০+১৫০০= ১৩,৫০০/- টাকা বাকী টাকা ঘুষ দিতে হয়।
অবশিষ্ট  ১১-১২ হাজার টাকা যেটা আয় করলাম সেটা হালাল হবে কী? কেননা ঘুষ ছাড়া এসকল সরকারী
অফিসে কোন কার্যক্রম করা যায়না। যদিও আমি বা আমরা অপছন্দ হওয়া সত্বেও নিরুপায় হয়েই ঘুষ দিয়ে এই
কাজগুলো করিয়ে থাকি।

৩) নাম্বার প্রশ্নঃ রাজউক কর্তৃক প্লট বরাদ্দ পাইছে ২০০৪ সালে বা তার আগে, তখন জাতীয় পরিচয়পত্র হয়
নাই। পরবর্তীতে দেখা যায় যে, জন্ম সন বা নিজ নাম বা পিতা, মাতার নামের সাথে রাজউক কর্তৃক আবেদন
ফরম এর নামের মিল নেই। তখন জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে হয়। তখনও আমরা বায়ার অথবা
সেলার-দের সাথে চুক্তিতে কাজ করে থাকি। দেখা-যায় ঐখানেও ৬০,০০০/- (ষাট হাজার) টাকা চুক্তি
করলাম। কিন্তু কাজ করতে লাগলো ৪০,০০০/- (চল্লিশ হাজার) টাকা। অবশিষ্ট ২০,০০০/- (বিশ হাজার)
টাকা যেটা আয় করলাম সেটা হালাল হবে কী? মোট কথা ক্লায়েন্ট এর প্রয়োজনে বা তাহার ন্যায্য পাওয়ার জন্য চুক্তিভিত্তিক টাকা নিয়ে জন্ম সনদ, মৃত্যু সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, পাসপোর্ট ইত্যাদি
ডকুমেন্টসগুলো সরকারী অফিস হতে ঘুষ দিয়ে কাজ করানোর পর, অবশিষ্ট টাকা পারশ্রমিক হিসাবে গ্রহণ করা হালাল হবে কী? যদিও আমি বা আমরা অপছন্দ হওয়া সত্বেও নিরুপায় হয়েই ঘুষ দিয়ে এই কাজগুলো করিয়ে থাকি। কেননা ঘুষ ছাড়া এসকল সরকারী অফিসে কোন কার্যক্রম করা যায়না। আমার প্রশ্ন হইলো যে, বায়ার বা সেলার এর সাথে চুক্তি করে যে কাজগুলো নিরুপায় হয়ে সরকারী অফিসে ঘুষ দিয়ে করার পর, আমার বা আমাদের আয়গুলো হালাল হলো নাকী? আর হালাল না হলে, তাহলে এখান থেকে বাঁচার উপায় কী? বা কোন পথে হাটলে আমাদের জন্য সহজ হবে। আল্লাহ তায়ালা আপনাদের-কে নেক হায়াত দান করুক এবং উত্তম প্রতিদান দিক। আমিন।

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। এখানে আয়ের যেসব উৎসের কথা বলা হয়েছে একটাও চাকুরী থেকে প্রাপ্ত আয় নয়। চাকুরীকে অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে  অবৈধভাবে টাকা উপার্জনের কিছু মাধ্যমের কথা উল্লখ করা হয়েছে। তার প্লটা বিক্রয় করা, কিন্তু এটাকে হাতিয়ার করে অন্যান্য কাজ করে যাচ্ছে। যে কাজ সরকারীভাবে বৈধ নয়, ধর্মেও অবৈধ। এই ধরণের কোন পেশার অনুমোদন সরকার দেই নি। সুতরাং যদি মানুষের কল্যানের কথা চিন্ত করে কোন রকম অতিরিক্ত টাকা পয়সা না নিয়ে শুধু যতটুকু খরচ হয় ততটুকু টাকা নিয়ে এই কাজ করে দিতে পারে, তাহলে করবে আর যদি না পারে তাহলে এই কাজ করা বাদ দিয়ে তার যে মূল কাজ প্লট কেনা-বেচা সেটা করবে। মানুষের দূর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে এই উপার্জন সম্পূর্ণ অবৈধ।