১৮ বছর বয়স থেকে আমি নিয়মিত নামাজ পড়তাম। কিন্তু ২০০০ সালের দিকে প্রেম-ঘটিত কারণে মানুষিকভাবে খুবই হতাশ হয়ে পড়ি এবং নামাজ পড়া ছেড়ে দেই। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়শুনা করি, কিন্তু নামাজ -রোজা পালন করা হয়নি। গান বাজনা শুনা, সিনেমা দেখা ইত্যাদি নানা ধরণের পাপে লিপ্ত ছিলাম। কিন্তু তওবা করার বিষয়টি মাথায় আসতো না। মাঝে মধ্যে আত্মীয়ের বাসায় থাকলে জুম্মার নামাজ পড়া হতো। ঈদের সময় গ্রামে বাবা-মায়ের সাথে থাকতাম, যতটুকু মনে পড়ে, ঈদের নামাজে যেতাম। ২০০৭ সালে ঢাকায় মেছে থাকাকালীন জীবন সম্পর্কে হতাশ হয়ে ঈদের নামাজ পড়তে যাইনি-আমার মনে আছে। আজ থেকে ১০-১৫ বছর আগের বিষয় -অনেক কিছু মনে করতে পারছিনা তবে মনে হয় আমার বিশ্বাস ছিল এরকম: শিরক এবং মানুষের হক নষ্ট করলে আল্লাহ মাফ করবেন না। অন্যান্য গুনা মাফ করে দিবেন। তবে এখন স্পষ্ট করে স্মরণ করতে পারছি না। স্কুল কলেজে পড়ার সময় মনে হয় কালিমা পড়েছিলাম। যতটুকু মনে হয়, ২০০৯ সালে চাকরি পেয়ে বাবা-মায়ের সাথে কুরবানীতে টাকা দিয়েছিলাম। এরপর বিভিন্ন বছরে বাবা-মায়ের সাথে কুরবানীতে টাকা দিয়েছিলাম। চাকুরীতে ৯৯% কাজই হালাল, তবে মাঝে মধ্যে সরকারের নির্দেশে বা আইনের কারণে বাধ্য হয়ে হারাম পণ্যের লাইসেন্স প্রদান করতে হয়। এ কাজটি যে কোরআন বিরোধী বা ভয়াভহ পাপের- তা তখন আমার মাথায়ই আসেনি। এরকম প্রেক্ষাপটে ২০১৩ সালে আমি বিয়ে করি। বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িতে আসার কারণে জুম্মার নামাজে অংশ নিতাম। বিয়ের ০৩ বছর পর অর্থাৎ ২০১৬ সালের দিকে আমি উপলব্ধি করি আমাকে ইসলাম ধর্ম পালন করা খুবই জরুরী। আমি নিয়মিত নামাজ- রোজা পালন করা শুরু করি। চাকুরীতে ৯৯% কাজই হালাল, তবে মাঝে মধ্যে সরকারের নির্দেশে বা আইনের কারণে এখনো কিছু হারাম পণ্যের লাইসেন্স প্রদান করতে এটা যে মহা পাপের কাজ সেটা মাথায় আসে সম্ভবত ২০১৮ সালের দিকে। সামগ্রীকভাবে, মনে হয় অতীতের পাপ এবং তওবা করার বিষয়টি অনেক পড়ে বা ২০২০ সালের দিকে আমার মাথায় আসে। এখন নিয়মিত আল্লার কাছে লজ্জিত হয়ে ক্ষমা চাই। এরপর থেকে রাষ্ট্রীয় আইনের কারণে যখনই হারাম পণ্যের লাইসেন্স প্রদান করতে হয় তখনই আল্লার কাছে ক্ষমা চাই। অফিসে দ্বীনের দাওয়াত দেই, দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে কাজ করি। বিয়ের আগে এবং বিয়ের পরে কয়েক বছর আমি বেনামাজী এবং ধর্ম সম্পর্কে উদাসীন ছিলাম। নানা বিষয়ে এখন আমার মনে সন্দেহ: যেমন ফরজ গোসল ঠিকমত করতাম নাকি গাফেল ছিলাম। আর যদি সত্যিই গাফেল থেকে থাকি, তাহলে আমার কি হবে? বিয়ের আগে আমার স্ত্রী আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, আমি নামাজ পড়ি কিনা? আমি বলেছিলাম পড়ি (মিথ্যা বলে ছিলাম)। তবে বিয়ের দিন আমার স্ত্রী নামাজ পড়েনি, সারাদিন মুখে মেক-আপ নিয়ে ছিল। এমনকি বিয়ের রাত-সকালে আমি তাকে ফজর পড়তে দেখিনি। দুজনেই সকাল ১০টার দিকে ঘুম থেকে উঠেছি ফজর নামাজ না পড়ে। সম্প্রতি আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, সে বললো যে বিয়ের দিন নামাজ পড়েনি। সে মাঝে মাঝে নামাজ পড়ে । আমাদের সন্তান হয়েছে। আমি জানতে পেরেছি, বেনামাজী কাফের এবং দ্বীন সম্পর্কে উদাসীনতা ঈমান ভঙ্গের কারণ। তাহলে আমাদের বিয়ে কি বৈধ নাকি বিয়ে নবায়ন করতে হবে। আমাদের সন্তানরা কি বৈধ? দয়া করে জানাবেন। আমি কি এখনো মুসলিম? ঈমানের পথে থাকতে হলে আমার করণীয় কি? খুব টেনশনে আছি। উল্লেখ্য, আমি এখন নিয়িমত নামাজ আদায় করি এবং ইসলাম যথাযথাভাবে মেনে চালার চেষ্টা করি। আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাই। আমার স্ত্রীও নিয়মিত নামাজ পড়ার চেষ্টা করে ।