আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 5377

ব্যক্তিগত ও পারিবারিক

প্রকাশকাল: 19 অক্টো. 2020

প্রশ্ন

আমি আমি একটি মেয়েকে পছন্দ করতাম! মেয়ের ও আমাকে পছন্দ ছিলো তারপর ২ জন ২ জনকে পছন্দের মাধ্যমে বিয়ে করি, মেয়ের বয়স ১৮ বছর, ছেলের ২২ বছর প্রাপ্তবয়স্ক। আমাদের পরিবার সমান সমান যাকে ইসলামি ভাষায় বলে কুফু বলে! কোন এক মাসে আমরা কোট মেরিজ + কাবিন করি, তারপর বিষয় টি গোপন রাখারা চেষ্টা করি কিন্তু আল্লাহ ইচ্ছা তে সবাই জেনে যায়। তারপর ২ ফেমেলির মধ্যে কাদা ছোড়াছোড়ি হয় মেয়ের ফেমেলি একটু পজেটিব থাকলেও ২ ফেমেলির সাথে একটু ঝগড়ার জন্য তারা রাগ জিদে তালাকের জন্য কাজী নিয়ে আসে! তারপর মেয়ে কে নিয়ে আসে ভয়ভিতি + মিথ্যা বলার মাধ্যমে বলে তালাক দিতেই হবে তো মেয়ে ভয়ে সাইন করে মুখে পড়ানেোর সময় শুধু মুখ নাড়ায় কিন্তু মন থেকে তালাক দেয় নি সে ভয়ে সাইন করে দেয়। কাজি আমাকে তালাক দিতে বলে আমি তালাক দিতে মুখে অস্বিকার করি! জোর পূর্বক আমাকে তালাক পড়ানোর অনেক চেষ্টা করে আমি পড়ি নি! আমি বলেছি আমি তালাক দিবো না যা ইচ্ছে করেন! তখন কাজি বলে তালাক দিতে হবে নাহ শুধু সাইন করেন আমি কলম ফেলে দিই। তখন কাজি বললো ৩ মাস টাইম আছে তার মধ্যে তুমি আনতে পারবে, আমি জানি ইসলামে ৩ মাসে ৩ বার তালাকের নিয়ম ! কাজি বলে আপনি পরে মেয়েকে নিয়ে আইসেন আমি ঠিক করে দিবো! তখন আমার মানুষিক অবস্থা অনেক খারাপ ছিলো কিসের কাগজ ছিলো আমি পড়ে ও দেখিনি সেই সেন্স ছিলো নাহ, কিন্তু আমার মনে ১০০% ছিলো তালাক দিব নাহ! তখন কাজির কথায় ৩ মাসের মধ্যে আনা যাবে একটা সাইন করি।পরদিন কাজিকে কল করি আমি মেয়েকে নিয়ে আসবো কাজি বলে আপনি তালাক দিছেন এখন আর হবে না, তখন আমি বুঝতে পারি প্রতারনা করেছে ভালো করে জানার পর বুঝতে পারি অই কাগজ টা না ৩ তালাকের ছিলো, কিন্তু আমার জানা ছিলো না। আমি একটা সাইন বাদে মুখে+ অন্তরে তালাক দি নাই আর আমার ঐ কাগজের সম্পর্কে ধারনা ছিলো না। বিয়ের পর আমরা পালিয়ে যাই নি, আমরা চেয়েছি। য়েছি সুন্দর করে রাজি করাতে আবার পরিবারের মাধ্যমে অনুষ্ঠান করাতে কিন্তু তার আগেই পরে ২ ফেমিলির পুতুল খেলা দেখে আমি এবং আমার বউ ১০ দিন পর পালিয়ে যাই এবং ৭ দিন একসাথে থাকি এরপর পরিবার মেনে নিবে আশা দিয়ে নিয়ে আসে! প্রশ্ন: বিবাহ কি অবস্থায় আছে এবং আমাদের ৭ দিন একসাথে থাকা কি যিনার সামিল ছিলো? প্রশ্ন: অন্যায় ভাবে মানুষের সংসার ভাংগা বা ভাংগার চেষ্টা করা কিরকম গুনাহ হতে পারে?

উত্তর

অভিভাবকের অনুমতি ব্যতিত মেয়েদের বিবাহ হবে না মর্মে সহীহ হাদীসে উল্লেখ আছে। সুতরাং এভাবে নিজেদের সিদ্ধান্তে কোর্টে গিয়ে বিয়ে করা আপনাদের একেবারই উচিত হয় নি, এবং বড় ধরণের গুনাহ হয়েছে। আবু মুসা আশয়ারী রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূল সা. বলেছেন, অর্থাৎ ওলী তথা অভিভাবক ছাড়া বিবাহ নয়। لاَ نِكَاحَ إِلاَّ بِوَلِىٍّ আবু দাউদ, হাদীস নং ২০৮৭; তিরমিযী, হাদীস নং ১১০১;মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ১৯৭৬১। হাদীসটি সহীহ। শায়খ আরনাউত এবং আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত অন্য হাদীসে রাসূল সা. বলেছেন, أَيُّمَا امْرَأَةٍ نَكَحَتْ بِغَيْرِ إِذْنِ مَوَالِيهَا فَنِكَاحُهَا بَاطِلٌ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ অর্থাৎযে মহিলা ওলীর অনুমতি ছাড়া বিবাহ করবে তার বিবাহ বাতিল। তিনি ৩ বার তা বলেছেন। সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ১১০২; মুসনাদে আহমাদ,হাদীস নং ২৫৩৬৫। ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন আর শায়খ শুয়াইব আরনাউত সহীহ বলেছেন। উপরক্ত হাদীস সমূহের ভিত্তিতে ইমাম মালেক, শাফেয়ী, আহমাদ র. সহ অধিকাংশ আলেম ওলী ছাড়া বিবাহকে বাতিল বলেছেন। যদি বিয়ে শুদ্ধ হয়েছে বলে ধরেও নিই (হানাফী মাজহাব অনুযায়ী) তবুও বলতে হবে অভিভাবক ছাড়া বিয়ে করেই মূলত আপনারা এই বিশৃঙ্খল অবস্থার অবতারণা করেছেন। একটা অপরাধ কত ধরণের শাখা প্রশাখা ছড়ায় আপনাদের ঘটনা তার একটা জ্বলন্ত প্রমাণ। তবে অধিকাংশ আলেমের নিকট তালাক দেয়ার নিয়ত ছাড়া শুধু কাগজে স্বাক্ষর করলে তালাক হয় না। জোর করে স্বাক্ষর নিলে তো তালাক শুদ্ধ হবেই না।অন্যায়ভাবে সংসার ভাংঙ্গার চবিস্তারিত জানতেেষ্টা করা অবশ্যই বড় গুনাহ।