আসসালামুআলাইকুম মুহতারাম। আমরা দুজনেই প্রাপ্তবয়স্ক। পারিবারিক ভাবেই আমাদের বিয়ের আলোচনা শুরু হয়। মেয়ের পক্ষ থেকে মেয়ের বাবা এবং মা দুজনেই রাজি ছিলেন বিয়ের বিষয়ে। মেয়ের মা তার বাবার কাছে আমার বিষয় বলার পর তিনি সম্মতি দিয়েছিলে। তবে তার কিছুদিন পরেই মেয়ের বাবা ইনতেকাল করেন। বাবার ইনতেকালের পরেও মা সর্বদা রাজি ছিলেন বিয়েতে। আমাদের পরিবারের সাথেও ফোনে কথাবার্তা হয়েছিলো। সামনাসামনি বসার জন্য দিন তারিখ ঠিক করা হয়েছিল। কিন্তু এরি মাঝে মেয়ের জন্য ঢাকা শহরে বাড়ির মালিক পয়সাওয়ালা ছেলের প্রস্তাব নিয়ে আসেন তার নানু আর মামা। আর তখন থেকেই মেয়ের মা বিগড়ে বসেন। মেয়ে বিয়ে দেবেন না ঢাকা শহরে বাড়ি না থাকলে। দুই পরিবার আর সামনাসামনি বসা হয়নি। এদিকে আমাকে সরাসরি তারা না করছেনা। অন্যদিকে মেয়েকে বাসায় আটকে রেখে মানসিক ভাবে নির্যাতন করা শুরু করেছে। তার কারণ মেয়ে আমাকে ছাড়া এখন আর অন্য কাউকে বিয়ে করবেনা। পরিবার থেকে যেসব ছেলে নতুন করে দেখা হচ্ছে, তাদেরকে বিবেচনার ভিত্তি হচ্ছে অর্থ পতিপত্তি । এখানে মেয়ের চাওয়া দিনদারিতা এবং তার ইচ্ছের না অনুমতির কোন তোয়াক্কা করা হচ্ছিলো না। অন্যদিকে আমাকেও তারা সরাসরি বিয়ের জন্য না করেনি। শুধু বলে ভালো চাকরি হলে বিয়ে হবে। এখন মেয়ে পড়ুক। তোমার কাছেই মেয়ে দেবো। কিন্তু মেয়েকে অন্যদিকে প্রচন্ডরকম মানসিক ভাবে কষ্ট দেয়া শুরু করেছে। এমনকি মা এবং বোনেরা সহ সারাক্ষণ গালাগালি গায়ে হাত তোলা সহ সব। অপরদিকে আমার নামে মেয়ের কাছে বিভিন্ন মিথ্যে কুৎসা রটানো শুরু করলো। শুধু তাই নয়, নিজেদের মায়ের নামে তারা আমার পরিবারের কাছে ফোন করে কুৎসা রটনা শুরু করলো যাতে আমার পরিবার আমাকে কোনভাবেই সাপোর্ট না দেয় এবং মেয়েকে মেনে না নেয় আমরা নিজেরা বিয়ে করতে চাইলেও। এমনকি মেয়ের উপর বিভিন্ন তাবিজ-কবচের কাজ করেছে তারা। বিভিন্নভাবে না জানিয়ে পানি পড়া আর তাবিজ তার বিছানার নিচে লুকিয়ে রাখতো। আমরা দুজনেই অপেক্ষা করছিলাম যদি পরিস্থিতি নর্মাল হয়। কিন্তু দিন দিন তাদের এসব কর্মকাণ্ড বেড়েই চলছিলো এবং মেয়ের উপর এসব তাবিজ-কবচ এবং মানসিক অত্যাচার বেড়েই চলছিল। এদিকে আমরাও দুজনের প্রতি দূর্বল হয়ে পড়েছিলাম। একদিকে জিনার ভয়, অন্যদিকে এসব অশান্তি থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য আমরা নিজেরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেই। কাজি অফিসে আমরা বিয়ে করি। বিয়েতে আমার পরিবারের সম্মতি ছিলো। প্রসঙ্গত আমারও বাবা নেই। বিয়ের সময় যেহেতু মেয়ের বাহিরে চলাচল নিষিদ্ধ ছিলো, তাই বন্দোবস্ত থাকা সত্ত্বেও একজন সাক্ষী উপস্থিত হতে পারেনি। অর্থাৎ বিয়ের সময় আমার ভাই এবং কাজি সাহেব, এই দুইজন শুধু উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে আইনী জটিলতার কথা মাথায় রেখে আরেকজন সাক্ষী বিয়ের একদিন পর এসে রেজিস্ট্রিতে সই করে। বিয়ের পর মেয়ে তার বাসায় চলে যায়। আমরা অপেক্ষায় ছিলাম যদি পরিস্থিতি নর্মাল হয়। কিন্তু সেটা আর হচ্ছিল। তাই মেয়েকে আমার কাছে নিয়ে আসি। এখন মেয়ের পারিবার থেকেই যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা বিয়ে মেনে নিয়েছে। আমার সাথেও কথা হয়েছে। মেয়ের মা নিজের অন্যায় স্বীকার করেছে। তাদের ভুল হয়েছে মর্মে নিজে থেকেই নমনীয় হয়েছেন। আমার প্রশ্ন হচ্ছেঃ
১) হানাফি মাজহাব মতে আমাদের বিয়ে কি সহীহ হয়েছে? বিয়ে কি আবার পড়াতে হবে?
২) যেহেতু কাজি সাহেব ব্যতীত অন্য আর একজন মাত্র উপস্থিত ছিলেন বিয়ের সময়, সেক্ষেত্রে কি কাজি সাহেবও এখানে সাক্ষী হিসেবে গন্য হবেন? নাকি আমাদের আবার বিয়ে পড়াতে হবে?
সাধারণত কাজি সাহেব ছাড়া আরও দুজন পুরুষের উপস্থিতির কথা বলা আছে শরীয়াতে। এক্ষেত্রে মোহতারামের সুচিন্তিত মতামত আশা করছি। জাঝাকুমুল্লাহ খাইর।