আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 4103

হালাল হারাম

প্রকাশকাল: 24 এপ্রিল 2017

প্রশ্ন

আসসালামুআলাইকুম। শাইখ ভালো আছেন?আমার একটি প্রশ্ন ছিল। #শাইখ আমার স্ত্রী একটি হাই স্কুলে চাকরি করেন যেখানে ছেলে-মেয়ে একসাথে পড়াশুনা করে। স্ত্রী বোরকা পড়ে স্কুলে যায় কিন্তু পূর্ন শরঈ পর্দা নয় সমসাময়িক নতুন বোরকা পড়ে যায় এবং মুখ খুলে থাকে। স্কুলে যে আমার স্ত্রী ছেলে ছাত্রদের সামনে মুখ খুলে ক্লাস নেয় এবং সে তার পুরুষ সহকর্মীদের একসাথে বসে গল্প,আড্ডা,খাওয়া দাওয়া করে তাতে কি আমি দাইয়ূ্স হয়ে যাব?

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। দাইয়ূস শব্দের অর্থ হল, এমন আত্মমর্যাদাহীন ব্যক্তি, যে তার স্ত্রী বা মাহরামের ক্ষেত্রে পাপাচার (তথা ব্যভিচারকে) সমর্থন করে। মুসনাদে আহমাদের এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ثَلَاثَةٌ قَدْ حَرّمَ اللهُ عَلَيْهِمُ الْجَنّةَ: مُدْمِنُ الْخَمْرِ، وَالْعَاقّ، وَالدَّيُّوثُ، الّذِي يُقِرّ فِي أَهْلِهِ الْخَبَثَ. তিন ব্যক্তির উপর আল্লাহ তাআলা জান্নাত হারাম করেছেন। ১. মদ্য পানে অভ্যস্ত ব্যক্তি। ২. পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান। ৩. দাইয়ূস অর্থাৎ ঐ আত্মমর্যাদাহীন ব্যক্তি, যে তার পরিবারের মহিলাদের ক্ষেত্রে পাপাচার অর্থাৎ ব্যভিচার ইত্যাদিকে সমর্থন করে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৫৩৭২) আপনার স্ত্রীর জন্য চাকুরী করা, টাকা পয়সা আয় করা আবশ্যক নয়। আপনার জন্য স্ত্রীর উপর খরচ করা আবশ্যক। বোরকা যদি ভালোভাবে পরেও তবুও এই পরিবেশ চাকুরী করা যাবে না। যদি তার ভরন-পোষণের কোন ব্যবস্থা না থাকে তখনই কেবল এমন পরিবেশে পূর্ণ পর্দা সহকারে চাকুরী জায়েজ। যেহেতু আপনার স্ত্রীর চাকুরীর প্রতি আপনার সমর্থন আছে সেহেতু আপনি পরপুরুষদের সাথে স্ত্রীর আড্ডা দেওয়াকে এক প্রকারের সমর্থন করছেন। এর কারণে সরাসরি দায়্যুস না হলেও দাইয়ূসের দিকে ধাববান বলা যায়। পুরুষদের সাথে মহিলাদের চাকুরী সম্পর্কে ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহঙ্গীর রহি.বলেছেন, একান্ত বাধ্য না হলে পুরুষদের মধ্যে কোনো অবস্থাতেই চাকরী করা ঠিক নয়। পোশাকের পর্দা ছাড়াও পর্দার একটি বড় দিক নারী পুরুষের একত্রে অবস্থান বর্জন করা। একান্ত বাধ্য হলেই শুধু নিজের পোশাকের পরিপূর্ণ পর্দাসহ চাকরী করবেন এবং সাথে সাথে পুরুষ সহকর্মীদের সাথে বা পাশে বসা ও তাদের সাথে খোশগল্প সম্পূর্ণ বর্জন করবেন। এরূপ গল্পগুজব ক্রমান্বয়ে অন্তর থেকে তাকওয়া দূর করে দেয়, এমনকি পারিবারিক জীবনও ভাল লাগে না; বরং কর্মস্থলে এসে গল্প করতেই অধিক ভাল লাগে। এগুলো মুমিন-মুমিনার জন্য অত্যন্ত কঠিন অবক্ষয়।