আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 1517

ব্যক্তিগত ও পারিবারিক

প্রকাশকাল: 26 মার্চ 2010

প্রশ্ন

ক্লাস ফাইভে থাকার সময়ে (তখন বয়স ৯-১০ বছর) এক আত্নীয়ের বাসায় গিয়ে পড়াশোনা করতাম। সেখানে এক গৃহকর্মী ছিলেন, তখন তার আনুমানিক বয়স ১৩-১৪ হবে। একদিন কোনো এক কথার মাঝে ঠাট্টাবশত আমি ফট করে বলি, “তোমার গায়ের রঙ কালো, তাই তোমার বাচ্চাও কালো হবে!” জবাবে তিনি বলেন, “আপনার কোনো ছেলেমেয়েই হবে না!” আজ ২-৩ বছর যাবত অভিশাপের বিষয়টি মাথায় ঘুরছে। বাসায় এ ব্যাপারে আলাপ করার পরও ছোট ছিলাম এ জাতীয় কথা বলে উড়িয়ে দেয়া হয়। এমতাবস্থায় কি করণীয়?

উত্তর

আল্লাহর কাছে বিপদআপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দুআ করবেন। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার কারণে আপনার কোন গুনাহ হবে না। আর সেই গৃহকর্মীর এমনটা বলা একেবারই উচিত হয় নি। কোন বস্ত বা ব্যক্তিকে লা’নত বা অভিসম্পাত করা কবীরা গুনাহ্। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাউকে লা’নত করা তাকে হত্যা করার সমতুল্য বলে আখ্যায়িত করেছেন। সাবিত বিন্ যাহ্হাক (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: وَمَنْ لَعَنَ مُؤْمِنًا فَهُوَ كَقَتْلِهِ. ‘‘কোন ঈমানদার ব্যক্তিকে লা’নত করা তাকে হত্যা করার সমতুল্য’’। (বুখারী ৬০৪৭) লা’নত করা তো কোনভাবেই মু’মিনের চরিত্র হতে পারে না। কাউকে লা’নত করা কোন সিদ্দীক তথা বিনা দ্বিধায় নবী আদর্শের সত্যিকার অনুসারী এমনকি সাধারণ কোন মু’মিনেরও বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: لَا يَنْبَغِيْ لِصِدِّيْقٍ أَنْ يَّكُوْنَ لَعَّانًا. ‘‘কোন সিদ্দীকের জন্য উচিৎ নয় যে, সে লা’নতকারী হবে’’। (মুসলিম ২৫৯৭) আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: لَا يَكُوْنُ الْـمُؤْمِنُ لَعَّانًا. ‘‘মু’মিন তো কখনো লা’নতকারী হতে পারে না’’। (তিরমিযী ২০১৯) কাউকে লা’নত করলে সে ব্যক্তি লা’নতের উপযুক্ত না হলে উক্ত লা’নত লা’নতকারীর উপরই প্রত্যাবর্তন করবে। উম্মুদ্দারদা’ (রাযিয়াল্লাহু আন্হা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি আবুদ্দারদা’ (রাঃ) কে বলতে শুনেছি তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا لَعَنَ شَيْئًا صَعِدَتِ اللَّعْنَةُ إِلَى السَّمَاءِ، فَتُغْلَقُ أَبْوَابُ السَّمَاءِ دُوْنَهَا، ثُمَّ تَهْبِطُ إِلَى الْأَرْضِ، فَتُغْلَقُ أَبْوَابُهَا دُوْنَهَا، ثُمَّ تَأْخُذُ يَمِيْنًا وَشِمَالًا، فَإِذَا لَمْ تَجِدْ مَسَاغًا رَجَعَتْ إِلَى الَّذِيْ لُعِنَ، فَإِنْ كَانَ لِذَلِكَ أَهْلًا، وَإِلاَّ رَجَعَتْ إِلَى قَائِلِهَا. ‘‘নিশ্চয়ই কোন বান্দাহ্ কোন বস্ত্তকে লা’নত করলে উক্ত লা’নত আকাশের দিকে উঠে যায়। ইতিমধ্যেই আকাশের দরোজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। তখন তা আকাশে উঠতে না পেরে জমিনের দিকে নেমে আসে। ইতিমধ্যেই জমিনের দরোজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। তখন তা ডানে-বাঁয়ে পথ খোঁজাখুঁজি করে। পরিশেষে কোন ক্ষেত্র না পেয়ে তা লা’নতকৃত ব্যক্তির নিকটই ফিরে আসে। যদি সে উক্ত লা’নতের উপযুক্তই হয়ে থাকে তা হলে তো ভালোই নতুবা তা লা’নতকারীর দিকেই প্রত্যাবর্তন করবে’’। (আবূ দাউদ ৪৯০৫) লা’নতকারী শহীদ ও সুপারিশকারী হতে পারবে না। আবুদ্দারদা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: لَا يَكُوْنُ اللَّعَّانُوْنَ شُفَعَاءَ وَلَا شُهَدَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ. ‘‘লা’নতকারীরা কিয়ামতের দিন কখনো শহীদ ও সুপারিশকারী হতে পারবে না’’। (মুসলিম ২৫৯৮; আবূ দাউদ ৪৯০৭) কেউ কোন বস্ত্ত বা ব্যক্তিকে লা’নত করলে তিনি অন্যের কাছে তাঁর নিজ সম্মান হারিয়ে ফেলেন। ’ইমরান বিন্ ’হুস্বাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: بَيْنَمَا رَسُوْلُ اللهِ فِيْ بَعْـضِ أَسْفَارِهِ، وَامْرَأَةٌ مِنَ الْأَنْصَارِ عَلَى نَاقَةٍ، فَضَجِرَتْ فَلَعَنَتْهَا، فَسَمِعَ ذَلِكَ رَسُوْلُ اللهِ فَقَالَ: خُذُوْا مَا عَلَيْهَا وَدَعُوْهَا، فَإِنَّهَا مَلْعُوْنَةٌ. ‘‘একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর করছিলেন এমতাবস্থায় জনৈকা আন্সারী মহিলা নিজ উটের উপর বিরক্ত হয়ে তাকে লা’নত করলো। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা শুনে সাহাবাদেরকে বললেন: তোমরা তার সকল আসবাবপত্র নামিয়ে লও এবং