আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 7059

বিবাহ-তালাক

প্রকাশকাল: 24 সেপ্টে. 2024

প্রশ্ন

আস-সালামু আলাইকুম। আমি একজন ২৫ বছর বয়ষ্কা নারী। আমার পরিবার আমার বিয়ে দেয়ার বিষয়ে বিশেষ সচেতন না। আমি আমার জন্যে একজন যোগ্য পাত্র পছন্দ করেছি, সে একজন মুসলিম ও সৎ ব্যক্তি এবং আমার ভরণপোষণ করতে সক্ষম। তার পরিবার আমাদের বিয়ের ব্যাপারে সম্মত। তাই তারা আমার বাবা মায়ের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে।

কিন্তু আমার বাবা মা এই প্রস্তাব নাকচ করেছেন তার কারণ, তিনি ছোট থাকতে তার বাবা মায়ের তালাক হয় এবং তারা দুইজনেই অন্যত্র বিয়ে করে। পরবর্তী তে তিনি তার নানা নানীর কাছে বড় হন। এছাড়াও আরেকটি কারণ আমার বাবা মা দেখিয়েছেন যে ছেলে সরকারি চাকরি করে না বা তার ঢাকায় বাড়ি গাড়ি নেই।

কিন্তু ছেলের এখনো সরকারি চাকরি করার বয়স হয়নি, সে বেসরকারি চাকরি করছে ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতে গাড়ি বাড়ি করার সামর্থ্য নিজেই অর্জন করার মেধা তার আছে। উল্লেখ্য, আমি যেস্থানে চাকরি করছি, সেখানে হিজাব করতে হলে বিবাহিত হওয়া বাধ্যতামূলক। চাকরি তে ঢুকার পূর্বে আমি এই নিয়ম সম্পর্কে অবগত ছিলাম না এবং অন্যান্য সব সময়েই আমি পরিপূর্ণ পর্দা মেনে চলার চেষ্টা করি।

আমার ২ জন বড় বোন ও তাদের স্বামীরা আমার পছন্দকৃত ছেলেকে পছন্দ করলেও আমার বাবা মা সামাজিক অবস্থানের দোহাই দিয়ে সেটা নাকচ করছেন। ফলশ্রুতিতে আমিও আমার কর্মস্থানে হিজাব পরার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এক্ষেত্রে আমি বাধ্য হয়ে ছেলের পরিবারের উপস্থিতিতে আমার বাবা মায়ের অনিচ্ছায় সম্পর্ক কে হালাল করতে এবং পরিপূর্ণ পর্দা মেনে চলার সুযোগ লাভ করতে বিয়ে করে ফেলতে চাচ্ছি।

কিন্তু সম্প্রতি আমি জানতে পেরেছি ওলীর মত ছাড়া বিয়ে করা হানাফী মাযহাব ব্যতীত আর সব মাযহাবে এবং স্বয়ং মহানবী (স:) কর্তৃক নিষিদ্ধ বলা হয়েছে। কিন্তু আমার পিতা মাতা কোনোভাবেই ওই পরিবারে বিয়ে দিতে রাজি হচ্ছেনা এবং আমাকে মানসিক ভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। এক্ষেত্রে আমি যদি বিয়ে করতে চাই, আমার করণীয় কী?

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। পিতা-মাতার অমতে মেয়েদের বিবাহের সুযোগ নেই। এটাই অধিকাংশ আলেমের মত।  সবাই যখন রাজি তাহলে সবাই মিলে আপনার পিতা-মাতাকে বুঝানোর চেষ্টা করুন। যদি উপযোগী পাত্র হয় তাহলে তাদের মত দেয়া  উচিত। বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ দ্বীন-ধর্ম থেকে দূরে থাকার কারণে দুনিয়াকে আখেরাতের তুলনায় প্রাধান্য দেয়া, যার জন্য এই সব সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারী চাকুরীর সাথে বিয়ের কোন সম্পর্ক নেই। অথচ এর জন্য আপনার বিবাহ থেমে যাচ্ছে। মেয়েদের দ্রুত বিবাহ করা দরকার, তখন এই অযাচিত বিষয়ের জন্য অযথা দেরী করা হচ্ছে। এগুলো সবই কুশিক্ষার ফল। যদি তারা  রাজি না হন তাহলে বিকল্প কোন পথ নেই। তারা আপনার কল্যান চান, পিতা-মাতা সন্তানদের কল্যান চান, এটা মেনে নিয়ে ধৈর্য্য ধরতে হবে। এছাড়া কিছু বলার নেই। তবে এ দেশের অধিকাংশ মানুষ হানাফী ফিকহরে অনুস্বরণ করে। আর ফিকহ অনুযায়ী ওলীর অনুমতি ছাড়াও প্রাপ্তবয়স্ক নারীরা বিবাহর করতে পারে। তাদের মতের পক্ষে তারা কুরআন থেকে দলীল দিয়ে থাকেন।