আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 6232

জায়েয

প্রকাশকাল: 21 ফেব্রু. 2023

প্রশ্ন

আস-সালামু আলাইকুম। আমি বাদশা ফাহাদ, বয়স -৩১, পেশা- ইন্জিনিয়ার, বেতন -৩৯০০০ হাজার। আমার বউ ঢাকা ইউনিভার্সিটি তে ইসলামী স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাএি। সে ব্যাক্তিগত জীবনে খুবই ভালো একজন মানুষ। পর্দা করে কারো সাথে ও কারণে কথা বলে না। আলহামদুলিল্লাহ ব্যাক্তিগত জীবনে সে ইসলামের অনুশাসন মেনে চলে। তার সম্পর্কে আমি ভালোই জানি। তার একটা ইচ্ছে আছে যেটা হচ্ছে সে পড়াশুনা শেষ করে কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চায়। আমার যে ইনকাম সেটা দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ আমাদের চলে যাচ্ছে ভালোভাবে আমার দৃস্টিতে। এখন বিষয়টা খুবই জটিল আকার ধারণ করেছে আমি চাকরি করতে দিবো না কারণ আমি বর্তমানে মেয়েদের ঘরের বাহিরের ফিতনা কে ভয় পাই। কারণ আমি বাহিরে জব করি আমি জানি বর্তমানে কর্মক্ষেএে মেয়েদের সম্পর্কে কি ধরণা রাখে পুরুষরা। এমন যে এখন যদি শিক্ষকতা করতে দিই তাহলে সংসার থাকবে না হলে শেষ? আমি পৃথিবীর সমগ্র কিছুর বিনিময়ে আমার আখেরাত একবিন্দুও পরিমাণ ছাড়তে চাই না। আমি কি করবো দয়া করে ইসলামের আলোকে জানাবেন?

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। বিষয়টি বিয়ের আগেই ভাবা উচিত ছিল।

আল্লাহ তায়ালা কুরআনে মুসলিম মহিলাদেরকে বলেছেন,وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى তোমরা তোমাদের বাড়ি ঘরের মধ্যে থাকো, প্রাচীন জাহেলী যুগের মহিলাদের মত নিজেদের প্রাদর্শন করো না। 5সূরা আহযাব, আয়াত নং ৩৩।

অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَبِمَا أَنْفَقُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ পুরুষরা মহিলাদের উপর কর্তৃত্ব করবে, কারণ আল্লাহ একজনকে অন্যজনের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেনএবং পুরুষেরা তাদের টাকা পয়সা খরচ করে। 6সূরা, নিসা আয়াত ৩৪।

বিদায় হজ্জের ভাষনে রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, وَاسْتَحْلَلْتُمْ فُرُوجَهُنَّ بِكَلِمَةِ اللَّهِ وَلَكُمْ عَلَيْهِنَّ أَنْ لاَ يُوطِئْنَ فُرُشَكُمْ أَحَدًا تَكْرَهُونَهُ. فَإِنْ فَعَلْنَ ذَلِكَ فَاضْرِبُوهُنَّ ضَرْبًا غَيْرَ مُبَرِّحٍ وَلَهُنَّ عَلَيْكُمْ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ তোমরা তাদের লজ্জাস্থানকে হালাল করেছো আল্লাহর কালিমা দ্বারা… তাদের খাবার-দাবার ও পোশাকের দায়িত্ব তোমাদের ওপর। 7সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩০০৯;সুনানু আবু দাউদ, হাদীস নং ১৯০৭।

আলেমদের এ ব্যাপারে ঐক্যমত পোষন করেছেন যে, স্ত্রীর ভরন-পোষনের দায়িত্ব স্বামীর। 8আলমাউসুয়াতুল ফিকহিয়্যাতুল কুয়েতিয়্যাহ, ৪১/৩৫।

উপরের আয়াত ও হাদীস থেকে জানা যায়, মহিলাদের দায়িত্ব হলো ঘর সামলানো আর পুরুষের দায়িত্ব হলো পরিবারের আর্থিক দিকটি সামলানো। এর বাইরে গেলে পৃথীবির স্বাভাবিক ভারসম্য নষ্ট হয়।

আমরা দেখছি ইউরোপ-আমেরিকাতে মহিলারা বাইরে কাজ করে এমন পর্যায় গিয়েছে যে, অনেকেই পরিবার গঠন করতে, সন্তান নিতে রাজী নয়। ফলসরূপ জনসংখ্যা কমে যাচ্ছে। স্বাভাবিক ভারসম্য নষ্ট হচ্ছে আর সেখানে পুরুষরা মহিলাদের কোন দায়িত্ব নিতেও রাজী নয়। আমাদের দেশের অনেক মহিলা বিদেশে গিয়ে রান্নাবান্না ও ঘর গোছানের কাজ করে। যখন তারা বিদেশে গিয়ে এটা করে তখন সবাই সেটাকে বিশেষ কাজ মনে করে আর ঐ একই কাজ যখন নিজের বাড়িতে করে তখন সেটাকে তারা কাজ মনে করে না। এটার কারণ আমাদের মাথা পঁচে গিয়েছে। সুস্থ চিন্তা করার ক্ষমতা হারিয়ে যাচ্ছে। উপার্জনের নামে মহিলাদের বাইরে বের হওয়ার অবাধ সুযোগ দিয়ে জাতিকে দিন দিন ধ্বংসের দিকেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে মনে হয়।সুতরাং স্বামীর যথেষ্ট উপার্জন থাকার পরও কোন স্ত্রীর বাইরে কাজ করার মানসিকতা আধুনিক মূর্খতা ছাড়া কিছুই নয়। পূর্ণ বয়স্ক ছেলে মেয়েকে পর্দাহীনভাবে সামনে বসিয়ে কোন মহিলা তাদের শিক্ষা দিবেন এটা শরয়ী পর্দা পরিপন্থি।

দ্বিতীয়ত স্বামীর আদেশ পালনের পবিবর্তে চাকুরী বিয়ে ভাঙাকে যেসব মহিলা প্রধান্য তারা আসলে ইসলাম কিছুই জানে না। নামায রোজা-পর্দা তাদের কাছে এক ধরণের ফ্যাশন। ইসলামের যতটুকু ইচ্ছা মানে, যতটুকু ভালো লাগে না সেটা আর করে না।

স্বামীর যদি যথেষ্ট উপার্জন না থাকে আর স্বামী তার স্ত্রীকে চাকুরীর অনুমতি দেয় তাহলেই কেবল কোন মহিলা চাকুরী করতে পারে। তবুও পূর্ণ পর্দা করে।