আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 6033

ব্যক্তিগত ও পারিবারিক

প্রকাশকাল: 6 আগস্ট 2022

প্রশ্ন

আস-সালামু আলাইকুম। আমি বিবাহিত একজন নারী। আমার স্বামীর পরিবারে ওনার দুইবোন আছে। আমার স্বামী বোনদের ছোট। তাঁরা বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে আমার সংসারে কর্তৃত্ব খাটান। আমাকে বিভিন্নভাবে হেয় করেন।আমি জানতে চাচ্ছিলাম যে এ ব্যাপারে ইসলাম কি বলে?

তাদের এরকম ব্যবহারে আমি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। উল্লেখ্য আমি এবং আমার স্বামী তাদের পৈতৃক যে সকল হক রয়েছে তা তাদেরকে ভালোভাবেই দেয়া হয়েছে। এমনকি আমি তাদের সাথে সম্পর্ক খারাপ করতেও চাই না। তারা সবসময় হাদিস শোনায় ভাইয়ের কি কি করা লাগবে এই ব্যাপারে। কিন্তু তারা যা করে সেটা নিয়ে ইসলামে কি কোন বিধি নিষেধের কথা নাই জানতে চাচ্ছিলাম।

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। না, তারা আপনার সংসারে কোন কর্তৃত্ব খাটাতে পারবে না। এটা করলে অবৈধ হস্তক্ষেপ হিসেবে গণ্য হবে। তারা ভাইয়ের থেকে তাদের অধিকার নিবে, তবে সেটা কিছুতেই আপনাকে হেয় করে নয়। অধিকাংশ সংসারে ভাইয়ের বোনেরা এভাবে ভাবীদের উপর অবৈধ কর্তৃত্ব করার চেষ্টা করে, এটা কিছুতেই প্রশ্রয় দেয়া যাবে না, এই হস্তক্ষেপ অব্যবত থাকলে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট হবে, পারিবারিক শান্তি বিনষ্ট হবে। তাদের যদি বিবাহ না হয়, দ্রুত বিবাহের ব্যবস্থা করতে বলবেন। বিবাহ না হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা আপনার পরিবারে থাকবে, তবে পরিবারের সাধারণ সদস্য হিসেবে, কর্তৃত্বশীল হিসেবে নয়। মানুষকে কষ্ট দেয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। এই বিষয়ে নীচের হাদীস দুটি লক্ষ্য করুন: وَعَن عَبدِ اللهِ بنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ الله عَنهُمَا، عَنِ النَّبيّ ﷺ، قَالَ: «المُسْلِمُ منْ سَلِمَ المُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ، وَالمُهَاجِرُ مَنْ هَجَرَ مَا نَهَى اللهُ عَنْهُ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রকৃত মুসলিম সেই, যার জিভ ও হাত থেকে সকল মুসলিম নিরাপদ থাকে। আর প্রকৃত মুহাজির (দ্বীনের খাতিরে স্বদেশ ত্যাগকারী) সেই, যে আল্লাহ যে সব কাজ করতে নিষেধ করেছেন, তা ত্যাগ করে।’ সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১০।

حدثنا يحيى بن أكثم و الجارود بن معاذ قالا حدثنا الفضل بن موسى حدثنا الحسين بن واقد عن أوفى بن دلهم عن نافع عن ابن عمر قال : صعد رسول الله صلى الله عليه و سلم المنبر فنادى بصوت رفيع فقال يا معشر من قد أسلم بلسانه ولم يفض الإيمان إلى قلبه لا تؤذوا المسلمين ولا تعيروهم ولا تتبعوا عوراتهم فإنه من تتبع عورة أخيه المسلم تتبع الله عورته ومن تتبع الله عورته يفضحه ولو في جوف رحلة قال ونظر ابن عمر يوما إلى البيت أو إلى الكعبة فقال ما أعظمك وأعظم حرمتك والمؤمن أعظم حرمة عند الله منك

ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিম্বরে উঠে চিৎকার দিয়ে বললেন: হে ঐ জামাআত, যারা মুখে ইসলাম কবুল করেছ কিন্তু অন্তরে এখনো ঈমান মাজবুত হযনি! তোমরা মুসলমানদের কষ্ট দিবে না, তাদের লজ্জা দিবেনা এবং তাদের গোপন দোষ অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হবে না। কেননা, যে লোক তার মুসলিম ভাইয়ের গোপন দোষ অনুসন্ধানে নিয়োজিত হবে আল্লাহ্ তাআলা তার গোপন দোষ প্রকাশ করে দিবেন। আর যে ব্যক্তির দোষ আল্লাহ্‌ তাআলা প্রকাশ করে দিবেন তাকে অপমান করে ছাড়বেন, সে তার উটের হাওদার ভিতরে অবস্থান করে থাকবর্ণনাকারী (নাফি) বলেন, একদিন ইবনু উমার (রা.) বাইতুল্লাহ বা কা’বার দিকে তাকিয়ে বললেন, তুমি কতই না ব্যাপক ও বিরাট! তুমি কতইনা সম্মানি তা কিন্তু তোমার চেয়েও মু’মিনের সম্মান ও মর্যাদা আল্লাহ্‌ তা‘আলার নিকটে অনেক বেশি। সুনানু তিরমিজি, হাদিস নং ২০৩২। শায়খ আলবানী রহি. বলেছেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। 

সুতরাং কোন ভাবেই কোন মুসলিম, মুমিনকে বা কোন মানুষকে কষ্ট দেয়া যাবে না।