আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 5905

হাদীস

প্রকাশকাল: 31 মার্চ 2022

প্রশ্ন

আস-সালামু আলাইকুম শায়েখ; আমরা জানি কেয়ামতের পূর্বে পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় ফিতনা দাজ্জাল এর আগমন হবে এবং তাকে হত্যা করবেন হযরত ঈশা ইবনে মরিয়ম (আঃ)। সেইসময় হযরত ঈশা (আঃ) এর কি কোনো উম্মত বা অনুগামী থাকবে? এবং বর্তমান খ্রিস্টানরা যে তাকে (যীশু) আল্লাহর (ঈশ্বরের) পুত্র বলে বিশ্বাস করে তাদের এই ভুল বিশ্বাস সম্পর্কে তিনি (আঃ) জ্ঞাত থাকবেন কি? এবং যদি জ্ঞাত থাকেন তাহলে তিনি কি তাদের এই ভুল বিশ্বাস ভঙ্গ করবেন তা কোরআন-হাদিস এর আলোকে জানানোর অনুরোধ রইল। যাজাকুমুল্লাহ খায়রান।

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। নীচের হাদীস দুটি লক্ষ্য করুন:

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ ابْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَيُوشِكَنَّ أَنْ يَنْزِلَ فِيكُمْ ابْنُ مَرْيَمَ حَكَمًا مُقْسِطًا فَيَكْسِرَ الصَّلِيبَ وَيَقْتُلَ الْخِنْزِيرَ وَيَضَعَ الْجِزْيَةَ وَيَفِيضَ الْمَالُ حَتَّى لاَ يَقْبَلَهُ أَحَدٌ

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, শপথ সেই সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ। অচিরেই তোমাদের মাঝে ন্যায় বিচারকরূপে মারইয়ামের পুত্র [ঈসা (আ.)] অবতরণ করবেন। তারপর তিনি ক্রুশ ভেঙ্গে ফেলবেন, শূকর হত্যা করবেন, জিযিয়অ রহিত করবেন এবং ধন-সম্পদের এরূপ প্রাচুর্য হবে যে, কেউ তা গ্রহণ করবে না। সহীহ বুখারীহ, হাদীস নং ২২২২। 

حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ شُجَاعٍ، وَهَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، وَحَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، قَالُوا حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ، – وَهُوَ ابْنُ مُحَمَّدٍ – عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ” لاَ تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي يُقَاتِلُونَ عَلَى الْحَقِّ ظَاهِرِينَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ – قَالَ – فَيَنْزِلُ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ صلى الله عليه وسلم فَيَقُولُ أَمِيرُهُمْ تَعَالَ صَلِّ لَنَا . فَيَقُولُ لاَ . إِنَّ بَعْضَكُمْ عَلَى بَعْضٍ أُمَرَاءُ . تَكْرِمَةَ اللَّهِ هَذِهِ الأُمَّةَ ”

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাযিঃ) বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, কিয়ামত পর্যন্ত আমার উম্মতের একদল সত্য দীনের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে বাতিলের বিরুদ্ধে লড়তে থাকবে এবং অবশেষে ঈসা (আঃ) অবতরণ করবেন। মুসলিমদের আমীর বলবেন, আসুন সালাতে আমাদের ইমামাতি করুন! তিনি বলবেন না, আপনাদেরই একজন অন্যদের জন্য ইমাম নিযুক্ত হবেন। এ হলো আল্লাহ তা’আলা প্রদত্ত এ উম্মতের সম্মান। সহীহ মুসলিম,হাদীস নং ১৫৬। 

এই ধরণের বিভিন্ন হাদীস বর্ণিত আছে। এই সব হাদীস এটা বুঝায় যে, ঈসা আ. নতুন কোন শরীয়ত নিয়ে আসবেন না। তিনি মুহাম্মাদ সা. এর শরীয়তের অনুস্বরণ করবেন, মুহাম্মাদ সা. এর শরীয়ত দ্বারা বিচার ফয়সালা করবেন।

 হাদীসে দেখা যাচ্ছে তিনি ইমামতিও করবেন না, বরং ইমামতি অন্যরা করবে। সুতরাং এখান থেকে বুঝা যাচ্ছে তিনি নতুন কোন শরীয়ত অনুযায়ী চলবেন না, মুহাম্মাদ সা. এর শরীয়তের অনুস্বরণ করে অন্যদের পিছনে সালাত আদায় করবেন। তিনি মুহাম্মাদ সা. এর শরীয়াহ অনুযায়ী চলবেন। বিস্তারিত জানতে আরও দেখুন

ঈসা. আ. দুনিয়াতে আসার পর খৃষ্টানদের ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পর্কেই তিনি জ্ঞাত থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক। তিনি তাদের ধর্ম ও বাতিল ধর্মীয় বিশ্বাস নস্যাৎ করে দিবেন। উপরের হাদীসে আছে, তিনি ক্রুশ ভেঙ্গে ফেলবেন, শূকর হত্যা করবেন।