আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 5643

বিবাহ-তালাক

প্রকাশকাল: 12 জুলাই 2021

প্রশ্ন

আসসালামুআলাইকুম। আমার নাম আজিজুল হক,বয়স ৩৪। আমি ১৪ বছর আগে বিবাহ করি, বিয়ের এক বছর পরে আমার একটি ছেলে সন্তান জন্ম হয় তার পরে থেকে আমার বউ আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করতে শুরু করে, রাতে দেরি করে বাসায় আসলে দরজা খুলতো না ঘন্টার পর ঘন্টা আমি বাইরে দারিয়ে থাকতাম, আমার মা তাকে দরজা খুলতে অনুরুধ করতো,কথায় কথায় আমার সাথে ঝগড়া শুরু করতো, অনেক বুঝিয়েছি আমি আমার মা বাবা কিন্তু কোন কাজ হয়নি, বছরে ৬ মাস এর বেশি বাপের বারি থাকতো। ঝগড়া করে রাতের বেলা বাড়ি থেকে বের হয়ে যেত, আত্মহত্যা করবে বলে হুমকি দিত, এমনও অনেক রাত যেত আমি আমার মা বাবা ঘুম আসতাম না আমার বউ যদি আত্মহত্যা করে সেই ভয়ে বছর খানেক এই রকম করার পর আমার মনে অনেক আঘাত দেওয়া পর ওর থেকে আমার ভালবাসা চলে যায় আমরা এক বিছানায় থাকলেও সহবাস করি না। তবু সে এই রকম করা বন্ধ করে না, আমাদেরও নামে কয়েকবার বিচার ডাকে সারা গ্রাম বলে বেরায় আমি হিজরা,আমি তালাকের কথা বললে আমাকে হুমকি দেয় আত্মহত্যা করে আমাদের জেলে ডুকাবে,ওর মামা রাব এ চাকরি করে বিদায় অনেক খমতা দেখায়। আমি ওকে মুখে তালাক দেই কিনতু ও তা মানে না। ২০১০ সাল থেকে ২০১৬ পযন্ত এই রকমই চলে এই কয় বছরে বাপের বাড়ি বেশি থাকে আর এর মধ্যে আমাদের সহবাস হয়নি একদিন ও। ২০১৬ সালের আগস্ট আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে ঢাকায় চলে যাই। আমি চলে যাওয়ার পর আমার বাবার নামে বিচার ডাকে আর বাপের বাড়ি চলে যায়। আমি ২০১৬ সালে ভালবাসে একটি মেয়ে কে বিয়ে করি বিয়ের আগে বলেছিলাম আমি তালাক দিয়ে দিছি। দ্বিতীয় বিয়ের পর বলি আমি কাগজে তালাক দেয় নাই, সব শুনে ও আমাকে মাফ করে। নিজের হাতে আমার ছেলের জন্য টাকা পাঠায়, ও আমাকে বলেছে যদি আমি চাই ১ম ঘরে যেতে পারি কিন্তু আমি যাই না। আমার ছেলে মা পাগল তাই আমি আর তালাক দেয় নাই। আমার দ্বিতীয় বউ আমার ১ম বউ সন্তানকে জামা কাপড় কিনে পাঠাত কুরিয়ার করে। তাদের সব খরচই আমি দিয়েছি। ২০২১ সালে আমার মা বেরেন টিউমার হয়ে অনেক অসুস্থ হয়ে পরে, আমার ছেলেকে দেখতে চায় কিন্তু সে নিয়ে আসে না,গত রমজানের ২৬ রমজান আমার মা মারা যায় তার পর সে আমার ছেলেকে নিয়ে বাড়ি আসে, আমি আমার ২য় বউ নিয়ে ঢাকায় থাকি। আমার ছেলে কান্না করে বিদায় বাড়িতে থাকতে দেওয়া হয়। এই ১২ বছরের মধ্যে ১ দিনও ১ম বউ এর সাথে সহবাস করি নি কারণ আমি তাকে মুখে তালাক দিয়েছিলাম। তাকে আমি জিজ্ঞেস করছি সে ডিবোস চায় কি না সে বলে তার ছেলেকে নিয়ে যেন আমি তাকে থাকতে দেই। সবাই আমাকে তালাক দিতে না করে কারণ ছেলে বড় হয়ে গেছে। এখন তারা আমাদের বাড়িতেই থাকে আমি তাদের সকল খরচ আগের মতই দিয়ে যাচ্ছি। ছেলে বড় হয়ে গেছে তাই তালাক দিতে পারছি না। কিন্তু তাকে আমি ১২ বছর আগেই মুখে তালাক দিয়ে দিছি তাই তার কাছে যাওয়া আমার উচিত না। সে হক এর কথা বললে আমি তাকে বলি তাকে যে আমি মুখে তালাক দিয়েছিলাম কিন্ত সে মানে না। কিন্তু আমি তো জানি আমি হাদিস মতে তাকে মুখে ৩ তালাক দিয়েছিলাম। এখন আমার পক্ষে তার সাথে সহবাস করা সম্ভব না, ছেলে বড় হয়েছে তাই তালাক ও দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সে আমাকে সব সময় অভিশাপ দেয়। এখন আমি কি করতে পারি আমাকে একটু জানাবেন।

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। তিন তালাক দেওয়ার কারণে সে এখন আর আপনার স্ত্রী নন। নতুন করে আর তালাক দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। তার খরচ বহন করা বা তাকে থাকার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব আপনার নয়। তার মানা-না মানার কোন মূল্য নেই। তবে আপনার বাড়িতে যে কাউকে চাইলে আপনি থাকতে দিতে পারেন, যে কারো খরচ বহন আপনি করতে পারেন সে হিসেবে আপনার বাড়িতে আপনার সাবেক স্ত্রীকে আপনি থাকতে দিতে পারেন, তার খরচাদি দিতে পারেন। তবে বিনা প্রয়োজনে কিছুতেই তার সাথে দেখা-সাক্ষাত করতে পারবেন না, কথা-বার্তা বলবেন না। তবে ছেলের সকল খরাচাদি আপনার দায়িত্বে। ছেলের কথা চিন্তা করে তার মায়ের খরচাদি দেওয়া একটা ভালো কাজ বলে আমরা মনে করি। যদি আপনি তার সকল খরচ বহন করতে চান আর ছেলেও তার কাছে থাকবে, এটা যদি আপনি চান তাহলে আমাদের পরামর্শ হলো তাদেরকে এমন বাড়িতে রাখবেন যেখানে আপনার যাওয়ার প্রয়োজন হয় না, কারণ বেশী দেখা সাক্ষাত হলে মনের মধ্যে শয়তান খারাপ চিন্তা দিয়ে দিতে পারে।