আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 5635

বিবিধ

প্রকাশকাল: 4 জুলাই 2021

প্রশ্ন

আসসালামু ওয়ালাইকুম শায়েখ! ১) ইসলাম কি ঋতুস্রাব এর বয়স হয় নি এমন মেয়েকে বিয়ে করার হুকুম দেয় কিনা? যদি ঋতুহীনা কিশোরী দেরকেও ইদ্দত পালন করার নির্দেশ দেয়। আমি এক হিন্দু বন্ধুকে এ ব্যাপারে বোঝাতে অক্ষম ছিলাম। ইসলামে নুন্যতম কোন বয়সের মেয়েদের বিয়ে করার অনুমতি দিয়েছে একটু ক্লিয়ার করবেন! ২। বিয়ের ক্ষেত্রে কনের অনুমতি নেওয়া আবশ্যক যেমনটা ফাতেমা (রাঃ) কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছিলেন। কিন্তু অনেক সময় জোরপূর্বক গার্জিয়ান বিয়ে দিয়ে দিলো সেক্ষেত্রে বিয়ে জায়েজ হয়ে যায়। কারণ বিয়ে শরীয়া মোতাবেক হয়েছে। এক্ষেত্রে মাসায়ালা থাকলে ক্লিয়ার করবেন।

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। না, ইসলাম অপ্রাপ্তবয়স্ক কোন মেয়েকে বিবাহ করার হুকুম বা আদশে দেয় না। তবে যদি বাব-মা অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোন মেয়েকে বৃহত্তর কোন স্বার্থে বিবাহ দেয় তাহলে ইসলাম সেই বিবাহের অনুমোদন দেয়। স্বাভাবিকভাবে বিবাহ প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরই দিতে হবে। কিন্তু বাবা-মা যদি মেয়ের কল্যানের দিকে লক্ষ্য করে মনে করে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে বিয়ে দেওয়া তার জন্য ভালো তাহলে ইসলাম সেই বিয়ে দেওয়ার অনুমতি প্রদান করে। আয়েশা রা. এর বিয়ে হয়েছিল ৬ বছর বয়সে, স্বামীর ঘরে এসেছিলেন আরো কয়েক বছর পর। সুতরাং ছোট বেলায় বিয়ে হলেও স্বামীর কাছে কখন থেকে থাকবে সেটা তাদের পরিবার আলোচনা করবে, ছেলে-মেয়েদের বয়স, বুদ্ধি ইত্যাদি বিবেচনা করে তারা সিদ্ধান্ত নিবেন। আর প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর যদি সেই মেয়ে এই বিয়েতে না থাকতে চায় তাহলে সেই এই বিয়ে বাতিল করতে পারে। ইসলামে বিবাহের নূন্যতম কোন বয়স নেই। ঋতুহীন মহিলাকেও ইসলাম ইদ্দত পালন করতে বলে। যদিও ঋতুহীন মহিলার বাচ্চা পেটে আসে না, তবুও সন্দেহ যেন না থাকে সে জন্য তাদের ইদ্দত পালন করতে হয়। আরেকটা বিষয় হলো তালাকের পর পরই যদি তাদেরকে সেই বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে হয় তাহলে সেই মেয়ের জন্য বিষয়টি অনেক সময় কষ্টকর হতে পারে, থাকা-খাওয়ার সমস্যা হতে পারে। ইসলাম ৩ মাস ইদ্দতের মধ্যে থাকতে বলার অন্যতম একটি কারণ তার আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্ত নিশ্চিত করা। ইদ্দতের মধ্যে তালাক প্রাপ্ত স্ত্রীর সকল খরচ স্বামীকে বহন করতে হয়। আরো একটি কারণ হলো তিন তালাক না দিলে স্বামী চাইলে তিন মাসের মধ্যে সেই স্ত্রীকে আবার ফিরিয়ে নিতে পারবে, তিন মাস সময় থাকলে সে চিন্তভাবনা করার ভালো সুযোগ পাবে। এই সব বিভিন্ন কল্যানের দিকে লক্ষ করে ঋতুহীন মহিলার ইদ্দত পালন করাও আবশ্যক। ২। মেয়ে রাজি না থাকা অবস্থায় জোর করে বিয়ে দেওয়া একটা মূর্খতা। এই কাজ জায়েজ নয়। অধিকাংশ আলেমের মতে প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের অনুমতি ছাড়া কোন বাবা নিজের মেয়েকে বিবাহ দিতে পারবে না। عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا تُنْكَحُ الثَّيِّبُ حَتَّى تُسْتَأْمَرَ، وَلَا تُنْكَحُ البِكْرُ حَتَّى تُسْتَأْذَنَ، وَإِذْنُهَا الصُّمُوتُ আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে আল্লাহর রাসূল বলেন, ইতপূর্বে বিবাহ হয়েছিলে এমন মেয়েকে বিবাহ দেয়া যাবে না তার কাছে অনুমতি নেয়া ছাড়া, আর প্রাপ্ত বয়স্ক কুমারী মেয়েকে বিবাহ দেয়া যাবে না তার কাছে অনমুত চাওয়া ছাড়া, আর চুপ থাকাটাই তার অনুমতি দেয়া বলে গণ্য। সুনানু তিরমিযী, হাদীস নং ১১০৭। হাদীসটি সহীহ। এই হাদীসের ভিত্তিতে অধিকাংশ আলেমের মত হচ্ছে বাবা জোর করে তার মেয়েকে বিবাহ দিতে পারবে না। যদি জোর করে বিয়ে দেয় তাহলে মেয়ে চাইলে সেই বিয়ে বাতিল করতে পারবে, তালাক চাইতে পারবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।